শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ডিপিডিসির অভিযান : এক মাসে ১১ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ চুরি

প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ডিপিডিসির স্পেশাল টাস্কফোর্স অভিযানে উদঘাটিত হচ্ছে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতি। গত এক মাসে ৬২টি শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিদ্যুৎ চুরি, রাজস্ব ফাঁকি, সীমাতিরিক্ত লোড ব্যবহার ইত্যাদি অপরাধে ২ কোটি ৪ লাখ টাকা জরিমানা করে ডিপিডিসি। উদঘাটন করা হয় ১১ দশমিক ১০ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা।
গত ১ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীর মগবাজার, মানিকনগর, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, ডেমরা, বংশাল, বনশ্রী, বাংলাবাজার, আদাবর, শেরেবাংলানগর এবং নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা, সৈয়দপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ, চাষাঢ়া, ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ সদরসহ এর আশপাশের এলাকায় অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। টাস্কফোর্স প্রধান মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে প্রকৌশলী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সমন্বিত ৪টি টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। টাস্কফোর্স সূত্র জানায়, সবচেয়ে দুর্ধর্ষ বিদ্যুৎ চুরি ধরা পড়ে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় বিসমিল্লাহ আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে। এখানে ৬ মাসে ১ দশমিক ৩৬ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ চুরি হয়। এছাড়া পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে অবস্থিত একজন অধ্যাপকের পরিচালনাধীন মৈত্রী প্রেস এবং পাবলিকেশন্সে ধরা পড়ে ৮৫ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অটোবাইকের গ্যারেজ বসিয়ে গোপনে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা ধরা পড়ে ২০টি প্রতিষ্ঠানে। এসব প্রতিষ্ঠান প্রায় ৬২ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ চুরি করেছে। অন্যদিকে বংশাল মহিউদ্দিন নামে পিডিবির সাবেক এক কর্মচারীর চারতলা বাসভবনে ধরা পড়ে ৮৪ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা। আর নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া আর্মি মার্কেটে ধরা পড়ে ১৯ দশমিক ২২ লাখ টাকার বিদ্যুৎ চুরি ও রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা। এ মার্কেটে ২৪২টি দোকানে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হলেও দীর্ঘ দিন বিদ্যুৎ বিল দেয়া হচ্ছে না।
অন্যদিকে কামরাঙ্গীরচরে ‘ইকবাল প্লাস্টিক কারখানা’য় ধরা পড়ে ৪০ দশমিক ৩১ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা। এ কারখানার বর্তমানে অস্তিত্বই নেই। অথচ কারখানার নামে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিকে লালবাগের ইসলামবাগে সিরাজ নামের একজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কারখানায় ধরা পড়ে ৪২ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ চুরি। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের সৈয়দপুরে ‘জিএস কুলফি আইসক্রিম’ কারখানার মিটারে ভোল্টেজ সার্কিটে রিলে বসানোর ঘটনা ধরা পড়ে। এছাড়া মনিপুরি পাড়ায় ৫তলা ভবনের ‘নিবেদিকা’ ছাত্রী হোস্টেলে মিটার টেম্পারিং এবং ট্যারিফে অনিয়মের মাধ্যমে সাড়ে ৫ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা ধরা পড়ে। এ ভবনের ৭০টি রুম শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টাস্কফোর্স প্রধান মুনীর চৌধুরী জানান, এক মাসের এ অভিযানে ১০৫টি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে জব্দ করা হয় বাইপাসে ব্যবহƒত ৫ শতাধিক মিটার সার্ভিস তার, ১৮২টি চার্জার, ৩৮টি এনার্জি মিটার, একটি জেনারেটর এবং মামলা দায়ের করা হয় ৪টি। তিনি বলেন, আইনের অনুশাসন না থাকায় বিদ্যুৎ চুরি ও রাজস্ব ফাঁকির দুর্নীতি বটবৃক্ষের রূপ নিয়েছে। অব্যাহত অভিযানে এ বটবৃক্ষ নির্মূল করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন