বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সুনামগঞ্জে সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য সরকার দায়ী। শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এই সাম্প্রদায়িক হামলার দায় সরকারকে নিতে হবে। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ-সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
জোটের নেতারা বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন বিষাক্ত ফনা তুলেছে। একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে। অথচ সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। হামলা হতে পারে আঁচ করে শাল্লার গ্রামবাসী পুলিশকে জানালেও, পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সমাবেশে জোটের নেতারা বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালনে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হুমকির মুখে পড়েছে। এর আগে রামু, নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার যত ঘটনা ঘটেছে, তার কোনো ঘটনারই সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ায় শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রক্ষা করছে বলেই সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হচ্ছে না। সাম্প্রদায়িক হামলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অংশ নিচ্ছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হামলাকারী ও মদদদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর রাষ্ট্রীয় আয়োজনে অতিথি করার সমালোচনা করে বাম জোটের নেতারা বলেন, শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা এমন সময় ঘটেছে, যখন ভারতের উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আরএসএসের ভাবাদর্শ লালনকারী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর আসন্ন। হেফাজতসহ এ দেশের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে তোষণ করে এবং ভারতের সা¤প্রদায়িক ফ্যাসিস্ট শক্তির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় হেফাজত এবং আরএসএসের মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির ঠাঁই হবে না। গণআন্দোলনের মাধ্যমে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি ও তাদের মদদদাতা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটানো হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র জুলফিকার ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের শামীম ইমাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আব্দুল আলী ও সুনামগঞ্জের সিপিবি নেতা নিরঞ্জন দাশ খোকন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরানা পল্টনে গিয়ে শেষ হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন