শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

গাণিতিক সত্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আল কোরআন

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

আল কোরআন গভীর মনোযোগের সাথে অধ্যয়ন করলে সহজেই উপলব্ধি করা যায় যে, আল্লাহপাকের কালামের সর্বত্রই গাণিতিক সত্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিধৃত আছে। তা আল্লাহপাকের দেয়া নেয়ামতসমূহের মধ্যে এক অনন্য নেয়ামত। আসুন, এবার সেদিকে একটু নজর দেয়া যাক।
৬ সংখ্যাটির গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য ইসলামী জীবন দর্শনের এক উজ্জ্বল অধ্যায়। আরবি ভাষায় ৬ সংখ্যাটিকে ‘ছিত্তাতুন’ বলা হয়। আল কোরআনে ‘ছিত্তাতুন’ অর্থাৎ ৬ সংখ্যাটি বিভিন্ন সূরায় সৃষ্টিতত্তে¡র হাকীকত প্রকাশ করার লক্ষ্যে ৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে। যথা :
১. ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি পালক আল্লাহ, যিনি আকাশ মন্ডল ও ভূমন্ডল ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। (৭ নং সূরা আ’রাফ : আয়াত ৫৪)। ২. ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আকাশ মন্ডল ও ভূমন্ডল ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। (১০ নং সূরা ইউনুস : আয়াত ৩)। এ ই দুটি আয়াতের শব্দাবলি এক।
৩. ইরশাদ হয়েছে : তিনিই সেই সত্তা যিনি আকাশ মন্ডল ও ভূমন্ডল ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। (১১ নং সূরা হুদ : আয়াত-৭)। ৪. ইরশাদ হয়েছে : তিনিই সেই সত্তা যিনি আকাশ মন্ডল ও ভূমন্ডল ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। (৫৭ নং সূরা হাদীদ : আয়াত ৪)। ৩ ও ৪ ক্রমিক নং-এর আয়াতদ্বয়ের শব্দাবলীও এক।

৫. ইরশাদ হয়েছে : তিনিই আল্লাহ, যিনি আকাশ মন্ডল ও পৃথিবী এবং এ দূয়ের মধ্যে অবস্থিত বস্তসমূহ ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। (৩২ নং সূরা সিজদাহ : আয়াত-৪)। ৬. ইরশাদ হয়েছে : যিনি আকাশ মন্ডল ও পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যে অবস্থিত বস্তুসমূহ ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। (২৫ নং সূরা ফুরকান : আয়াত ৫৯)। ৭. ইরশাদ হয়েছে : এবং নিশ্চয়ই আমি আকাশ মন্ডল ও পৃথিবী এবং তন্মধ্যস্থ বস্তুরাজি ৬ দিনে সৃষ্টি করেছি। (৫০ নং সূরা ক্বাফ : আয়াত ৩৮)।

বিশ্লেষণ- (ক) নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং তন্মধ্যস্থ বস্তু নিচয় ৬ দিনে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য হলো আল্লাহপাকের খলীফা মানুষকে বিশ্ব ব্যবস্থা পরিচালনায় ধারাবাহিকতা রক্ষার জ্ঞান দান করা এবং মানুষকে কর্ম কুশলতা শিক্ষা দেয়া। অন্যথায় ৬ দিন সময়ের কোনো প্রয়োজনই ছিল না।
বিশ্লেষণ- (খ) আল কোরআনে ৬ দিন বলতে সূর্য ও চন্দ্রের উদয় অস্ত সম্বলিত জাগতিক ৬ দিন বুঝানো হয়নি। বরং আল্লাহপাকের এলেমে সংরক্ষিত নির্দি লক্ষণকে বুঝানো হয়েছে। কারণ নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও গ্রহ উপগ্রহ সৃষ্টির পূর্বে দিবা রাত্রির কোনো পরিচয়ই ছিল না।

বিশ্লেষণ-(গ) যে ৬ দিনে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে তা’হলো রবিবার, সোমবার, মঙ্গলবার, বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার। শনিবার দিন কোনো কিছু সৃষ্টি করা হয়নি। শনিবারকে আরবিতে ‘ইয়াওমুছ ছাবত’ বলা হয়। ছাবত শব্দের অর্থ হলো কর্তন করা, বিরতি দেয়া। কেননা, শনিবারের পূর্বেই নভোমন্ড, ভূমন্ডল ও তন্মধ্যস্থ যাবতীয় বস্তু নিচয়ের সৃষ্টির কাজ পরিসমাপ্ত হয়ে গিয়েছিল।

বিশ্লেষণ-(ঘ) ভূমন্ডলকে সৃষ্টি করা হয়েছে রবিবার ও সোমবার। ভূমন্ডলের পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী সমুদ্র, খনিজ পদার্থসমূহ, বৃক্ষ, উদ্ভিদ, মানুষ ও কীট, পতঙ্গ, জন্তু জানোয়ারের পানাহারের বস্তু সামগ্রী সৃষ্টি করা হয়েছে মঙ্গলবার ও বুধবার। অতঃপর দু’দিনে অর্থাৎ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে সাত আকাশ, আরশ, কুরসী, লাওহ, কলম, সৌরমন্ডল ও নিহারীকা মন্ডলে অবস্থিত বস্তুনিচয় সৃষ্টি করা হয়েছে। এর বিশদ বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে ৪১ নং সূরা হা-মীম-আস্ সিজদাহ-এর ৯নং আয়াত হতে ১৩ নং আয়াত পর্যন্ত।

বিশ্লেষণ-(ঙ) গাণিতিক সত্যের আলোকেও ৬ সংখ্যাটির ফযিলত অনুধাবন করা যায়। আল কোরআনে ৬ সংখ্যাটির কথা ৭ বার উল্লেখ করা হয়েছে। উভয় সংখ্যার গুণফল ৪২। উহার একক (৪+২) = ৬। আলহামদু লিল্লাহ! তাছাড়া মানব দেহের ৬টি লতিফা-ক্বালব, রূহ, ছির, খফী: আখফা, নাফস আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মহব্বতের নূরে আলোকিত হলে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সর্বত্র বিচরণ করা যায় এবং আল্লাহপাকের নৈকট্য অর্জন করা যায়। এটা আল্লাহ পাকের এক অনন্য নেয়ামত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Ahmed hossain khan ৩ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৩৮ এএম says : 0
Ayre nobin ayre probin. Sobai pori quranul karim. Khudar bani khudar kalam.ai khanat a pura santi salam. Ayre nobin ayre probin amra pori khudar kalam.
Total Reply(0)
তানিম আশরাফ ৩ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
কুরআন মাজিদের মুজিজার একটি অনুপম দিক হল অবিশ্বাসীদের প্রতি বহু চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া। এসব চ্যালেঞ্জের সবগুলিই খুব সুনির্দিষ্ট, বলিষ্ঠ ও সুস্পষ্ট।
Total Reply(0)
হাদী উজ্জামান ৩ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
চৌদ্দশ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, তথাপি এ পর্যন্ত কেউ একটি সাধারণ চ্যালেঞ্জেরও জবাবে সাড়া দিতে সক্ষম হয় নি। যদি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামক একজন ব্যক্তি কুরআনে এসব চ্যালেঞ্জ সন্নিবিষ্ট করতেন, তবে অসংখ্য মানুষ সেসবের জবাবে সাড়া দিত। বাস্তবতা হল, কোনো মানুষ একটি সাধারণ চ্যালেঞ্জের জবাবেও সাড়া দেয় নি, যা যে কাউকে এই বিশ্বাসের পথে পরিচালিত করে যে, আল্লাহ তাআলাই এসকল চ্যালেঞ্জ কুরআন মাজিদে সন্নিবিষ্ট করেছেন। এভাবে কুরআন মাজিদের প্রতিটি চ্যালেঞ্জই তা আসমানি গ্রন্থ হওয়ার সাক্ষ্য বহন করে।
Total Reply(0)
মহীয়সী বিন্তুন ৩ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
এই সেই কিতাব, যাতে কোনো সন্দেহ নেই। মুত্তাকিদের (যারা আল্লাহর প্রতি তাদের করণীয়সমূহ সম্পর্কে সচেতন তাদের) জন্য হেদায়াত। (বাকারা, ০২ : ০২)
Total Reply(0)
বদরুল সজিব ৩ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
আর আমি আমার বান্দার ওপর (কুরআন মাজিদে) বিভিন্ন সময়ে যা নাজিল করেছি যদি তোমরা সে সম্পর্কে সন্দেহে থাক তবে তোমরা তার মত একটি ‘সুরা’ নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সাক্ষীসমূহকে ডাক; যদি তোমরা (তোমাদের সন্দেহের ক্ষেত্রে) সত্যবাদী হও। (বাকারা, ০২ : ২৩)
Total Reply(0)
Mamunur Rashid ৩ এপ্রিল, ২০২১, ৪:৩৩ এএম says : 0
জাযাকাল্লাহ জনাব আল কুরআনের বানী সত্য এটাতে কোন সন্দেহ নেই
Total Reply(0)
Mamunur Rashid ৩ এপ্রিল, ২০২১, ৪:৩৪ এএম says : 0
জাযাকাল্লাহ
Total Reply(0)
Mamunur Rashid ৩ এপ্রিল, ২০২১, ৪:৩৪ এএম says : 0
মাশা-আল্লাহ অসাধারণ জাযাকাল্লাহ
Total Reply(0)
salman ৩ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১৯ এএম says : 0
Allah-hu-Akbar
Total Reply(0)
parvez ৩ এপ্রিল, ২০২১, ৭:৩৮ এএম says : 0
a very ordinary writing .
Total Reply(0)
Ahmed hossain khan ৩ এপ্রিল, ২০২১, ৮:২০ এএম says : 0
Amar apon tumar quran. amar sopon tumar quran. amar jopon tumar quran .amar noyon tumar quran .amar potton tumar quran. amar bohon tumar quran. amar bopon tumar quran. amar doroson tumar quran. amar dorpon tumar quran. amar dean tumar quran . amar doon tumar quran . amar poon tumar quran. amar joton tumar quran. amar jibon tumar quran. amar koton tumar quran. amar kompon tumar quran. amar kirton tumar quran. amar gunjon tumar quran.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন