চট্টগ্রামে লকডাউনেও সবকিছু স্বাভাবিক। স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই নেই। গণপরিবহন, হাটবাজার, পাড়া-মহল্লা সর্বত্রই ভিড় জটলা। মাস্ক পরা আর শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনাও উপেক্ষিত হচ্ছে সর্বত্র। সরকারের নির্দেশনা মানতে মানুষকে বাধ্য করার মতো কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
রুটিণ কাজের মতো জেলা প্রশাসন আর সিটি কর্পোরেশনের অভিযান চলছে। কিছু ব্যক্তি আর প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা এবং সতর্ক করা হচ্ছে। তবে অভিযান শেষে ফের সবকিছু চলছে আগের মতো। সাধারণ মানুষের মধ্যে লকডাউন মানার কোন প্রবণতা নেই। জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দল এবং দলের নেতারাও এ বিষয়ে নীরব। জনসচেতনতা বাড়াতে নেই কোন কর্মসূচি।
এতে সরকারের ঘোষিত লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, মাস্ক ব্যবহার আর শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা না গেলে সংক্রমণ কমানো যাবে না। কারণ এখন করোনার কোন উপসর্গ নেই। এ অবস্থায় কার শরীরে এই জীবাণু আছে তা বুঝার কোন উপায় নেই।
একমাত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই সংক্রমণ ঠেকানো যাবে। অন্যথায় করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়বে। লকডাউন ঘোষণার দুই দিন পর গণপরিবহন খুলে দেওয়া হয়। গতকাল থেকে খুলেছে মার্কেট শপিং মল। হাট বাজারের পাশাপাশি অন্যান্য দোকান পাটও খেলা। এতে মানুষের ভিড় জটলা আড্ডাবাজি বাড়ছে। লোকজন মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন।
কেউ কেউ প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন। অনেকের মাস্ক থাকলেও তা নেই মুখে। অলিগলিতে আড্ডা আর জটলা চলছে রাতে দিনে। খোলা জায়গা, খেলার মাঠ, ফুটপাত সর্বত্রই অকারণ ঘোরা ফেরা। কিশোর তরুণেরা দল বেধে সড়কে আড্ডা দিচ্ছে। রিকশা, মোটরবাইক নিয়ে ঘুরছে। পাড়া প্রতিবেশির বাসা বাড়িতেও বেড়ানো বন্ধ নেই। চলছে বিয়ে-শাদির মতো সামাজিক অনুষ্ঠানও।
গতবছরের লকডাউনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা দেখা যায়। তখন সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনও বিধি-নিষেধ নিশ্চিতে মাঠে ছিলো। এবারের চিত্র পুরো উল্টো। এ অবস্থায় সরকারের তরফে আগামী ১৪ এপ্রিল আরো কঠোর লকডাউনের কথা বলা হচ্ছে। সেই কঠোর লকডাউন কতকুটু কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কড়া লকডাউনের জন্য কলকারখানা বন্ধ করে দিলে শহর থেকে গ্রামমুখী মানুষের যে ঢল নামবে তাতে পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন