মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভাঙনে বদলাচ্ছে মাদারীপুরের মানচিত্র

প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গাইবান্ধায় ১ হাজার পরিবার গৃহহারা
ইনকিলাব ডেস্ক : ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় পদ্মায় অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে বিভিন্ন জেলায়। মাদারীপুরে ভাঙন এমন তীব্র আকার ধারণ করেছে যে জেলার মানচিত্র বদলে যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এই জেলাটি ভাঙনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়া গাইবান্ধায় নদী ভাঙনে ১ হাজার পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়েছে।
ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় অব্যাহত নদী ভাঙন
আবুল হাসান সোহেল, মাদারীপুর থেকে : ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় পানির স্রোতের তীব্রতা ও অব্যাহত নদী ভাঙনের কারণে মাদারীপুর জেলার শিবচর কালকিনি ও মাদারীপুর সদর এ ৩টি উপজেলার ভৌগলিক চিত্র ক্রমশ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বসবাসের স্থান নদীবক্ষে বিলীন হওয়ায় গৃহহীন হয়েছে মাদারীপুরের শতশত পরিবার। নদীভাঙনের কারণে মাদারীপুরের সদর উপজেলার ঘুন্সিগ্রামটি প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষ করে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাটি পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরবর্তী হওয়ায় নদীর করাল গ্রাসের শিকার হয়েছে। সাম্প্রতিককালে সরেজমিনে পরিদর্শন ও বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রবল বর্ষণ, নদীর পানি বৃদ্ধি শেষতক ফারাক্কার সব গেট খুলে দেয়ায় পানির তীব্র আঘাত হেনেছে মধাঞ্চলের এ এলাকাগুলোতে। সাম্প্রতিক সময়েই নদী ভাঙনে শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর, চরজানাজাত, দত্তপাড়া, নিলখী ও বহেরাতলা ইউনিয়নে সাত শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের শিকার হয়েছে বড় দুটি বেড়িবাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য পরিবার উঁচু সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে উত্তর চরজানাজাত ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারের দ্বিতল ভবন, একটি গুচ্ছগ্রামসহ ৬০টি ঘরবাড়ি। এ এলাকায় নদীতে বিলীন হয়েছে কমপক্ষে ৫শ’ একর ফসলি জমি। ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক।
ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী দুই লাখ টাকা ও পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে তা অপ্রতুল বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
সন্ন্যাসীরচর ইউপি চেয়ারম্যান রউফ হাওলাদার জানান, গত কয়েকদিনে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে তার বাড়িসহ ইউনিয়নের ৩শ’ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এমপি সাহেব দুই লাখ টাকাসহ চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে আরও সহায়তা প্রয়োজন।
শিবচর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ধীরেন্দ্র চন্দ্র শিকদার জানান, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে দুটি বিদ্যালয় ভেঙে গেছে। এতে শিশুদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।
দক্ষিণ বহেরাতলায় ইউনিয়নের প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বাঁধের ৫০ মিটারসহ ২০টি ঘরবাড়ি, নিলখী ইউনিয়নের একটি মাদরাসাসহ ৪০টি ঘরবাড়ি, দত্তপাড়া ইউনিয়নের মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের ৫শ’ মিটার বাঁধসহ ৫০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে উজান থেকে বন্যার পানি নেমে আসায় জেলার নদনদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির সাথে অব্যাহত নদীভাঙনে গত চার দিনে আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের শিবচর অংশের ১০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে দেশের এ গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের বিশাল অংশ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর বহেরাতলায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। জানা গেছে, গত ২ সপ্তাহে আড়িয়াল খাঁ, কুমার ও পালরদী নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির তোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের মাদারীপুরের শিবচরের দত্তপাড়া অংশের ১শ’ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন এলাকা থেকে মহাসড়ক মাত্র ১৫০ মিটার দূরত্বে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। বাঁধের ১শ’ মিটার ছাড়াও সংলগ্ন বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা অনেক বেশি হওয়ায় ভাঙনকবলিত এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নিলখী ইউনিয়নের চরকামারকান্দি, শিকদারকান্দি, দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাজেহারচর, সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের পূর্ব সন্ন্যাসীরচর, বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট টেকেরহাট ও উত্তর বহেরাতলার সেনেরবাট গ্রামের মানুষ। নিলখী ইউনিয়নের চরকামারকান্দি গ্রামের নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হালিম বেপারী বলেন, ‘আমার সাজানো-গোছানো ভিটেবাড়ি ও ৬ বিঘা ফসলি জমি আড়িয়াল খাঁ গ্রাস করেছে। আমি এখন পরিবার পরিজন নিয়ে সর্বস্বান্ত। বেঁচে থাকার মতো আমার আর কোন সম্বল বাকি নেই।’
এদিকে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহাদাত হুসাইন চৌধুরী বলেন, ‘মহাসড়ক সংলগ্ন বাঁধের ভাঙন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এখানে কাজ শুরু করা দরকার। তা না হলে মহাসড়ক ঝুঁকিতে পড়বে।’ এদিকে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাঁধ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের আড়িয়াল খাঁ নদের ভয়াবহ ভাঙনের কারণে মহাসড়ক ও হাজী শরীয়তউল্লাহ সেতু কিছুটা হুমকির মুখে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে এ উপজেলার অনেক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে যেসব জায়গায় তাদের প্রকল্প রয়েছে তারা কেবল সেখানেই কাজ করতে পারছেন।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ জানান, ভাঙন কবলিতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছেএবং চলমান থাকবে
অপরদিকে কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর, রমজানপুর ,সেলিমপুর রামচর, খাসের হাট, বাশগাড়ী,খুনেরচর এলাকায় আড়িয়াল খা ও পালরদী নদীর ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে শত পরিবার।
এদিকে মাদারীপুর সদর উপজেলা চরনাচনা কালিকাপরি মহিষেচর মাদ্রা এলাকায় আড়িয়াল খা নদীর ভাঙনে অন্তত ৭০ পরিবার গৃহহীন হতে চলেছে।অনেক ফসলী জমি নদীর গর্ভে চলে গেছে ইতিমধ্যে। ভাঙনের তীব্রতায় মাদারীপুর শহর রক্ষা বাধ ও কাজিরটেক ফেরীঘাট এলাকা হুমকির মুখে রয়েছে।
গাইবান্ধায় ভাঙনে ১ হাজার পরিবার গৃহহারা :
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা : গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও তিস্তা তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১ হাজার বাড়িঘর সহ বিভিন্ন অবকাঠামো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতংকে ওইসব এলাকা থেকে লোকজন ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের চন্দনস্বর, উত্তর খাটিয়ামারি, পশ্চিম খাটিয়ামারি, পূর্ব খাটিয়ামারি, কুচখালি, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের জিগাবাড়ি, গজারিয়া ইউনিয়নের জিয়াডাঙ্গা, গলনা, ভাজনডাঙ্গা, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কঞ্চিপাড়া এবং উড়িয়া ইউনিয়নের রতনপুর, কালাসোনার চর ও উত্তর উড়িয়া গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। সবচেয়ে ভাঙনের মুখে পড়েছে ফজলুপুর ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন জালাল জানান, এক সময়ে সেখানে ৫ হাজার ৪৬৩টি পরিবারের বাস ছিল। ১৯টি গ্রামে এসব পরিবার বসবাস করতো। ইতিমধ্যে নিশ্চিন্তপুর, কৃষ্ণমনি, মনোহরপুর, মানিকচর, চিনিরপটল, চৌমহন ও কুচখালিসহ ৭টি গ্রাম সম্পূর্ণভাবে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া চন্দনস্বর, উত্তর খাটিয়ামারি, পশ্চিম খাটিয়ামারি ও পূর্ব খাটিয়ামারি গ্রামের ৭৫ ভাগ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙনে বিভিন্ন সময়ে শত শত পরিবার গৃহহারা হওয়ায় বর্তমানে ওই ইউনিয়নে ৪ হাজার ১১১টি পরিবার বসবাস করছে। গত এক সপ্তাহে ওই ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত এলাকায় ৪৮৫টি পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি ওই ইউনিয়নের চন্দনস্বর গ্রামের ৫৫টি পরিবার গৃহহারা হয়ে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া গত ১০ দিনে চন্দনস্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খাটিয়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাটিয়ামারি নুরানী মাদ্রাসা, ফজলুপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দ্বিতল ভবন এবং ৯টি মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনের মুখে গোটা ফজলুপুর ইউনিয়নের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে গজারিয়া ইউনিয়নের জিয়াডাঙ্গা, ভাজনডাঙ্গা, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের জিগাবাড়ি, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া ইউনিয়নের রতনপুর, কালাসোনা ও উত্তর উড়িয়া গ্রামে গত এক সপ্তাহে অন্ততঃ ৯০টি পরিবার গৃহহারা হয়ে বিভিন্ন বাঁধে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এসব নিঃস্ব পরিবারের সাহায্যের্থে তেমন কেউ এগিয়ে আসছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েও কোন প্রতিকার মেলেনি বলে উড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদিয়ারজামান জানান।
এদিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর ভাঙনের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দু’সপ্তাহে এই উপজেলায় নদী তীরবর্তী প্রায় ৫শ’ পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকেই সুন্দরগঞ্জের তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে ১ হাজার হেক্টর আবাদি জমি, গাছপালা ও বাঁশঝাড় নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে।
সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারায় পানি বেড়েছে :
সিলেট অফিস: সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে গত কয়েক দিন থেকে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে নদী তীরবর্তী লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। তবে গত সোমবার পানি কিছুটা কমলেও গতকাল কিছুটা বেড়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রল রুম থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে সুরমা নদীর তিনটি পয়েন্টের মধ্যে কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হচ্ছে, সেই পয়েন্টে গত সোমবার ১৩ দশমিক ১৪ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হয়। সিলেট পয়েন্টে ১০ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হচ্ছে। এর আগে দিন এই পয়েন্টে ১০ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হয়েছিল। তবে সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে গতকাল ৭ দশমিক ২ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হচ্ছে। তবে এর আগের দিন এই পয়েন্টে ৭ দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হয়েছিল।
এছাড়াও সুরমা নদীর ছেড়ে কুশিয়ারা নদীতে পানি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার সময় সিলেট অঞ্চলের কুশিয়ারা নদীর দুইটি পয়েন্টেই বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি অতিবাহিত হচ্ছে। ওই দুটি পয়েন্ট হচ্ছে আমলশীদ পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে এর আগের দিন ১৬ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হয়। এছাড়াও শেওলা পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে গত সোমবার ১৩ দশমিক ৭১ সেন্টিমিটার পানি অতিবাহিত হয়েছিল। এদিকে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে পানি বাড়লেও কোন নদী ভাঙন বা বন্যার খবর পাওয়া যায়নি।
চরভদ্রাসনে বিলীনের পথে প্রধান সড়ক :
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা :
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরে এমপি ডাঙ্গী গ্রামের প্রধান পাকা সড়কের মোড় পয়েন্টের ডান পাশে পদ্মা নদীর পাড় ঘেষে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৮ টায় আকস্মিক ভাঙনে প্রায় এক বিঘাত মাঠী জমি বিলীন হয়ে গেছে। এতে উপজেলার পদ্মা নদী প্রধান সড়ক ঘেঁষে অবস্থান করছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যে কোন সময় রাক্ষুসী পদ্মা নদী মেইন সড়কটি আঘাত হানবে। অবশ্য, মাত্র দু’সপ্তাহ আগে পদ্মা নদীর উক্ত পয়েন্টে ফরিদপুর পাউবো ভাঙন রক্ষায় প্রায় এক হাজার বালুর বস্তা ফেলেছেন। কিন্তু তা কোনো কাজে আসেনি বলে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে চলেছেন।
রবিবার ভাঙন কবলিত পদ্মা পাড়ের বসতি অবঃ শিক্ষক মোঃ ওয়াছেল উদ্দিন সিকদার জানান, “ক’দিন আগে ভাঙন রক্ষায় ফরিদপুর পাউবো’ নদী পাড়ে কিছু বালুর বস্তা ফেলেছেন। পদ্মায় স্রোত বেশী থাকায় তা কোনো কাজে আসে নাই”।
রবিবার বিকেলে ফরিদপুর পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, “ উপজেলা পদ্মা নদীর এমপি ডাঙ্গী গ্রামের অবস্থা পরিদর্শনের জন্য আমরা ইতিমধ্যে লোক পাঠিয়েছি এবং ভাঙন রক্ষা কাজ করার জন্য অফিসিয়াল প্রক্রিয়া চলছে”।
জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে মেইন সড়কটি এমপি ডাঙ্গী গ্রামের মধ্যে দিয়ে চরহাজীগঞ্জ বাজার হয়ে জেলা শহর পর্যন্ত ২৫ কি.মি বিস্তৃত রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত যান বাহন চলাচল করে চলেছে। পদ্মা নদীর উক্ত পয়েন্টে পাকা সড়টি বিলীন হয়ে গেলে উপজেলার প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়বে। একই সাথে পদ্মার হুমকীর মুখে পড়বে উপজেলা পরিষদ সহ সদর বাজাটি। তাই এলাকাবাসী ভাঙন রক্ষায় দ্রুত কাজ করার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন