অসহযোগ আন্দোলনের বিংশতিতম দিনে মুক্তি পাগল হাজার হাজার মানুষের দৃপ্ত পদচারণায় রাজধানী ঢাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সকালে শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে পঞ্চম দফা বৈঠকে মিলিত হন। এদিন আলোচনায় তার সঙ্গী হন তাজউদ্দীন আহমদ।
সকালে শেখ মুজিব বাসভবনে বিশিষ্ট আইনজীবী এ.কে. ব্রোহির সাথে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় মিলিত হন। এদিন শেখ মুজিব ভাসানীর কাছে বিশেষ দূত মারফত সংবাদ পাঠান।
বিকালে চট্টগ্রাম ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পোলো গ্রাউন্ডে এক বিশাল জনসভায় বলেন, আলোচনায় ফল হবে না। এদেশের হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে চাপরাশি পর্যন্ত যখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে মানে না, তখন শাসন ক্ষমতা শেখ মুজিবের হাতেই দিতে হবে।
পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বিকালে ১২ জন উপদেষ্টাসহ করাচী থেকে ঢাকায় আসেন। ভুট্টোর আগমন উপলক্ষে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করা হয়। সাংবাদিকদের বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। ভুট্টোকে বিমানবন্দর থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে আসার সময় রাস্তার দু’পাশের পথচারী ভুট্টো-বিরোধী শ্লোগান দেয়।
সন্ধ্যায় পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো কড়া সেনা প্রহরায় প্রেসিডেন্ট ভবনে যান। সেখানে ভুট্টো দু’ঘন্টারও বেশি সময় প্রেসিডেন্টের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে হোটেলে ফিরেই ভুট্টো তার উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এর আগে হোটেল লাউঞ্জে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের ভুট্টো বলেন, এ মুহূর্তে আমি এটুকু বলতে পারি যে, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
১৯ মার্চ জয়দেবপুরে জারিকৃত কারফিউ দুপুর ১২টায় ৬ ঘন্টার জন্য প্রত্যাহার করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পুনরায় কারফিউ বলবৎ করা হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ২৩ মার্চ স্বাধীন পূর্ববাংলা দিবসের কর্মসূচির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে। মগবাজারে মহিলা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মহিলা সমাবেশে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন বাঙালী সৈনিকদের নিয়ে একটি প্যারা-মিলিটারি গঠনের আহ্বান জানানো হয়।
ন্যাপ (ভাসানী) সদরঘাট, বাহাদুরশাহ পার্ক, মৌলভীবাজার, চকবাজারসহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পথসভা আয়োজন করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন