শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

নামাজ সুনাগরিকের প্রতিক

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৭ মার্চ, ২০২১

ইমাম মালেক রহ. বর্ণনা করেন যে, হযরত ফারুকে আযম (রা.) তার কর্মকর্তাদের লিখেছেন, আমার মতে তোমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সালাত কায়েম করা। যে ব্যক্তি তার নামাজের হিফাজত করল, সে তার দীনকে হিফাজত করল। আর যে ব্যক্তি তার নামাজ বরবাদ করল, সে নামাজ ছাড়া অন্যান্য দীনি কাজ বরবাদ করতে কখন দ্বিধা করতে পারে?

হযরত ওমর (রা.)-এর খেদমতে এক ব্যক্তি হাযির হলো। এটা তার আহত হবার দ্বিতীয় দিনের কথা। সে ব্যক্তি তাকে সকালের নামাজের জন্যে জাগাল। তিনি বললেন, খুব ভালো করেছ। যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয়, ইসলামে তার কোনো অংশ থাকে না। অতঃপর তিনি রক্ত ঝরার অবস্থা নিয়েই নামাজ আদায় করলেন। আবু তালিব ও সোহরাওয়ার্দী বর্ণনা করেন যে, ওমর বিন খাত্তাব (রা.) বলেছেন, মানুষ ইসলামেল চুল পাকিয়ে ফেলে, তথাপি সে তার নামাজ পূর্ণ করে না। আরয করা হলো, তা কিভাবে? তিনি বললেন, সে নামাজে খুশূ-খুযূ ও তাওয়াযূ পূর্ণ করে না। অথচ নামাজে তার চেহারা আল্লাহর দিকে থাকে। হযরত ফারুকে আযম (রা.) থেকে মারফু’ সনদে উকবা ইবনে আমের সূত্রে ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি ওজু করে এবং সঠিক ও পূর্ণাঙ্গভাবে ওজু করে তারপর ‘আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু’ বলে তার জন্যে জান্নাতের আট দরজা খুলে দেয়া হয়।

ইমাম গাযযালী রহ. বলেন, হযরত ওমর (রা.) বলেছেন, সব নামাজের সময়ই তোমরা তোমাদের ভাইদের খোঁজ নেবে। তাদের যদি কেউ অসুস্থ হয়, তাহলে তার সেবা করবে। তবে যদি কেউ সুস্থ থেকেও নামাজে না আসে, তাহলে তাকে তিরস্কার করবে। ইমাম গাযযালী রহ. বর্ণনা করেন যে, হযরত ওমর (রা.) হযরত আবু মূসা আশআরীকে বলতেন, আমাদের প্রতিপালকের যিকির কর। তখন তিনি পাক কালাম তিলাওয়াত করতেন। এমনকি দ্বিতীয় নামাজ না আসা পর্যন্ত তা চলত। যখন বলা হতো, আসসালাত আসসালাত, তখন তিনি বলতেন, আমরা নামাজে নই?

ইমাম গাযযালী রহ. আরো বলেন, হযরত ওমর (রা.) বলতেন, আয় আল্লাহ, আমার যুলুম ও কুফর থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। বলা হলো, যুলুম তো বুঝা গেল। কিন্তু কুফর কেন বলা হলো? তখন তিনি সূরা ইবরাহীমের ৩৪ নং আয়াত পড়লেন। ‘নিঃসন্দেহে মানুষ বড়ই অবিচারী ও অকৃতজ্ঞ।’

আসলাম থেকে যায়েদ ইবনে আসলাম সূত্রে ইমাম মালেক বর্ণনা করেন যে, হযরত ওমর (রা.) রাত জেগে নামাজ পড়তেন ও রাতের শেষভাগে পরিবারবর্গকে নামাজের জন্যে ডাকতেন এবং তিলাওয়াত করতেন : ‘তোমার পরিবারবর্গকে নামাজের জন্য বল ও নিজেও নামাজের ওপর কায়েম থাক। আমি তোমার কাছে রুজী (জীবনোপকরণ) চাই রুজী তো তোমাকে আমিই দেব। আর উত্তম পরিণতি তো কেবল পরহেজগারীর জন্যই। (সূরা ত্বা-হা : ১৩২)।

ইমাম গাযযালী রহ. বলেন, হযরত ওমর (রা.) বলেছেন, হাজীদের ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং তাদেরও ক্ষমা করা হয় যাদের জন্য হাজীরা যিলহজ্জ থেকে মুহাররম, সফর ও দশই রবিউল আওয়ালের ভেতর মাগফেরাত কামনা করেন। আবুল লাইস বর্ণনা করেন যে, হযরত ওমর (রা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কা’বাঘরের তাওয়াক করতে এলো ও তা তাওয়াফ করল, সে পাপ থেকে এরূপ মুক্ত হলো, যেরূপ মুক্ত ছিল সে তার জন্মলগ্নে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
রোমান ১৭ মার্চ, ২০২১, ৩:০২ এএম says : 0
ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
Total Reply(0)
নুরজাহান ১৭ মার্চ, ২০২১, ৩:০২ এএম says : 0
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজকে ঈমানের পর স্থান দিয়েছেন।
Total Reply(0)
মমতাজ আহমেদ ১৭ মার্চ, ২০২১, ৩:০৩ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহিহ তরিকায় সঠিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।
Total Reply(0)
সোলায়মান ১৭ মার্চ, ২০২১, ৩:০৪ এএম says : 0
নামাজই একমাত্র ইবাদত; যার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সব কাজ ছেড়ে শুধু আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে যায়। এ নামাজই মানুষকে দুনিয়ার সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে ধুয়েমুছে পাক-সাফ করে দেয়। দুনিয়ার সব অন্যায়-অনাচার থেকে হেফাজত করে।
Total Reply(0)
শান্তা ১৭ মার্চ, ২০২১, ৩:০৫ এএম says : 0
এক নামাজের শেষে আমরা যেন আরেক নামাজের পূর্বমুহূর্তে নিজেদের ভালো কাজে রাখি। কাজই ইবাদত। এক নামাজ থেকে আরেক নামাজ পর্যন্ত সবাই সৎ জীবিকা সন্ধানের চেষ্টা করব। এটাই আল্লাহর আদেশ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন