বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

খতমে নবুওয়ত ইসলামের মৌলিক আকিদা

মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

পূর্ব প্রকাশিতের পর

রাসুল (সা.) আরও বলেন-‘অন্যসব নবীর মোকাবেলায় আমাকে ছয়টি বিষয় দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করা হয়েছে, তার মধ্যে দুটি হলো- আমাকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের রাসুলরূপে প্রেরণ করা হয়েছে এবং আমার দ্বারা নবীদের সিলসিলার পরিসমাপ্তি ঘটানো হয়েছে।’ (মুসলিম : ৫২৩)।

কাদিয়ানিদের আকিদা
কাদিয়ানিদের বইপত্রের মাঝে কাদিয়ানিকে যারা নবী হিসেবে স্বীকার করে না, তাদের কাফের আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাদের একটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘হাকিকাতুন নুবুওয়াহ’-এ বলা হয়েছে-‘মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানি ঐ অর্থে নবী, যে অর্থে পূর্ববর্তী হজরত মুসা (আ.) ও হজরত ঈসা (আ.) নবী ছিলেন। যেমনিভাবে কোনো একজন নবীকে অস্বীকারকারী কাফের, তেমনিভাবে মির্জা গোলাম আহমদের নবুওয়ত অস্বীকারকারীও কাফের।’ এভাবে কাদিয়ানি সম্প্রদায় নিজেদের মুসলিম পরিচয় দিয়ে ধোঁকা ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে ইসলামের নামে একটি নতুন ধর্মমতের প্রচারণা চালিয়ে সমাজে অশান্তি ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে।

কাদিয়ানিদের ব্যাপারে মুসলিমবিশ্বের অবস্থান
প্রায় সব ক’টি মুসলিম দেশে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের যাবতীয় বই-পুস্তক, ও কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেমন- ১৯৫৭ সালে সিরিয়া সরকার কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করেছে। কাদিয়ানিদের সংগঠনকে অবৈধ ও বেআইনি বলে ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৫৮ সালে মিশর সরকার কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে কাফের এবং তাদের সংগঠনকে বেআইনি সংগঠন বলে ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৭৪ খৃস্টাব্দ মোতাবেক ১৩৯৪ হিজরির ১৪ রবিউল আউয়াল থেকে ১৮ রবিউল আউয়াল পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী ১০৪টি দেশের সম্মিলিত সংগঠন ‘রাবেতা আলমে ইসলামি’-এর অধিবেশনে কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে-‘এ দল কাফের ও ইসলাম বহির্ভূত। তাদের সঙ্গে বিয়েশাদি হারাম এবং মুসলমানদের কবরস্থানে তাদের দাফন করা নাজায়েজ।’ ওই প্রস্তাবগুলো ১০৪টি দেশের প্রতিনিধিরা সম্মিলিতভাবে পাস করেছেন। তাদের মধ্যে সৌদিআরব, দুবাই, আবুধাবি, কাতার, ইত্যাদি দেশ অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সংসদও কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশে তাদের আজও অমুসলিম ঘোষণা করা হয়নি। যে কারণে বর্তমানে তারা এ দেশে প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত, অনতিবিলম্বে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে কাদিয়ানি অপতৎপরতা বন্ধ করা। কাদিয়ানিরা অমুসলিম নাগরিক হিসেবে এ দেশের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে; তবে মুসলিম হিসেবে অবশ্যই নয়।

লেখক : সিনিয়র শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধান; ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, আল জামিআতুল ইসলামিয়া ইসলামপুর (ভবানিপুর মাদরাসা), গোপালগঞ্জ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন