সপ্তাহের অন্যদিনের তুলনায় শুক্র এবং শনিবার খাগড়াছড়িতে পর্যটকের সংখ্যা বেশি থাকে। মূলত চাকরিজীবীরা এই দুইদিন বন্ধের হিসেব করে এখানে ঘুরতে আসেন। এই দুইদিন সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাগড়াছড়ির প্রাণকেন্দ্র শাপলা চত্বর কিংবা নারিকেল বাগান থেকে মহাজন পাড়া পর্যন্ত কাউন্টার পাড়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ে। তবে গতকাল শুক্রবার সকালের চিত্রটা ছিলো ভিন্ন। মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সকল পর্যটন স্পট। আগামী ১৪ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। যার কারণে কোনো পর্যটক আসেননি।
সরেজমিন দেখা যায়, আলুটিলা, রিছাং ঝরনা, জেলা পরিষদ পার্ক, মায়াবিনী লেকসহ জেলার অন্য কেন্দ্রগুলো পর্যটক শূন্য রয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে প্রবেশ পথ। সব পর্যটন কেন্দ্র এখন ফাঁকা। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক পিজুস ত্রিপুরা বলেন, স্বাভাবিক দিনে সপ্তাহজুড়ে পর্যটক থাকলেও শুক্র ও শনিবার এক থেকে দেড় হাজার পর্যটক আলুটিলা ঘুরতে আসেন। তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে আলুটিলা প্রবেশ বন্ধ রেখেছি। নতুন নির্দেশনা পেলে খোলা হবে। দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাজেক। এটি রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন সকল পর্যটন কেন্দ্রের সঙ্গে সাজেক প্রবেশও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই এই পথে চলাচলরত সকল পর্যটকবাহী যানবাহন বন্ধ রয়েছে।
সাজেক কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মো. আরিফ জানান, দুটি পরিবহন সমিতির কাছে প্রায় ৪০০টির মত পিকআপ এবং চাঁদের গাড়ি রয়েছে। অধিকাংশ গাড়ি সাজেক চলাচল করে। সাজেক বন্ধ ঘোষণা করায় আপাতত এই পথে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে মালিক, চালকসহ ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা ভোগান্তিতের পরবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, সমিতির আওতায় জেলায় মোট ২৬টি হোটেল রয়েছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পর হোটেলগুলোতে পর্যটকদের সব বুকিং বাতিল করা হয়েছে। অনেক হোটেল ইতোমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে। জরুরি যে সব লোকজন থাকছে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে।
এর আগে গত বুধবার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১৪ দিনের জন্য জেলার সকল পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গেল বছরের ১৮ মার্চ করোনা সংক্রমণ বাড়ায় জেলায় পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে একই বছরের ২৮ আগস্ট প্রায় পাঁচ মাস পর পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন