স্বাধীনতার পরে ৭০ ও ৮০র দশকে চলচ্চিত্র শিল্পের রমরমা অবস্থার সময়ে সারাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ১৪০০ টির মতো । আর এখন দেশে চালু সিনেমা হলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৪০টিতে। ঈদ বা কোন বিশেষ উৎসবের সময়ে খন্ডকালীন কিছু সিনেমা হল চালু হলে ওই সংখ্যা বড় জোর ২৪০ এ উন্নীত হয় । বাংলাদেশে বর্তমানে সিনেমা হলের এই পরিসংখ্যানেই ফুটে উঠেছে বর্তমান চলচ্চিত্র শিল্পের বেহাল দশার করুণ চিত্র ।
বুধবার এই পরিসংখ্যান ও চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান চিত্রের এই তথ্য পাওয়া যায় ‘সিনেমা হল বাঁচলে চলচ্চিত্র বাঁচবে’ প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় দেওয়া বক্তাদের বক্তব্যে।
সভাটি অনুষ্ঠিত হয় বগুড়ায় নির্মিতব্য মধুবন সিনেপ্লেক্স এর একটি হল রুমে।
ওই সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআই বাংলাদেশের পরিচালক কাজী শোয়েব রশীদ বলেন, ভাল মানের ছবি কি এখন হচ্ছে ? ৬০ /৭০/৮০র দশকে বক্স অফিস হিট করা ছবি ও নায়ক নায়িকার সংখ্যা ছিল উল্লেখ করার মতো । এখন কয়টা ছবি হিট হচ্ছে , কতজন নায়ক নায়িকার গ্লামার গুনে ছবি উতরে যাচ্ছে ? কারা এখনকার গীতিকার , সুরকার , স্ক্রিপ্ট রাইটার ? চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচাতে এখন সমন্বিত , সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে হবে । তিনি বলেন , সিনেমা হল সংস্কার ও নতুন করে সিনেমা হল নির্মাণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়কৃত ১ হাজার কোটি টাকার তহবিলের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নিতে হবে ।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল । তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সময় এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তনের তাই সিনেমা হলগুলোকে ডিজিটালাইজকরণ, দর্শকদের হলমুখী করতে দেশীয় ভাল চলচ্চিত্র নির্মানের ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রয়োজনে ভাল মানের বিদেশী ছবি আমদানি করে হলেও হলগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও সরকার কর্তৃক স্বল্প সুদে যে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে তা সহজে প্রাপ্তি এবং তা দীর্ঘমেয়াদে পরিশোধের সুযোগ প্রদানেও সারাদেশের প্রদর্শকদের পক্ষে সরকারের সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।
যুব সংগঠক সঞ্জু রায়ের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে শরফুদ্দিন এলাহী সম্রাট ও খোরশেদ আলম, কোষাধ্যক্ষ আজগর হোসেন, নির্বাহী সদস্য ফারুক হোসেন মানিক, যশোর মনিহার সিনেমা হলের মালিক মিঠু, দিনাজপুর মডার্ণ সিনেমা হলের মালিক পারভেজ, শান্তাহার মালা সিনেমা হলের মালিক মজিবর রহমান প্রমুখ। উত্তরবঙ্গে প্রথম আয়োজিত সিনেমা হল মালিকদের উক্ত মতবিনিময় সভায় এসময় উপস্থিত ছিলেন বেঞ্চমার্ক এর বাংলাদেশের প্রতিনিধি সৈয়দ ইমরান হোসেন কিরমানি, মধুবন সিনেপ্লেক্স বগুড়ার পরিচালক শায়েখুজ্জামান ইউনুস (রোহান)সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ৪০জন সিনেমা হল মালিক সভায় উপস্থিত ছিলেন ।
সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাংস্কৃতিক, সমাজ কল্যাণ ও আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং মধুবন সিনেপ্লেক্স এর সত্ত্বাধিকারী আর.এম ইউনুস রুবেল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন