টানা এক বছর ধরে দফায় দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শালিস দরবার করেও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় এক গরু ব্যবসায়ীর প্রতারণায় সাধারণ কৃষকরা ফেরত পায়নি ১৭টি গরু বিক্রির টাকা। অবশেষে ন্যায় বিচার চেয়ে বিজ্ঞ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। বিজ্ঞ আদালত ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআই পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।এনিয়ে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হালুয়াঘাট থানার ওসি মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় ভাবে বহুবার মীমাংসার চেষ্টা স্থানীয়রা সবাই ব্যর্থ হয়েছে। আমরাও চেয়েছিলাম আপোষ হোক। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি। তবে এর আগেও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গরুর মালিকদের বিরুদ্ধে মারামারি মামলা করেছিল সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী। ওই মামলার চার্জশীট আদালতে দিয়ে দেয়া হয়েছে।
থানা পুলিশ সূত্র জানায়, প্রতারক গরু ব্যবসায়ীর নাম আতিকুর রহমান ওরফে খোকন(৪০)। সে উপজেলার উত্তর ইটাখোলা বোয়ালজানা গ্রামের বাসিন্দা হাজী মো: আশরাফ আলীর পুত্র।
ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাজাহান কবীর জানান জানান, গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারী গরু ব্যবসায়ী খোকন এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে ১৭টি গরু বাকিতে ক্রয় করে। কথা ছিল বিশ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না দিয়ে তালাবাহানায় কালক্ষেপন করে। এনিয়ে ক্ষতিগ্রস্থরা দফায় দফায় শালিশ-দরবারের দ্বারস্থ হওয়ায় উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। তিনি জানান, এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ন্যায় বিচার চেয়ে গত ২৮ মার্চ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের ৫নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জামাল উদ্দিন, সেকান্দর আলী, আজাহারুল ইসলাম ও কামাল হোসেন। বিজ্ঞ আদালত ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআই পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই মামলার আসামিরা হলেন- মো: আতিকুর রহমান ওরফে খোকন(৪০), সাদেকুর রহমান সুমন(৩০), কাকন মিয়া(৩৫), হাজী মো: আশরাফ আলী (৬০)।
স্থানীয় ১২নং স্বদেশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: জিহাদ সিদ্দিকী ইরাদ বলেন, প্রতারণার অভিযোগ সত্য। গত বছরের ১৩ মার্চ প্রকাশ্য শালিসে অভিযুক্ত গরু ব্যবসায়ী প্রতারণার কথা স্বীকার করে এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধের কথা দিয়ে অমান্য করেছে।
খবরের বিষয়ে হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম জানান, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের অভিযোগ সত্য। এ ঘটনায় বহু শালিস হয়েছে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। এনিয়ে মামলা-মোকাদ্দমাও চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন