শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহবান ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কটের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কটের শান্তিপ‚র্ণ সমাধানের আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি সম্মান জানিয়ে অবশ্যই এ সঙ্কটের শান্তিপ‚র্ণ সমাধান করতে হবে। তুরস্কের বসফরাসের মধ্যদিয়ে মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো যাত্রা শুরুর প্রেক্ষাপটে ইস্তাম্বুলে শনিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তুরস্ক কৃষ্ণ সাগরকে শান্তি ও সহযোগিতাপ‚র্ণ সাগর হিসেবে নিশ্চিত করতে চায়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে সাথে নিয়ে এরদোগান বলেন, আমরা আমাদের অভিন্ন অঞ্চলে কোনো উত্তেজনা বাড়াতে চাই না। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিক আইন ও ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখন্ডতার ওপর ভিত্তি করে বর্তমান সঙ্কটের শান্তিপ‚র্ণ সমাধান সম্ভব। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী ও কিয়েভের সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানে স¤প্রতি রাশিয়া হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোয় ইউক্রেন ও মার্কিন কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে তুরস্ক শুক্রবার এক ঘোষণায় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বসফরাসের মধ্য দিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন সীমান্তবর্তী কৃষ্ণ সাগরে দুটি যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে। ইউক্রেনের সমর্থনে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজগুলো নিয়মিতই এ অঞ্চলে টহল দিয়ে থাকে। এরদোগান আরো বলেছেন, সঙ্কট সমাধানে তুরস্ক সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। জেলেনস্কি বলেন, আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব পুনঃস্থাপনে তুরস্কের সহযোগিতা গুরুত্বপ‚র্ণ। খবরে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই তুরস্ক সফর করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির জেলেনস্কি। গত শনিবার সেখানে তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। বৈঠকে এরদোগান ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তের নিকটবর্তী উত্তেজনা সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করার আহবান জানিয়ে বলেন, তুরস্কের প্রাথমিক লক্ষ্য কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলকে শান্তির অববাহিকা করা। “প‚র্ব ইউক্রেনের উত্তেজনা আন্তর্জাতিক আইন এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখন্ডতার সাথে মিল রেখে সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপ‚র্ণভাবে সমাধান করা যেতে পারে। কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলকে শান্তির অববাহিকা হিসাবে গড়ে তোলা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য”। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের ফোনালাপের পরদিন তুরস্ক সফর করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ-পরিস্থিতির মধ্যে তুরস্ক আপাতত কোনো পক্ষেই যাচ্ছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট এ সমস্যায় মধ্যস্থতাকারীর ভ‚মিকা নিতে পারেন। এরদোগান বলেছেন, যুদ্ধ সমাধান আনবে না, আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান হতে পারে। রুশপন্থি গেরিলাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দনবাস এলাকা নিয়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইউক্রেনের প‚র্ব সীমান্তের কাছে রাশিয়া সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে। এছাড়া কিয়েভকে প‚র্ণাঙ্গ যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো। ইস্তাম্বুল বৈঠকে এরদোগান এবং জেলেনস্কি শুল্কমুক্ত বাণিজ্য, পর্যটন ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠকের পর মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি চুক্তি সই হয়। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যখন সামরিক উত্তেজনা চলছে, তখন তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে থাকা বসফরাস প্রণালী ব্যবহার করে দুটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ কৃষ্ণ সাগরে পৌঁছেছে। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৪ মে পর্যন্ত কৃষ্ণসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ দুটি অবস্থান করবে। শুক্রবার রাতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে ফোন করেন এবং ইউক্রেন সংকট ও কৃষ্ণসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। টেলিফোন আলাপে রুশ প্রেসিডেন্টকে এরদোগান আশ্বস্ত করেন, ইউক্রেনের সঙ্গে সহযোগিতার অর্থ এই নয় যে, আঙ্কারা মস্কোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কোনো পক্ষ না নিয়ে তুরস্ক এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবে হিসেবে ভ‚মিকা পালনের চেষ্টা করছে। আনাদোলু, রয়টার্স, আরটি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন