শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রোনালদোর সেই অ্যাওয়ে গোল দুঃখ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

প্রথম লেগে অ্যাওয়ে এক গোলের সুবাদে দ্বিতীয় লেগে ১-০ গোলের জয় পেলেই হতো জুভেন্টাসের। তাতো হলোই না। উল্টো শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের জন্ম দিয়ে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগ ৩-২ গোলে হেরে পোর্তোই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করলো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের!
পোর্তোর মাঠে প্রথম লেগে ২-১ গোলে হেরেছিল জুভেন্টাস। দুই লেগ মিলে স্কোর ৪-৪ হলেও অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে ছিল পোর্তো। তাতেই ম্যাচটা জিতেও ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে ছিটকে যাওয়ার হতাশা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে পিরলোর দল। গত আসরে অলিম্পিক লিওঁর মাঠে হারের পর ঘরের মাঠে জিতেও অ্যাওয়ে গোলে পিছিয়ে বিদায় নিয়েছিল জুভেন্টাস। অথচ নিজেদের মাঠে খেলা হলেও পুরোপুরি আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি জুভেন্টাস। বরং ৫৪ মিনিটে দশ জনের দলে পরিণত হয়েও পোর্তো ম্যাচটা করে রাখে চিত্তাকর্ষক! ম্যাচের শুরুর গোলটাও করে তারা ১৯ মিনিটেই। বক্সে ডিফেন্ডার ডেমিরাল ফাউল করেছিলেন তারেমিকে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে স্পট কিক থেকে গোল করেন সার্জিও অলিভেইরা।
চাপে পরে যাওয়া জুভেন্টাস ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে বিরতির পর। ম্যাচের গতিপ্রকৃতিও পাল্টে যায় দ্রুত। ৪৯ মিনিটে সমতা ফেরান চেইসা। এর পর জুভেন্টাসকেই মনে হচ্ছিলো বেশি অগ্রগামী। ৬৩ মিনিটে কুয়াদ্রাদোর ক্রস থেকে চিয়েসা আবার গোল করলে স্কোর দাঁড়ায় ২-১। ৫৪ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পোর্তোর তারেমি। ৭৮ মিনিটে আবারও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল তাদের। কিন্তু কুয়াদরাদোর ক্রস থেকে রোনালদো হেড করে বল পাঠিয়ে দেন লক্ষ্যের বাইরে। স্টপেজ টাইমে গোল করার উল্লাসে মেতেছিলেন মোরাতাও। কিন্তু তার গোল পড়ে যায় অফসাইডের ফাঁদে।
দুই লেগ মিলে ম্যাচটি ৩-৩ সমতায় থাকায় ভাগ্য নির্ধারণে ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। প্রথম ১৫ মিনিট ছিল গোলশ‚ন্য। তবে শেষ ১৫ মিনিটেই হয়েছে দুই গোল। ১১৫ মিনিটে অলিভিয়েরার দারুণ এক ফ্রি কিক খুঁজে নেয় জাল। এই গোলটাই ভাগ্য বদলে দেয় ম্যাচের। ১১৭ মিনিটে র‌্যাবিওট গোল করে জুভেন্টাসকে ৩-২ গোলের জয় এনে দিলেও অ্যাওয়ে গোলের হিসেবে পিছিয়ে পড়ে তারা। এর ফলে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিলো জুভেন্টাস।
এদিকে, রোনালদো-লিওনেল মেসিদের উত্তরসূরি কে হবেন এ প্রশ্নের জবাব কিলিয়ান এমবাপে আর আর্লিং ব্রট হালান্ডে খুঁজছে ফুটবল বিশ্ব। ইতোমধ্যেই এমবাপে-হালান্ডের দ্বৈরথটা জমেও উঠেছে বেশ। নরওয়েজিয়ান হালান্ড সেভিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করে ভেঙেছেন এমবাপের রেকর্ড। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর দ্বিতীয় লেগে ২-২ গোলের ড্র করেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। তবে আগের লেগে ৩-২ এ জয়ে পাওয়ায় ৫-৪ অগ্রগামীতায় শেষ আটে উঠে গেছে তার দল।
শুধু এটাই নয়, গতপরশু রাতে হালান্ড গড়েছেন আরো তিনটি রেকর্ডও। ইউরোপ সেরার মঞ্চে এদিন হালান্ড প্রথম গোলের দেখাটা পেয়েছিলেন ৩৫ মিনিটে। মার্কো রয়েসের পাস খুঁজে পায় ছয় গজে বক্সে থাকা হালান্ডকে। সেখান থেকে দলকে এগিয়ে দিতে সমস্যাই হয়নি বরুসিয়া ফরোয়ার্ডের। তাতে প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে টানা ছয় ম্যাচে গোলের কীর্তি গড়েন হালান্ড। ২০ বছর ২৩১ দিন গড়েছেন এই কীর্তি।
পুরো লড়াই মিলিয়ে ৪-২ গোলে এগিয়ে থাকা বরুসিয়া ৫৪ মিনিটে পেনাল্টি পায়। সেখান থেকে ব্যবধান বাড়ান সেই হালান্ড। নরওয়ের কোনো খেলোয়াড়ের হয়ে প্রথমবারের মতো ২০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। এর আগে সর্বোচ্চ ১৯ গোল ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি ওলে গুনার সুলশারের। এই গোলে আরও দুটো রেকর্ডও পড়ে গেছে পেছনে। ২১ বছর পেরোনোর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ ১৯ গোলের কীর্তি ছিল এমবাপের দখলে। প্রতিযোগিতায় নিজের ২০তম গোলটি করে সে রেকর্ডটিকেও হালান্ড পাঠিয়ে দিয়েছেন জাদুঘরে।
ইউরোপ সেরার আসরে দ্রুততম সময়ে ২০ গোলের কীর্তিটি এতদিন ছিল ইংলিশ ফরোয়ার্ড হ্যারি কেইনের দখলে। সেভিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোলে সে রেকর্ডটিকেও পেছনে ফেলেছেন হালান্ড। ২০ গোলের জন্য হ্যারি কেইনকে ম্যাচ খেলতে হয়েছিল ২৪টি, সেটা নরওয়ের বিস্ময়-বালক ভেঙেছেন ১০ ম্যাচ কম খেলেই! সেভিয়া অবশ্য দুই গোল হজম করেও ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছে। ৬৮ মিনিটে আর অন্তিম সময়ে ইউসেফ এন নেসেরির গোলে ব্যবধান কমিয়েছে, আরেকটা গোল হলেই খেলাটাকে নিয়ে যেতে পারত অতিরিক্ত সময়ে। তবে সেটা হয়নি, ফলে বরুসিয়া তিন মৌসুম পর আবারও জায়গা করে নেয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে।
এক নজরে ফল
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ২-২ সেভিয়া
৫-৪ অগ্রগামীতায় শেষ আটে ডর্টমুন্ড
জুভেন্টাস ৩-২ পোর্তো
(প্রথম লেগে পোর্তো ২-১ জুভেন্টাস)
অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে শেষ আটে পোর্তো

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন