মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

৭ই মার্চের ভাষণ এক অভাবনীয় ও অমর বাণী: খাদ্যমন্ত্রী

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২১, ৫:৪৫ পিএম

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ৭ই মার্চের ভাষণ এক অভাবনীয় অমর বাণী। ১৮ মিনিটের এই ভাষণ মানুষকে নিস্তব্ধ করেছিলেন, জাতিকে একত্রিত করেছিলেন। এই ভাষণে তিনি বলেছিলেন হিন্দু-মুসলমান বাঙালি-অবাঙালি সবাই আমরা ভাই ভাই। বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর। বঙ্গবন্ধুর এই দিক নির্দেশনা বক্তব্যই বাঙালি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শ্লোগান ছিল, তুমি কে, আমি কে, বাঙালি বাঙালি, তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা। এই শ্লোগানের ভিত্তি করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ৬ মার্চ জাতীয় নেতাদেরকে নিয়ে বসলেন এবং একেক জন একেক রকমের ভাষণে ডাফট দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নিজের মত করে ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। যা বাঙ্গালির বুকে আজও নাড়া দেয়। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই বাংলায় ও এই বাংলার আকাশে বাতাসে এখনও ধ্বনিত হয়। বঙ্গবন্ধুর অমর বাণী, এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।
তিনি শনিবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রশাসন আয়োজনে সদর উপজেলা হল রুমে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবসের আলোচনা সভা, পুরষ্কার বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথাগুলো বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা তৈরি করার। যুদ্ধবিধ্বস্ত সে দেশটাকে মাত্র সাড়ে চার বছরের মাথায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরি করে যোগাযোগ স্থাপন, মানুষকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত মধ্যেই এদেশটাকে দুর্ভিক্ষে পরিনতে চেষ্টা করা হয়েছে। যখন বঙ্গবন্ধু প্রতি মহাকুমাতে একজন করে জেলা গভর্নর তৈরি করে এই দেশটাকে সমৃদ্ধশালী সুখী বাংলাদেশ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন ঠিক সেই মুহুর্তে ১৯৭৫ সালের কালো রাত্রিতে তাকে হত্যা করা হয়। আমরা সেই অকৃতজ্ঞ জাতি, অভিশপ্ত জাতি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে হত্যা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার কণ্ঠ আমরা কোথাও শুনতে পাই নাই। এবং তার বিচার যেন না হয় তার জন্য তার রচিত সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে, তাঁর রচিত আদেশ জারি করে বিচারকাজ বন্ধ করে দিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধাপরাধীদেরকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রঞ্জিত লাল সবুজের পতাকা তুলে দেয়া হয়। বাংলাদেশ ছিল অভিশপ্ত।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ যাদের কারণে অভিশপ্ত হয়েছিল তখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তি আসে নাই, এদেশে হাহাকার ছিল, ফসল হত না, আমরা অভাবী ছিলাম, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছিল। তিন বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। সেই তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ এখন আর কেউ অভাবী নেই। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে প্রয়াস ছিল তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করে যাচ্ছে। বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি এবং বাঙালি জাতির অভিশাপমুক্ত করেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করে। এ সময় মন্ত্রীর নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর উপর অনেক বই বের হয়েছে সেগুলো বেশি বেশি পড়তে হবে। সেটাও যদি না পড়ো তাহলে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীও কারাগারের রোজনামচা বইগুলো পড়ার চেষ্টা করো জীবনে অনেক কিছু শিখতে পারবে, জীবনকে সুন্দরভাবে করতে পারবে।
এসময় জেলা প্রশাসক মো: হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল আকতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অল রশীদ, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর শরীফুল ইসলাম খান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যার রফিকুল ইসলামসহ প্রমুখ।

অপরদিকে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের মুক্তির মোড়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। শুরুতেই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি প্রথমে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও পরে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর একে একে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল আকতার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতা প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা পালন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, সহ-সভাপতি নির্মল কৃষ্ণ সাহাসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন