শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রামগতিতে জেলের চাল বিতরণে অনিয়ম

৮০ কেজির স্থলে জেলেদের দেওয়া হচ্ছে ৭৫ কেজি হোল্ডিং ট্যাক্সের নামে ২৩০ টাকা করে আদায়

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৪১ এএম

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকা জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল (জেলে)বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নে জেলেদের মধ্যে প্রথম ধাপের (দুই মাসের) চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। ৮০ কেজির স্থলে ৭৫ কেজি এবং হোল্ডিং ট্যাক্সের নামে ২৩০ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জাটকা রক্ষায় ও ইলিশ বৃদ্ধিতে চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার নৌ-সীমাকে সরকার ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ এলাকায় মার্চ-এপ্রিল সব রকম মাছ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এসব এলাকার জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে সরকার ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত চার মাসের জন্য ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে। ওই বরাদ্দের আওতায় আলেকজান্ডার ইউনিয়নে তিন হাজার ৪৭০ জেলের জন্য প্রথম ধাপে দুই মাসের ২৭৭ দশমিক ৬ টন চাল সম্প্রতি খাদ্যগুদাম থেকে উত্তোলন করা হয়।মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে জেলেদের মধ্যে ওই চাল বিতরণ চলছে। সরকারি এ সহায়তা ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে বিতরণ করার কথা থাকলেও তিনি সেখানে ছিলেন না। পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন কয়েকজন গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ সময় দেখা যায়, একজন গ্রাম পুলিশ সদস্য প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্সের নামে জেলেদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২৩০ টাকা আদায় করে ২০০ টাকার রসিদ হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। ওই রসিদ দেখালে দুটি বস্তায় তাদের দুই মাসের চাল দেওয়া হয়। কিন্তু মিটারে পরিমাপ করে ওই চাল দেওয়ার কথা থাকলেও তারা তা বালতি দিয়ে মেপে দিচ্ছেন। পরে পরিষদের পাশের দোকানে নিয়ে ওই চাল ওজন করে দেখা গেছে ৭৫-৭৬ কেজি হচ্ছে।

জেলে মো. মিলন, রুহুল আমিন, খোরশেদ আলম, আলাউদ্দিন, মো. হেলাল ও আব্দুল হাই জানান, খাদ্য সহায়তা বিতরণকালে ইউনিয়ন পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্সের অজুহাত দেখিয়ে তাদের কাছে ২৩০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এ টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত চাল দেওয়া হচ্ছে না। অথচ ২৩০ টাকা নিয়ে তাদের রসিদ দেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকার। চালও চার থেকে পাঁচ কেজি করে কম দেওয়া হচ্ছে। তারা জানান, কিছু কিছু জেলে এ অনিয়মের প্রতিবাদ করলে উল্টো প্রতিবাদকারীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন।অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, নিয়ম মেনেই তারা জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করছেন। খাদ্যগুদাম ও ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে লোড-আনলোডের কারণে কিছু চাল ঝরে পড়ার কারণে জেলেরা সামান্য কম পাচ্ছেন।হোল্ডিং ট্যাক্সের নামে ২৩০ টাকা করে নিয়ে ২০০ টাকার রসিদ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বাকি ৩০ টাকা বস্তা ও পরিবহন খরচের জন্য নেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো.সফিকুল ইসলাম পাঠান জানান,অফিসিয়াল ব্যস্ততার কারণে তিনি চাল বিতরণের সময় থাকতে না পারলেও নিয়মিত খবর রাখছেন।উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, খাদ্যগুদাম থেকে চাল উত্তোলনের জন্য পরিবহন খরচ বাবদ ইউনিয়ন পরিষদকে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছেন। এ জন্য জেলেদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা উচিত নয়।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল মোমিন জানান, চাল ওজনে কম দেওয়া এবং অর্থ আদায়ের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন