শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাকৃবি গবেষকের সাফল্য দেশীয় খলিশা এবং দারকিনা মাছ খাবে মশার লার্ভা

মশা মারবে মাছ

রাকিবুল হাসান, বাকৃবি সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

বর্তমান সময়ে করোনার পাশাপাশি মশা আর একটি আতঙ্কের নাম। কারণ ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগের প্রধান বাহক মশা। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছিল। দেশে মশা নিধনে কেবল ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। যা পরিবেশ ও মানুষের শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ থেকে রক্ষা পেতে জৈবিক পদ্ধতিতে (মশাভুক্ত মাছ) মশা নিধনে সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ। গতকাল সকালে এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি তার গবেষণার এসব সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ জানান, মশা সাধারণত বদ্ধ পানিতে ডিম ছাড়ে। এই ডিম পর্যায়ক্রমে লার্ভা থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ মশায় পরিণত হয়। শুধু ওষুধ ছিটিয়ে এককভাবে এই মশা দমন করা কখনই সম্ভব নয়। তাই মশার বিস্তার রোধে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে। এ লক্ষ্যে জৈবিক উপায়ে মশা নিধনের জন্য চট্টগ্রামে গবেষণা শুরু করেছিলাম। চট্টগ্রামের বিভিন্ন ড্রেনের ও নর্দমার নোংরা পানিতে প্রচুর পরিমাণ ‘মসকুইটো ফিশ’ পেয়েছি এবং এরা এই নোংরা পানিতে খুব ভালোমতোই বেঁচে থাকতে পারে। আর তাদের পেট কেটে দেখেছি প্রচুর পরিমাণে মশার লার্ভা রয়েছে।

অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ আরও জানান, পরবর্তীতে মসকুইটো ফিশ ছাড়াও আরো কিছু দেশি-বিদেশি মাছ ল্যাবরেটরিতে আমি পরীক্ষা করে দেখেছি। গবেষণায় আমরা দেখেছি বিদেশি মসকুইটো ফিশ বা গাপ্পির তুলনায় মশক লার্ভা ভক্ষণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশি জাতের খলিশা মাছের দক্ষতা প্রায় দ্বিগুণ। বিদেশি মাছের তুলনায় দাড়কিনা মাছের দক্ষতাও ভালো এবং খলিশা শুধু মশার লার্ভা ভক্ষণেই ভালো নয়, এটির ড্রেনের পানিতে অভিযোজন ও টিকে থাকার হারও ভালো।

এসব মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদনও খুবই সহজ। গবেষক মনে করেন, দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলো এসব মাছ শহরের বদ্ধ জলাশয়গুলোতে নিয়মিতভাবে প্রতিবছর ছেড়ে দিতে পারে। এতে করে এসব জলাশয়ে মশা ডিম ছাড়লে উৎপন্ন লার্ভা খেয়ে দেশি মাছগুলো মশা দমনে অনেক অবদান রাখবে। দেশের স্বার্থে এক্ষেত্রে এ পোনা প্রযুক্তি সরবরাহ, পোনা উৎপাদনের প্রশিক্ষণ সহায়তা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ বাকৃবি মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের বিশেষজ্ঞ দল বিনা পারিশ্রমিকে সহায়তা প্রদান করবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন