দিনাজপুরে আরো একটি লোহার খনির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। নুতন পাওয়া খনিটির অস্তিস্থ পাওয়া গেছে দিনাজপুরের চিরিরিবন্দর উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকায়। এর আগে হাকিমপুর উপজেলার ইশবপুরে প্রাপ্ত লোহার খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে বের হয়ে এসেছে উন্নতমানের আকরিক লোহা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) সম্ভাব্য খনির অবস্থান চিহ্নিত করেছে। জরিপকার্য নির্বিঘ্নে পরিচালনার জন্য জিএসবি’র পরিচালক মোঃ আবদুল আজিজ পাটোয়ারী স্বাক্ষরিত চিঠি দিনাজপুরের জেলা প্রশাসককে দেয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে জিএসবি’র মহাপরিচালক ড. মোঃ শের আলী আগামী ১ এপ্রিল জরিপ কার্যের শুভ উদ্বোধন করবেন।
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি ও মধ্যপাড়া কঠিন (পাথর) শিলা প্রকল্প দুটি থেকে দেশের প্রথম খনিজ পদার্থ উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হয়ে আজ পর্যন্ত তা চলমান রয়েছে। সম্ভাবনাময় ফুলবাড়ী কয়লা খনি প্রকল্প উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর পর বাংলাদেশ বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)’র সার্বিক অনুসন্ধানে নবাবগঞ্জ উপজেলার দীঘিপাড়া কয়লা খনির জরিপ শেষে খনিটিতে পর্যাপ্ত কয়লা মজুদের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। অজ্ঞাত কারনে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম শুরু’র আগে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক কিনা তথা ফাইনাল জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় ভারতে কর্মরত একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। যার কার্যক্রম চলে মূলত ভারতীয় প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে। এর পর পরই শুরু হয় হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুরে লোহার খনির অনুসন্ধান কার্যক্রম। জিএসবি’র নেতৃত্বে দক্ষ দেশী প্রকৌশলীরা বের করে আনেন উন্নতমানের আকরিক লোহা। এর আগে পার্বতীপুরে আমবাড়ীতে তামার সন্ধানে জরিপ কার্য সম্পন্ন করে জিএসবি। তবে সেখানে আশানুরুপ ফলাফল পাওয়া যায়নি বলে জরিপ অধিদপ্তরের একটি সুত্র দাবী করেছে।
খনির জেলা হিসাবে পরিচিতি লাভ করা দিনাজপুর জেলা শহর সংলগ্ন চিরিরবন্দর উপজেলায় নুতন লোহার খনির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কূপ খননের কাজ শুরুর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এজন্য জমি অধিগ্রহনসহ প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চিঠি দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসককে। জরিপ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌছে গেছে। নিরাপত্তা বেষ্টনি দেয়া হয়েছে। এলাকার সাধারন মানুষের মধ্যে খনির সন্ধানে প্রাণচাঞ্চলতার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, প্রথম তিন মাস কূপ খনন করে চলবে অনুসন্ধান। প্রাথমিক জরিপে নুতন এই খনিতে লোহার (আকরিক) এর পূরুত্ব অনেক বেশি। পুরুত্ব বেশী হওয়ায় লোহার সাথে তাম্য (তামা)সহ অন্যন্য মূল্যবান সম্পদ পাওয়ার আশাও রয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল সম্ভাব্য উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে। এর আগে অবস্থানকারী কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কোন কিছুই বলতে চাচ্ছেন না।
তবে জেলা প্রশাসক বরাবরে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ১০ নং পূণট্রি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকায় জিডিএইচ-৭৬/২১ ক‚প খনন কার্যক্রম শুরু হবে। বহিরাগতদের ভীড় এড়ানোর পাশাপাশি কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা, তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ, যাতায়াতসহ সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের কাছেও চিঠির অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে।
একটি সুত্র মতে চিরিরবন্দরে কূপ খনন কাজে দল প্রধান হিসাবে রয়েছে জিএসবি’র উপ-পরিচালক (ড্রিলিং প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ রানা। তার সঙ্গে রয়েছেন উপ-পরিচালক (ড্রিলিং প্রকৌশলী মোঃ নিহাদুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলীসহ একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন