শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পাকিস্তান ২০৪০ সালে হবে ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতি

মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, তার পূর্বাভাসিত মোট দেশীয় পণ্য (জিডিপি) র‌্যাঙ্কের ভিত্তিতে পাকিস্তান ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। প্রতি চার বছর পরপর এ ধরনের পূর্বাভাস জারি করা হয়। মূল্যায়নটি ইউএস ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিলের (এনআইসি) এ বছরের গেøাবাল ট্রেন্ডস প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নীতিনির্ধারক এবং নাগরিকদের পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে বিশ্বকে রূপদান করতে পারে এমন অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, প্রযুক্তিগত এবং জনশক্তির প্রত্যাশা করতে সহায়তা করার জন্য এ ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
আমেরিকান শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে আফ্রিকান নাগরিক সমাজকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ইনপুট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে উল্লেখ করে গোয়েন্দা রিপোর্টের লেখকরা লিখেছেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য নীতিনির্ধারক এবং নাগরিকদের সহায়তা করা ... সম্ভাব্য ভবিষ্যতের একটি বিন্যাসের জন্য প্রস্তুত করা’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাÐ বিগত ৪০ বছরে এশিয়ার দিকে ঝুঁকছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এর উচ্চ বর্ধনের হার, বৃহৎ জনসংখ্যা এবং দারিদ্র্য হ্রাসের হার প্রতিফলিত করে। এটা এমন একটি প্রবণতা যা প্রায় অবশ্যই ২০৩০ এবং সম্ভবত ২০৪০ এর মধ্যে অব্যাহত থাকবে ’।
প্রতিবেদন বলছে যে, এশিয়াতে সর্বাধিক জনবহুল কয়েকটি দেশ ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসাবে স্থান পেয়েছে, এমনকি তাদের মাথাপিছু আয় উন্নত অর্থনীতির চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। ডকুমেন্টটিতে বলা হয়েছে, ‘বিগত ৪০ বছরে এশিয়ার রেকর্ড প্রবৃদ্ধির ফলস্বরূপ এশীয় জীবনযাত্রার মান এবং মধ্যবিত্ত এমনকি উচ্চ-আয়ের অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একাত্মতা ঘটেছে’।
২০২০ সালে চীন ও অন্যান্য উন্নয়নশীল এশিয়ার দেশগুলো বৈশ্বিক জিডিপিতে যথাক্রমে ১৮ শতাংশ এবং ৭ শতাংশ অবদান রেখেছিল। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের বরাত দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘যদি এ প্রবণতা অব্যাহত থাকে তবে ২০৪০ সালের মধ্যে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশ্বজুড়ে জিডিপির প্রায় ৩৫ শতাংশ হয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, ভারত ও চীন বিশ্বব্যাপী জিডিপির ২৯ শতাংশ অবদান রাখবে’। রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ার দ্রæত বর্ধন ২০৪০ সালের মধ্যে শীর্ষ দশ অর্থনীতির দেশগুলোতে স্থান দিতে পারে। তবে প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে, তাদের জীবনযাত্রার মান বা মাথাপিছু জিডিপি উন্নত অর্থনীতির তুলনায় ভাল থাকতে পারে।
পাকিস্তান সম্ভবত ২০৪০ সালে মধ্যযুগের নিচে
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরের দুই দশকে বেশিরভাগ সংখ্যক তরুণ-তরুণীর দেশ তাদের জনসংখ্যার প্রাথমিক চাহিদা পূরণে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, বিশেষত যুব বালকের সাথে সম্পর্কিত সামাজিক ওঠানামাগুলির আলোকে। ‘সাব-সাহারান আফ্রিকাতে মানুষের মাঝ বয়স বেড়ে ২০৪০ সাল নাগাদ মাত্র ২২-এ উন্নীত হবে, এখনও এটি মধ্য বয়স ৩০ এর অনেকটা নিচে’। এতে বলা হয়, পূর্ব-এশিয়ার জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশের তুলনায় উপ-সাহারান আফ্রিকার জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বেশি লোক ২০৪০ সালে ১৫ বছরের কম হবে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘অন্যান্য উচ্চ জনবহুল দেশগুলো যারা ২০৪০ সালের মধ্যে ন্য‚নতম বয়সের নিচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে তারা হল আফগানিস্তান, মিসর এবং পাকিস্তান’।
জলবায়ু পরিবর্তন, ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান এবং সংঘাত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রোগ, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান, আবহাওয়া পরিবর্তন এবং আন্তঃ এবং আন্তর্জাতিক দ্ব›দ্ব আগামী দশকগুলোতে আরো বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে, কারণ কোভিড-১৯ মহামারী ইতোমধ্যে এর মধ্যে কিছু সমস্যা বাড়িয়ে তুলেছে। এতে বলা হয়, চীন এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর জোটের মধ্যে বৈরিতা আরো তীব্র হওয়ার শঙ্কা রয়েছে, সামরিক শক্তি, জনসংখ্যার উপাত্ত, প্রযুক্তি এবং ‘প্রশাসনের মডেলগুলোতে কঠোর বিভাজন’ পরিবর্তনের সাহায্যে এটি সম্ভব হয়েছে।
রিপোর্ট বলছে যে, আঞ্চলিক শক্তি এবং রাষ্ট্র বহির্ভ‚ত অভিনেতারা আরও বেশি প্রভাব ফেলতে পারে, সম্ভবত ‘আরও সংঘাত-প্রবণ ও অস্থির ভ‚-রাজনৈতিক পরিবেশ’ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দুর্বল করে দিতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবহাওয়া পরিবর্তন, রোগ, আর্থিক সঙ্কট এবং প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের মতো চ্যালেঞ্জগুলো প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে এবং দেশে আরও ঘন ঘন এবং তীব্রভাবে প্রকাশিত হতে পারে।
এটি বলছে যে, ত্রিশ লাখেরও বেশি লোকের প্রাণকাড়া করোনাভাইরাস মহামারী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বড় ‘বৈশ্বিক বিপর্যয়’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে, এর পরিণতি বছরের পর বছর ধরে থাকতে পারে।
রিপোর্ট বলছে, কোভিড-১৯ প্রকাশিত এবং কখনও কখনও প্রসারিত স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে বৈষম্য, জাতীয় ঋণ বৃদ্ধি, জাতীয়তাবাদ এবং রাজনৈতিক মেরুকরণের তীব্রতা, গভীর বৈষম্য, সরকারে অবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলেছে এবং ব্যর্থ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা তুলে ধরেছে। দারিদ্র্য, রোগ এবং লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রগতি খুব সামান্য এবং কখনও কখনও বিপরীতমুখী। প্রতিবেদনে মহামারী সৃষ্ট অনেক সমস্যা ২০৪০ সালের মধ্যে বাড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন এনআইসির কর্মকর্তা বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট গুচ্ছ প্রবণতা রয়েছে যা আমরা সনাক্ত করেছি যা মহামারীর কারণে ত্বরান্বিত হচ্ছে বা আরো শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
‘কোভিড-১৯ দীর্ঘস্থায়ী অনুমানকে ঝাঁকি দিয়েছে’ : প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কোভিড-১৯ স্থিতিস্থাপকতা এবং অভিযোজন সম্পর্কে দীর্ঘকালীন অনুমানকে ঝাঁকি দিয়েছে এবং অর্থনীতি, শাসন, ভ‚-রাজনীতি এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। দস্তাবেজটি জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রেই উদ্বেগের কারণ খুঁজে পেয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আবহাওয়া পরিবর্তন ও রোগসহ সমস্যাগুলো সমাধান করার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এটি নতুন উত্তেজনাও বাড়িয়ে তুলতে পারে’। প্রতিবেদনে সরকার ও সংস্থাগুলোর ওপর আস্থা হ্রাস এবং সাধারণ জনগণের আরো জ্ঞানবান ও শিক্ষিত অংশের মধ্যে ‘আস্থার ব্যবধান’ সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Mohammad Sultan ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৮ এএম says : 1
বাংলাদেশে ২০২৪ সালে আমেরিকা কে পিছনে ফেলবে। এটা ছাত্রলীগের অঙ্গিকার।
Total Reply(1)
Harunur Rashid ১১ এপ্রিল, ২০২১, ৭:০৭ এএম says : 0
Good one!
Md Abu Hanif ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৮ এএম says : 0
বাংলাদেশের খবর কি
Total Reply(0)
AB Anas ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 1
এদিকে বাংলাদেশ আগামি ২০৪০ এর ভিতর ধর্ষণে প্রথম হতে যাচ্ছে!
Total Reply(0)
বদরুল সজিব ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
ইনশায়াল্লাহ, আমরাও এগিয়ে যাবো।
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 1
পাকিস্তানের জন্য শুভকামনা। অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাক সেই প্রত্যাশা।
Total Reply(0)
হাদী উজ্জামান ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১:০০ এএম says : 0
এই নিউজ দেখে তো ভারতীয়দের ফেটে যাবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন