শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গরিবদের সহায়তা দেয়াই লকডাউনে বড় চ্যালেঞ্জ

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বাংলাদেশকে মে মাসে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেবে কোভ্যাক্স

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাংলাদেশের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ আছে। এ ধরনের অনিশ্চয়তা কতটা দীর্ঘায়িত হয়, এর ওপর অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে। লকডাউনের মতো কঠোর বিধিনিষেধে গরিব মানুষকে সহায়তা করাই বড় চ্যালেঞ্জ। গরিব মানুষকে চিহ্নিত করে তাঁদের সুরক্ষা দিতে হবে। এ ধরনের বিধিনিষেধে গরিব মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বার্নার্ড হেভেন গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রকাশ উপলক্ষে ভার্চ্যুয়ালি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বার্নার্ড হেভেন প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। প্রবৃদ্ধির বৃদ্ধি ও কমার ব্যাপারটি তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। প্রথমত, টিকাদান কর্মসূচির গতি-প্রকৃতি; দ্বিতীয়ত, চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ; তৃতীয়ত, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কতটা হয়-এই বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করেই বিশ্বব্যাংক প্রবৃদ্ধির ন্য‚নতম ও সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করেছে।
তাহলে বাংলাদেশের কী করা উচিত? এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, সবুজ, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির কৌশল ঠিক করতে হবে। করোনাকালে চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে সচল থাকা সম্ভব হবে। এ ছাড়া স্থানীয় সরবরাহব্যবস্থা আধুনিক করতে হবে। মার্সি টেম্বন আরও বলেন, লকডাউনের মতো কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হওয়ার অতীতে দেখা গেছে, বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিক খাতের মানুষ সবচেয়ে বেশি কাজ হারিয়েছে। এমন গরিব মানুষকে সুরক্ষা দিতে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি নগদ সহায়তা নিশ্চিত করা দরকার। তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যে বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের টিম কাজ করছে। তবে বাজেট সহায়তা প্রদানের বিষয়টি নির্ভর করে বাংলাদেশ আর্থিক খাতে কী ধরনের সংস্কার করছে, সেটার ওপর।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, করোনার কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা সত্তে¡ও বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি ইতিবাচক। বাংলাদেশের অর্থনীতির অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠা নির্ভর করছে কত দ্রুত ব্যাপকহারে টিকাদান নিশ্চিত করা যাবে তার ওপর। এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বিশ্ব ব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনার প্রথম ধাক্কা সামাল দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রফতানি, ভালো রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং চলমান টিকাদান কার্যক্রমের জন্য করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো করছে। যদিও সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতিতে ব্যাপক অনিশ্চয়তা আছে। চলতি অর্থবছরে প্রথম ছয় মাসে (গত জুলাই-জানুয়ারি) ঢাকা ও চট্টগ্রামের শ্রমবাজারে আবার চাঞ্চল্য এসেছে, অনেকেই কাজে ফিরতে শুরু করেছে।
বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুষ্ঠুভাবে টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গড়া জোট কোভ্যাক্স থেকে বাংলাদেশ করোনা সংকট মোকাবিলায় মে মাসেই ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকা পাবে বলে ‘বাংলাদেশ আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানানো হয়। মার্সি টেম্বন বলেন, টিকা প্রাপ্তি নিয়ে বৈশ্বিকভাবে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে বাংলাদেশ কোভ্যাক্স থেকে খুব শিগগিরই টিকা পাবে। বাংলাদেশ সরকারের টিকা কিনতে অর্থের কোনো সমস্যা নেই। বিশ্বব্যাংকও ৫০ কোটি ডলার দিতে যাচ্ছে যা দিয়ে দেশের তিন ভাগ মানুষের জন্য টিকা কেনা যাবে। এছাড়া বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স’র সঙ্গে বিশ্বব্যাংকও রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি রফতানি, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও চলমান টিকাদান কর্মসূচির কারণেই হচ্ছে। কোভিড-১৯ এর কারণে তৈরি অনিশ্চয়তা সত্তে¡ও বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি ভালো। বার্নার্ড হ্যাভেন বলেন, করোনার কারণে বৈশ্বিক মন্দা তৈরি করেছে। অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরিবারগুলোকে সুরক্ষা দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে কাঠামোগত সংস্কার জরুরি। যাতে চলমান সংকট দ্রæত কাটিয়ে উঠতে পারি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
md salam ১৩ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৯ এএম says : 0
লকডাউনের সময়ই গরিবের ত্রাণ আওয়ামীলীগ এর লোক জন চুরি করে নিয়ে গেছে তাদেরকে গ্রেফতার করে দুই এক মাস পর ছেড়ে দিয়েছে এবারো তাই হবে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন