রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন রাবি ভিসি। নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য দলকে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে প্রগতিশীল শিক্ষকরা। ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে গতকাল সকাল ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. পুরঞ্জিত মহালদারের সঞ্চালনায় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটার পর একটা অভিযোগের প্রমাণ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি। দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ার সত্তে¡ও নির্লজ্জভাবে তিনি ভিসি পদে বহাল রয়েছেন। তার মেয়াদ পূর্ণ হতে আর মাত্র দেড়-দুই মাস সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি একাডেমিক সুস্থ পরিবেশকে নষ্ট করার চেষ্টা করছেন বলে আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি।
তিনি বলেন, বিভাগের আর্থিক অনুদান দেয়ার ক্ষেত্রেও স্বজনপ্রীতি করছেন। কোন কোন বিভাগকে পূর্ণ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে আর কোন বিভাগ দিচ্ছে না মোটেও। ফলে দুটো বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে।
অধ্যাপক মামুন আরো বলেন, সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ভিসি একক সিদ্ধান্তে লিজ দিতে পারেন না। কিন্তু বর্তমান ভিসি গোপন ভাবে সিন্ডিকেট সদস্যদের না জানিয়ে টেবিল এজেন্ডার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ব্যক্তিখাতে ব্যবহার করছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক একরাম উল্যাহ বলেন, আমরা প্রায় ২ বছর থেকে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ বর্তমান প্রশাসনের দুর্নীতি ও অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলে যাচ্ছি। বর্তমান ভিসির দুর্নীতির সত্যতা প্রমাণ করেছে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরেও তিনি পদত্যাগ না করে স্বপদে বহাল আছেন।
ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ প্রশাসন মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজকে বাদ দিয়ে বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন। দুর্নীতিবাজ যত বড়ই হোক তাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র মাটি থেকে টেনে হিঁচড়ে নামানো হবে। অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগ-বাণিজ্য,স্বজনপ্রীতির কারণে তার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেয়েছে। আমরা চাই উনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলুষমুক্ত করবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মজিবুল হক আজাদ খান, সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আসাবুল হক, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ড. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর তারিকুল আহসান প্রমুখসহ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন