অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ভোলার চরফ্যশনের মাছের ঘেরে অন্য মাছের সাথে উঠে এসেছে অভিপ্রায়নী মাছ ইলিশ। একটি পূর্ণ বয়স্ক ইলিশ প্রতিদিন শ্রোতের বিপরিতে ৭১ কিলোমিটার পর্যন্ত ছুটে চলতে সক্ষম। এতদিন অভিপ্রায়নী এ মাছ পুকুর, দিঘি বা ঘের-এ চাষে সফলতা অসেনি। এমনকি ফারাক্কা ব্যারেজ চালু করার পরে গঙ্গার উজানে ইলিশের বিচরন বন্ধ হয়ে গেলে ভারত সরকারের নির্দেশে সে দেশের মৎস্য বিজ্ঞানীগন বহু গবেষনা করেও সফলতা পায়নি। সাগর উপক’ল থেকে ইলিশের ডিম ও লার্ভা সংগ্রহ করে ফারাক্কা ব্যারেজের উজানে নিয়ে ছেড়ে দিলেও তা থেকে তেমন বাচ্চা প্রস্ফুটিত হয়নি। কিছু ডিম প্রস্ফুটত হলে তা থেকে জন্ম নেয়া বাচ্চা জাটকা সাইজেও বড় হয়নি।
কিন্তু ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর কুকুরী-মুকরী’তে আবুল হাসেম মহাজনের মাছের ঘেরে জাল ফেললে অন্য মাছের সাথে ৮টি বড় সাইজের ইলিশ উঠে এসেছে। প্রতিটি মাছের ওজনই ১ কেজি থেকে কিছুটা বেশী। বিষ্ময়কর এ ঘটনার খবর দ্রুত আসে পাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরলে বহু মানুষ ‘ঘেরের ইলিশ’ দেখতে ছুটে আসেন। স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন কর্মীরাও বিষয়টি দেখে হতবাক ।
মেঘনা আর তেতুলিয়া বেষ্টিত দেশের সর্ববৃহত ব-দ্বীপ ভোলার মানুষের আজীবনের বসবাস নদী আর ইলিশের সাথে। মাছই এ জেলার মানুষের জীবীকার অন্যতম প্রধান উৎস হলেও তরাও কোন দিন ঘের, দিঘি সহ কোন ধরনের বব্ধ জলাশায়ে ইলিশের অস্তিত্ব দেখতে পায়নি। তাই ঘেরের জালে ইলিশ ধরা পড়ার ঘটনা তাদের কাছে রূপকথার মতই।
ঘেরটির মালিক আবুল হাসেম মহাজন সহ স্থানীয় ইউপি চেয়রম্যান জানান, গত বছর ঘূর্ণিঝড় ১অম্পান’র সময় প্রবল বর্ষনের সাথে সাগর থেকে ধেয়ে আসা জোয়রের পানিতে তার ঘেরটি সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়। তখন ঘেরের অনেক মাছ যেমনি ভেসে যায়। তেমনি নদীর অনেক মাছও ঘেরে প্রবেস করে। ফলে তখন জোয়ারের সাথে মেঘনা থেকে কোন ইলিশ ঐ ঘেরে প্রবেস করতে পারে। যা এতদিন কেউ লক্ষ করেনি।
এ ব্যপারে মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ইলিশের জীব বৈচিত্র অনুযায়ী এখনো কোন বদ্ধ জলাশয় এ মাছ-এর নিরাপদ অবাসস্থল নয়। তার পরেও কোন প্রাকতিক দূর্যোগে ঘেরে ইলিশ প্রবেস করে তা অন্য মাছের সাথে বাস করে থাকতে পারে। বিষয়টি নিয়ে গবেষনার ওপরও যোর দেন তিনি।
মৎস্য গবেষনা ইনস্টিটিউট পুকরে বা অন্য বদ্ধ জলশয়ে ইলিশ উৎপাদনে গবেষনা করেও এখনো তেমন কোন সফলতা পায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন