বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আন্দোলন দমনে ঢাবিতে বহিরাগত আনে ছাত্রলীগ

নিরাপত্তা শঙ্কায় ছাত্রীরা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমণের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠন। মোদিবিরোধী কর্মসূচি পালনকারীদের উপর লাগাতার বেপরোয়া হামলা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। তবে এবার এসব হামলায় ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে সংগঠনটি। হামলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেতাকর্মীদের থেকেও বেশি পরিমাণে অংশ নিচ্ছে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে, আন্দোলনকারীদের শায়েস্তা করতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ইন্ধনে বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলা চালাচ্ছে ছাত্রলীগের মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাকর্মীরা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাবির ‘বাংলাদেশের জনগণ’ ব্যানারে টিএসসি এলাকায় ‘জিয়াফতের’ আয়োজন করে একদল লোক। অনুষ্ঠান আয়োজকদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে একজন আহত হন। একইদিন সন্ধ্যায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা মশাল মিছিল বের করলে ভিসি চত্বর এলাকায় দ্বিতীয় দফায় হামলা করে ছাত্রলীগ। এ সময় সংগঠনটির ২৫ নেতাকর্মী আহত হন। এসব হামলায় ২জন সাংবাদিক গুরুতরভাবে মারধর করা হয়। হামলার সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সহস্রাধিক নেতাকর্মী নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এর আগে, গত মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদির আগমণের প্রতিবাদে বাম ছাত্রজোটের কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা চালায় ছাত্রলীগের মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরা। এতে কয়েকজন ফটো সাংবাদিকসহ জোটের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সংস্কৃতি উপেক্ষা করে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে বহিরাগতরা। মহানগর ছাত্রলীগের ব্যানারে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে টোকাই, রিক্সাওয়ালা, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা অংশ নেয়। ফলে ছাত্রলীগের ব্যানারে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছে বহিরাগতরা। বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী, সাংবাদিকসহ কেউ রক্ষা পাচ্ছে না এদের হাত থেকে। এমনকি একই সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও এরা হেনস্তা করেছে। নাম প্রকাশ না করার স্বত্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক নারী সহসভাপতি বলেন, এরা আমাকে পর্যন্ত টিজ করে যেখানে আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী।
গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় অতিথিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচিতে সাউন্ড বক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ও তার অনুসারী এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ ও তার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে জুবায়ের আহমেদসহ দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। জানা যায়, সংঘর্ষের সময় মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা সাদ্দাম হোসেনের উপর হামলার চেষ্টা চালায়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা থেকে শুরু করে ইভটিজিংয়ের অপকর্মে লিপ্ত ছিলো বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৌরত্মে ক্যাম্পাসে তটস্থ হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। বিশেষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ছাত্রীরা। ক্যাম্পাসে বেড়ে গেছে ইভটিজিংয়ের মত ঘটনা। নাম প্রকাশ না করার স্বত্তে ঢাবি সংগিত বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী সে যে দলই করুক না কেন একজন ছাত্রীকে ইভটিজিং করতে পারবে না। কারণ বিশ^বিদ্যালয় অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে একাডেমিক শাস্তিসহ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু যারা বহিরাগত অনাকাঙ্খিভ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর তাদেরকে চিহ্নিত করা যায়না। অনেক সময় এরা দলবদ্ধভাবে মেয়েদের হেনস্তা করে ছটকে পড়ে। আর বিশ^বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর গায়ে মহানগরের কোন টোকাই হাত তুলবে বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আন্দোলন দমন করতে ক্যাম্পাসে বহিরাগত নিয়ে আসার ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Tuhin Mollah ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫৪ এএম says : 1
নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু দেখেন বিচার তিনিই করবেন,তিনিই শ্রেষ্ঠ বিচারক। আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না,অপেক্ষায় থাকো জালিমরা।
Total Reply(0)
Mahfuz Rahman ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫৫ এএম says : 0
এই সামান্য বিহ্মোভ পুলিশের সহ্য হলোনা আর বসুরহাটে আওয়ামিলীগের সংঘর্ষের কারণে দুইটা মানুষ মারা যাওয়ার পরও পুলিশের গুলি চলেনি বড়ই আফসোসের ব্যাপার।
Total Reply(0)
Khandaker Momin ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫৬ এএম says : 2
ব্যাক্তি নরেন্দ্র মোদির অনেক সমালোচনা থাকতেই পারে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে পার্শ্ববর্তী কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান কে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারমধ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী একজন। যে দেশটার অবদান আমাদের স্বাধীনতা যূদ্ধে অপরিসীম। আমি একজন কে না পছন্দ করতেই পারি।কিন্তু একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী আসলে সারা দেশব্যাপী কেন এত আন্দোলন করতে হবে এটা বুঝলাম না। বাংলাদেশের আমন্ত্রণে মোদী আজ এসেছেন, কিছু রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে যোগদান করে কাল চলে যাবেন। এই আন্দোলন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যখন ফলাও করে প্রচার হবে তাতে করে নিজ দেশের ভাবমূর্তি কতটুকু উজ্জ্বল হবে?
Total Reply(0)
M.M Nur E Alam Siddique ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫৭ এএম says : 0
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার কথা বলতেন, মানুষের মুক্তির কথা বলতেন। আর এখন স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষে সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের বুকে পুলিশের গুলি চালিয়ে। বাহ্! কি বিচিত্র চিন্তা-চেতনা!
Total Reply(0)
Shamsuddin Shahjahan ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫৭ এএম says : 0
আফসোস ভিনদেশী কসাইর, জন্য নিজ দেশের মানুষ খুন।ধিক্কার জানাই এই ফ্যাসিবাদী সরকার কে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন