সিরাজগঞ্জ জেলার নয়টি উপজেলার অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট বড় যাত্রী পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা গাদাগাদি করে নেয়া হচ্ছে যাত্রী। প্রতি সিটে দুইজনের স্থলে মাঝখানে টুল দিয়ে তিনজন করে যাত্রী নেয়া হচ্ছে। বাস মিনিবাস, অটোরিক্সা, সিএনজি, ভটভটি কিংবা লেগুনাতেও জীবাণুনাশকের ব্যবস্থাতো নেই বরং উল্লাপাড়া শাহজাদপুর হতে লেগুনাতে কোনঠাসা করে যাত্রী নেবার পরও ছাদেও যাত্রী বহন করা হচ্ছে। প্রতিটি রুটে ভাড়া দুই থেকে তিন গুণ। কোন কোন ক্ষেত্রে চারগুণ বেশি ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের পকেট ফাঁকা করলেও এসব দেখার যেন কেউ নেই। এখানেই শেষ নয় মূল বাসস্টপেজের অদূরে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে মালপত্র নিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের আরও বেশি ভাড়া দিয়ে অন্য কোন বাহনে রিকশায় পৌঁছাতে হচ্ছে। মরার ওপর খাড়ার ঘাঁয়ের মতো এসব যাত্রীদের চরম দূর্ভোগে পড়ে তাদের যেন নাভিশ্বাস বইছে। গতকাল সোমবার সরেজমিনে ঘুরে এসব চিত্র চোখে পড়ে। জানা যায়, সিরাজগঞ্জ শহর থেকে সিরাজগঞ্জ রোড পর্যন্ত ২০ টাকা ভাড়া এখন ৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে। ২০ টাকার ভাড়া ৬০% বৃদ্ধি করে ৩২ টাকা হলে বাস কন্ডাটাররা তা মানছেন না। বিভিন্ন পরিবহন সিরাজগঞ্জ শহর থেকে ছাড়ার পূর্বেই দুই সিটে যাত্রী নিয়ে মাঝপথে টুল বসিয়ে গাদাগাদি করে যাত্রী তুলছে। ভাড়াও নিচ্ছে তিনগুণ বেশি। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ রোডে কর্তব্যরত ট্্রাফিক জাহিদুলকে জিজ্ঞেস করা হলে সে জানায় আমরা তো রোডে ডিউটি করছি। এ্যারেষ্ট্রোকেট হোটেলের আগে কি করছে সেটা তো দেখতে পারছি না। অথচ এ্যারেষ্ট্রোকেট সন্মুখভাগেই হাইওয়ে থানা অবস্থিত। উল্লাপাড়া রুটে লেগুনাতে ছাদে কেন যাত্রী নিচ্ছে এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন রুটে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে দুই তিন গুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক সিএনজি চালক জানায়, প্রতি ট্রিপে ৫০ টাকা করে ট্রাফিক পুলিশকে দিতে হয়। এ ব্যাপারে সিএনজি মালিক সমিতির সাফ জবাব এসব কথা ঠিক নয়। বাস-মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, এসব কোন ঘটনা আমাদের জানা নেই। যারা করছে তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা দায়িত্ব নিয়ে করছে। আমাদের কথা না মানলে তাদের কোন বিপদে আমরা যাব না। সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ সকল রুটে একই অবস্থা বিরাজমান। কেউ কারও দায়িত্ব স্বীকার করছে না। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ট্রাক ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ রোডে কথা হলো পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানার মান্নানের সাথে সে জানায়, তারা বারোজন শ্রমিক ১৭০০০ হাজার টাকায় ট্রাক ভাড়া করে যাচ্ছে। ঢাকায় কঠোর লকডাউন থাকায়। খাবার ব্যবস্থা নেই কাজ নেই। তাই বাধ্য হয়েই সবাই মিলে চলে এলাম।
এদিকে সকাল ৮-৯টার দিকে যমুনা বহুমুখী সেতুর পশ্চিম অংশের নলক পর্যন্ত ব্রিজ পর্যন্ত ট্রাকের জ্যাম বাধে। প্রতি ট্রাকেই যাত্রী পরিবহনের দৃশ্য চোখে পড়ে। কেউ শুধু যাত্রী নিয়ে আসছে। কোন কোন ট্রাক আবার মালামালের সাথে যাত্রী বহন করছে। সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে পথ চললেও দায়িত্ব ও কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখেও যেন না দেখার ভান করছে। ফলে পকেট ফাঁকা হচ্ছে। আর দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রী সাধারণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন