মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মোদিবিরোধী বিক্ষোভ নিহত ৫, আহত ১৫০

ঢাকা-বি.বাড়িয়া-হাটহাজারী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভের সময় রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকায় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে প্রতিবাদকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হাটহাজারীতে চারজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫০ জন। গতকাল জুমার নামাজের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
বায়তুল মোকাররম এলাকা রণক্ষেত্র : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের সঙ্গে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল জুমার নামাজের পরপরই বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দফায় দফায় বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে সংঘর্ষ। ব্যাপক সংঘর্ষ হয় দক্ষিণ গেটেও। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ শতাধিক মুসল্লি আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, জুমার নামাজের পর মুসল্লিরা মোদি বিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করলে পুলিশ তাতে বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। পুলিশের সাথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাইরে থেকে মসজিদের ভেতরে ইট-পাথর ছুড়েছেন। এসময় মুসল্লিরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’ বলে সেøাগান দেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ বলে সেøাগান দেন। এক পর্যায়ে পুরো এলাকায় পুলিশ সাঁজোয়া যান ও জলকামান নিয়ে অবস্থান নেয়। পাশাপাশি পুলিশ ও র‌্যাব চারদিক থেকে মসজিদ এলাকা ঘিরে ফেলে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষে কার্যত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল জুমার নামাজের আগেই লাঠিসোঁটা অবস্থান নেয় যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। মুসল্লিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা রাবার বুলেট ও শর্টগানের গুলি ছুড়তে শুরু করে। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও পুলিশের সাথে মুসল্লিদের ওপর হামলার চালায়। প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। গতকাল বিকেল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত অন্তত ৭০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। যাদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক।

এদিকে, সংঘর্ষের পর বায়তুল মোকাররম এলাকায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও মসজিদের ভেতরে মোদি বিরোধী পাঁচ শতাধিক মুসল্লি আটকা পড়েন। পরে আটকে পড়া মুসল্লি ও আন্দোলনকারীদের বের করতে সমঝোতা করে পুলিশ। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চলে যান। পরে মসজিদের পূর্ব গেইট গিয়ে আটকা পড়া মুসল্লিরা বের হন। এ সময় আহতদেরও বের করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

সংঘর্ষ শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটে সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা ছয় থেকে সাতটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদের আশপাশের এলাকায় ও মসজিদের ভেতরে সংঘর্ষের ঘটনায় নিক্ষেপ করা ইটপাটকেল চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

ডিবির মতিঝিল বিভাগের ডিসি আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, দফায় দফায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আসে। এক পর্যায়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই আন্দোলনকারীদের বায়তুল মোকাররম ত্যাগ করতে বলা হয়। পরে আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
আহতরা হলেন- মো. আজিম, টুটুল, দিদার, লালবাগ আজিজ ব্যাপারী, আরিফ, তারেক, শফিক, সোহেল রানা, সোহেল, মুরাদ, নজরুল ইসলাম, রিয়াদ, খাইরুল, চঞ্চল, শহিদুল, ৭১ টিভির সাংবাদিক ইশতিয়াক ইমন, মাইদুল দেওয়ান, জীবন মিয়া, গাজী মাজহারুল ইসলাম, ইমন খান, মো. হাবিব, আসাদুল, নিয়ামুল ইসলাম খান, নাসির আহমেদ, সাজ্জাদুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, শহিদুল ইসলাম টুটুল, মেহেদী হাসান সামির, দুলাল, মনির, দুলাল হোসেন, শাহাদত হোসেন, মতিউর সেন্টু ও প্রবীর দাস। আহত বাকিদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে সাংবাদিক, পথচারী, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কর্মী, মুসল্লি, রিকশাচালকও রয়েছেন। ইট পাটকেল, লাঠির আঘাত, গুলিসহ বিভিন্ন ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে আহতদের শরীরে।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া বলেন, বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি ঢামেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন তার মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
যেভাবে সংঘর্ষের শুরু : গতকাল জুমার নামাজের মোনাজাত শেষে মুসল্লিদের একাংশ মোদি বিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। সেøাগান দেয়ার খানিক পরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মসজিদের উত্তর পাশের ফটকে মিছিলকারীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে তারা মিছিলকারীদের মারধর করেন। এতে বিক্ষোভকারীরা পিছু হটে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এর খানিক পরই বিক্ষোভকারীরা আবার সংগঠিত হয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এ সময় প্রায় ১০ মিনিট ধরে দুইপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ মসজিদের দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ফাঁকা গুলিও ছোড়ে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এর আগে জুমার নামাজ শুরু হওয়ার আগ থেকেই মসজিদে ক্ষমতাসীন দলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নেন। কিছু নেতাকর্মী মসজিদের চারপাশের সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হাটহাজারীতে চারজন নিহত :
চট্টগ্রাম ব্যুরো ও হাটহাজারী সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে গুলিতে হেফাজতে ইসলামের কমপক্ষে চার কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অর্ধশত হেফাজত কর্মী ও সাধারণ মুসল্লি। তাদের মধ্যে অনেকে গুলিবিদ্ধ। গতকাল বাদ জুমা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং বৃহস্পতিবার ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ইসলামি দলের মিছিলে পুলিশি হামলার প্রেক্ষিতে হেফাজতের কর্মী এবং মুসল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এই সংঘর্ষ হয়।

হেফাজতের নেতারা অভিযোগ করেছেন পুলিশ বিনা উস্কানিতে শান্তিপূর্ণ মিছিলে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেছে। তবে পুলিশের দাবি মিছিলকারীরা থানায় হামলা করায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। পুলিশের গুলি ও লাঠির আঘাতে আহত অন্তত ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তাদের মধ্যে গুলিতে আহত চারজনকে চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। তারা হলেনÑ রবিউল ইসলাম, মেহরাজ হোসেন, জামিল উদ্দিন ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। নিহতদের মধ্যে আবদুল্লাহ ছাড়া বাকি তিনজন হাটহাজারী মাদসার ছাত্র বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে রবিউলের বাড়ি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ, মেহরাজের বাড়ি মাদারীপুর এবং জামিলের বাড়ি হাটহাজারী এলাকায়। আবদুল্লাহ হাটহাজারীর একটি দর্জির দোকানের কর্মচারী বলে জানা গেছে। অন্য আহতদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায় তিনিও মুসল্লি হিসাবে মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। চমেক হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ আরো চারজনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। পুলিশের গুলিতে চার কর্মী নিহতের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা চমেক হাসপাতাল এলাকা, পটিয়াসহ মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে। হাটহাজারীতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাদ জুমা হাটহাজারী মাদরাসা ও আশপাশের মসজিদ থেকে সহস্রাধিক জনতার মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি প্রধান সড়কে থানা এলাকায় গেলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের গুলি ও টিয়ার সেলের জবাবে মিছিলকারীরা ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। মুসল্লিদের অভিযোগ পুলিশ মিছিলে গুলি করেছে। তাতে কমপক্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত আহতদের রিকশা ও ভ্যানে করে হাসপাতালে নিতে মুসল্লিদের ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়ায় অনেকে রক্তে ভিজে যান।

হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী অভিযোগ করেন পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিনা উস্কানিতে গুলি করেছে। এতে ছয়জন ছাত্রসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। চারজন শহীদ হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সংঘর্ষে পুলিশ গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ভবনসহ কয়েকটি সরকারি ভবনে ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করে।
জেলা পুলিশের হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মিছিলকারীরা আকস্মিক থানায় ভবনে হামলা করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করেছে। কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। থানার ওসি রফিকুল আলম বলেন, ছাত্ররা থানার সামনে গিয়ে হঠাৎ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তাদের ছোঁড়া ইট-পাথরের টুকরায় থানার সামনের কাচের দরজা ভেঙে যায়। বিভিন্ন আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা থানা ছাড়াও উপজেলা ভূমি অফিস, ডাক বাংলোসহ আরও কয়েকটি সরকারি অফিসে হামলা করে ভাঙচুর করেছে। তারা ভ‚মি অফিসে আগুন দেওয়ারও চেষ্টা করে।

আছরের নামাজের আগে বিক্ষুব্ধ হেফাজত কর্মী ও মুসল্লিরা সড়ক অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে বিকেলে চারজনের মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে হতাহতদের দেখতে চমেক হাসপাতালে ছুটে যান হেফাজতে ইসলামের আমির শায়খুল হাদিস আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরীসহ হেফাজতের নেতারা। এসময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। নিহত চার জনের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নেতাকমীরা। এসময় হেফাজত আমির তাদের চরম ধৈর্য ধারণের পরামর্শ দিতে গিয়ে নিজেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, শহীদের এ রক্ত বৃথা যাবে না। হাসপাতাল এলাকায় বিক্ষোভ ঠেকাতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ গেল একজনের :
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে আশিক (২০) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত আশিক জেলা শহরের দাতিয়ারার সাগর মিয়ার ছেলে। এর আগে বিকেলে জেলা শহরের কাউতুলীতে মাদরাসা ছাত্রদের বিক্ষোভে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে মাদরাসা ছাত্ররা হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ নিয়ে শহরের প্রধান সড়কে মিছিল বের করেন।
এরআগে বিকেল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন শহরের জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা ও জামিয়া সিরাজুল উলুম মাদরাসার ছাত্ররা। বিকেল ৪টার দিকে তারা রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তাদের দখলে নেন। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি আব্দুর রহিম।

যাত্রাবাড়ীতে সড়ক অবরোধ
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ যাত্রাবাড়ীর আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
গতকাল রাতে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম কাজল জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সফরে আসার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী মাদরাসার সামনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেন। এর ফলে আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (25)
parvez ২৭ মার্চ, ২০২১, ১২:২৭ এএম says : 0
আগামীতে কোন পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি আসতে পারে ঃ ২৬-৩-১৯৭১ এবং ২৬-৩-২০২১ এই ২টি দিনের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর।
Total Reply(0)
মোঃ দুলাল মিয়া ২৭ মার্চ, ২০২১, ২:৫৩ এএম says : 0
অসহায় বাংলার মুসলিম রক্ত দিতেছে ইসলামের জন্য। আলেমদের হত্যার করে যাচছে কোথায় বাংলার মুসলিম যুবসমাজ ঘুমে থাকলে চলবেনা জেগেউঠে একবার রক্ষা কর দেশ সাধীনতা।
Total Reply(0)
A R Al Masum ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫১ এএম says : 0
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হল স্বাধীন দেশের কথিত স্বাধীন নাগরিকের লাল রক্ত দিয়ে
Total Reply(0)
MD Abu Hashem ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫১ এএম says : 0
আল্লাহ ছাড় দেন ছেড়ে দেন না।। প্রত্যেক জুলুমবাজ ও অত্যাচারীদের শেষ পরিণতি হয়েছে খুব ভয়াবহ ।। আর মুসলিমরা মৃত্যুকে ভয় পায় না । শহীদ হওয়া পরম সৌভাগ্য বিপরীতে মৃত্যু মুশরীকদের জন্য ভয় ও লাঞ্ছনার শুরু।
Total Reply(0)
Iqbal Hossain ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫২ এএম says : 0
বাংলাদেশের মতো নোংরা রাজনীতি পৃথিবীর কোথায় আছে?ভীনদেশী মেহমানের জন্য নিজ দেশের জনগনকে রক্তাক্ত করার নজির পৃথিবীর কোথায় আছে?এইজন্য বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষী দেয়,এদেশের রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের সমাপ্তিটা হয় নিষ্ঠুর!সকল মায়ের সন্তানদের আল্লাহ হেফাজতে রাখুক,আমিন।
Total Reply(0)
Saiful Islam ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫২ এএম says : 0
গ্রীস প্রথম চারশত বছর আগে স্বাধীনতা লাভ করে তুরস্ক বিরুদ্ধে করে আর দ্বিতীয় বার স্বাধীন হয় জার্মানি বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দুইশত আগে তাই দুইবার স্বাধীনতা দিবস পালন করে ! বাংলাদেশেও মনে হয় দুইবার স্বাধীনতা দিবস পালন করবে সামনে।
Total Reply(0)
Arif Ahmad ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫২ এএম says : 0
শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হয়েছিল! কারা অরাজকতা সৃষ্টি করেছে, দেশের জনগণ ভাল করে যানে। এখানে কোন সরকার বিরোধী আন্দোলন ছিল না! কিন্তু রক্তাত্ব করা হল ৪ টি তাজা প্রাণ গেল! আহতের সংখ্যা কত হিসাব নেই!
Total Reply(0)
রফিকুল ইসলাম ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৫৩ এএম says : 1
আফসোস একজন কসাই মোদির জন্য সাধারণ মুসলমানের শহীদ হতে হল, আসলে আমি কি স্বাধীন দেশে বাস করি? এটা ভাবতেও অবাক লাগে
Total Reply(0)
মোহাম্মদ আলী হোসেন ২৭ মার্চ, ২০২১, ৪:০৫ এএম says : 1
আমার ভাই 50 বছর পার হলেও আমরা কি পেয়েছি স্বাধীনতা এই 50 বছর পরে কেন দেখতে হবে আমাদের ভাইয়ের লাশ ভাই আপনারা আমার এই প্রশ্নের উত্তর দিবেন আশা করি।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ আলী হোসেন ২৭ মার্চ, ২০২১, ৪:০৭ এএম says : 1
প্রিয় ভাইয়েরা আমার 50 বছর পার হলেও আমরা কি পেয়েছি স্বাধীনতা 50 বছর পরে কেন দেখতে হবে আমার ভাইয়ের লাশ আমরা কি স্বাধীনতা এনেছিলাম এই বর্তমান পরিস্থিতি দেখার জন্য আসলে আমরা কি স্বাধীন আমরা কি স্বাধীনতা পেয়েছি যদি আমরা স্বাধীনতা তে থাকি তাহলে আজকে কেন আমার ভাইয়ের লাশ রাস্তায় দেখতে হবে প্রিয় ভাই আমার আশা করি আপনারা এর উত্তর দেবেন ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ আলী হোসেন ২৭ মার্চ, ২০২১, ৪:০৮ এএম says : 1
রাইট
Total Reply(0)
Md Junayed ২৭ মার্চ, ২০২১, ৪:৫০ এএম says : 0
"মুমিনের রক্তে রঞ্জিত স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী" এটাই কি স্বাধীনতা? এটাই কি স্বাধীন দেশ? এর বিচার একদিন হবে, এই বাংলার মাটিতে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা'লা ছাড় দেন, ছেড়ে দেন না।
Total Reply(0)
জুবায়ের আহমেদ ২৭ মার্চ, ২০২১, ৬:১৪ এএম says : 0
স্বাধীনতা অর্জন করেছি , কিন্তু আমরা মুসলিম জাতি স্বাধীন নয় বরং পরাধীনতার বেড়ায় আবদ্ধ।
Total Reply(0)
মোঃ রহমান ২৭ মার্চ, ২০২১, ৬:৩২ এএম says : 0
নিহতে সংখ্যা হাটহাজারী মাদ্রাসার ৬জন।
Total Reply(0)
Shawkat Hayat ২৭ মার্চ, ২০২১, ৬:৩৩ এএম says : 0
এখন কি আমরা স্বাধীন ?
Total Reply(0)
naim ২৭ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৪ এএম says : 0
আসিলে আমাদের লজ্জা নাই।
Total Reply(0)
মোঃ নাসির উদ্দিন ২৭ মার্চ, ২০২১, ৭:০২ এএম says : 0
মোদির কি লজ্জা শরম নাই যে দেশের অধিকাংশ মানুষরা তার সফরের বিরোধীতা করছে সেই শুরু থেকেই তার পরও বেহায়ার মত সেই দেশ সফর করছেন। মোদির শুধু নিজেকে না সম্পূর্ণ ভারতকে অপমানিত করল
Total Reply(0)
Md.Altaf+Hossain ২৭ মার্চ, ২০২১, ৭:৪০ এএম says : 0
মুসুল্লিদের শান্তিপুর্ন সমাবেশে হামলা ন্যাক্কার জনক ঘটনা। মোদির জন্য সাধারণ মুসলমানের শহীদ হতে হল, আসলে আমি কি স্বাধীন দেশে বাস করি। আমরা .......... গোলামি করি। আমরা এখনও পরাধিনতার গোলামি করছি।
Total Reply(0)
আতিকুর রহমান ২৭ মার্চ, ২০২১, ৮:৫১ এএম says : 0
ধংস হোক যালেম
Total Reply(0)
taijul+Islam ২৭ মার্চ, ২০২১, ৯:১৭ এএম says : 0
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হল স্বাধীন দেশের কথিত স্বাধীন নাগরিকের লাল রক্ত দিয়ে।হায়রে স্বাধীনতা.......
Total Reply(0)
Mominul+Hoque ২৭ মার্চ, ২০২১, ৯:৩৩ এএম says : 1
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ এই ভাবে হামলা করে, গুলিছুড়ে মানুষ হত্যা করে এটি খুবই লজ্জা জনক আমাদের জন্য। এটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে, স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকেই কলঙ্কিত করেছে। এসব খুনিরা দেশের শত্রু, স্বাধীনতা বিরোধী। এদের কঠোর বিচার হওয়া উচিত।
Total Reply(0)
MD.Shamim Bin Ayob ২৭ মার্চ, ২০২১, ১০:৫৪ এএম says : 1
যে ভিনদেশী মানুষের জন্য নিজ দেশের মানুষের প্রান জড়াতে পারে সেই তো আসল রাজাকার।
Total Reply(0)
helel Ahmad ২৭ মার্চ, ২০২১, ১:২৯ পিএম says : 0
kono karonei eto gula manush er moron mana jay na. beshi hole police arrest korte pare , kintu guli kora konovabei mana jay na.
Total Reply(0)
saddam ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৪১ পিএম says : 0
ইতিহাস সাক্ষী থাকবে আল্লাহ ছাড় দেন ছেড়ে দেননা
Total Reply(0)
তুষার ৩১ মার্চ, ২০২১, ১০:৫৮ এএম says : 0
ভাই ক্যাপশনে যে ছবিটা দিছেন একজন বন্দুক হাতে পাজামা পাঞ্জাবি পরা লোক টি কি হেফাজতের কেও নাকি আওয়ামিলীগ/পুলিশের কেও দয়া করে উত্তরটি দিলে আমি খুবই উপকারীতো হতাম।দয়া করে বলবেন কি লোকটি কোন পক্ষের???
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন