করোনাকালীন সময়ে গভর্নিং বডির নির্বাচন করার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এজন্য মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে অনলাইনে এডহক কমিটি গঠনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মো. হারুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে একথা জানানো হয়। আইডিয়াল স্কুলের প্রিন্সিপাল বরাবর দেয়া ওই চিঠিতে বলা হয়, করোনাকালীন গভর্নিং বডির নির্বাচন করার কোন সুযোগ নেই বিধায় অনলাইনে এডহক কমিটি গঠনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করার জন্য পরামর্শ দেয়া হলো।
এর আগে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান গভর্নিং বডি ভেঙে দিয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে চেয়ারম্যান পদে বসানোর দাবি জানানো হয়। তার নেতৃত্বে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করে দিতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন অভিভাবকরা।
প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিম উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রোস্তম আলী বলেন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা ছাত্রছাত্রী ভর্তির নীতিমালা অমান্য করে প্রতিবছরই এবং বর্তমান ২০২১ শিক্ষাবর্ষে করোনাকালে লটারিবহির্ভূতভাবে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে গত ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি টাকার বিনিময়ে ভর্তি করিয়েছে। শিক্ষার্থীপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ শিক্ষাবর্ষেও একইভাবে ভর্তি বাণিজ্য করা হয়েছে। স্কুল বন্ধ থাকা সত্তে¡ও তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে টাকার বিনিময়ে এক শাখা থেকে অন্য শাখায় শতাধিক শিক্ষার্থী বদলি করিয়েছেন। করোনাকালে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের সরকারি নির্দেশনা থাকায় তা উপেক্ষা করে নিয়োগ বাণিজ্যের জন্য অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত ২৫ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রায় দুইশত শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখানেও বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। গভর্নিং বডির সভাপতি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হয়েও অনৈতিকভাবে গভর্নিং বডির অন্যান্য সদস্যের মাঝে ভর্তির মনগড়া কোটা বণ্টন করে দিয়েছেন। ভর্তি বাণিজ্য ও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে তিনি দুর্নীতিকে উৎসাহিত করেছেন।
গভর্নিং বডির সভাপতির কারণেই বর্তমানে ছাত্র ভর্তি, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, শিক্ষক-ছাত্র বদলি ও নির্মাণ-কেনাকাটা বাণিজ্যে স্কুলটিতে দুর্নীতির মহামারি চলছে। বর্তমান গভর্নিং বডির প্রাথমিক-মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের অভিভাবক প্রতিনিধিদের কারও অভিভাবকত্ব নেই। সবারই অভিভাবকত্ব স্ব-স্ব স্তর উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আগামী ২২ এপ্রিল এ কমিটির মেয়াদ শেষ। সভাপতিরও দুই মেয়াদ শেষ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন