‘কঠোর লকাডাউনের’ আগে তীব্র যানজট এবং জনজটে বেহাল বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। মহানগরীর অলিগলি থেকে শুরু করে সড়ক-মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ। চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে কন্টেইনার ও আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের তীব্র জট চলছে। এ জট বিস্তৃত হয়েছে বন্দরের আশপাশের সড়ক থেকে শুরু করে দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পর্যন্ত। আন্তঃজেলার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন রুটে বাস চলছে। নগরী ছাড়ছে হাজার হাজার মানুষ। তবে কল-কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্তে এবার গার্মেন্টস শ্রমিকসহ কল-কারখানার শ্রমিকরা নগরী ছাড়ছেন না।
আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে এক সপ্তাহের ‘কঠোর লকডাউন।’ সরকারি প্রজ্ঞাপনে আগামী সাত দিনের জন্য গণপরিবহন, মার্কেট, বিপণি বিতান বন্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এমন ঘোষণা আসবে জেনেই গত রোববার থেকেই মহানগরী ছাড়তে শুরু করে লোকজন। সেইসাথে নগরবাসী ঈদের এবং নববর্ষের বাজারসহ কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। হাটবাজার এবং মার্কেট, বিপণি কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড়। গতকাল মার্কেট এলাকায় মানুষের জট ছিল তীব্র।
চট্টগ্রাম বন্দর লকডাউনেরও সচল রয়েছে। বন্দর এলাকায় আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী যানবাহনের তীব্র জটের সৃষ্টি হয়েছে। কর্ণফুলীর ১৬টি ঘাটে পণ্য ওঠানামা এবং পরিবহন পুরোদমে চলছে। রোজার মাত্র একদিন আগে পুরোদমে সচল দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ। এসব বাণিজ্যিক এলাকাকে ঘিরে মালামাল বোঝাই ভারী যানবাহনে তীব্র জটের সৃষ্টি হয়েছে। নৌপথেও চলছে পণ্য পরিবহন।
লকডাউন থেকে কঠোর লকডাউনের আগে নগরীতে মানুষের কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে। গতকাল মহানগরীর প্রতিটি এলাকায় ছিল মানুষের ভিড়, জটলা। সেইসাথে তীব্র যানজট। বিশেষ করে হাটবাজার ও মার্কেট, বিপণি কেন্দ্র এলাকায় তীব্র জটের সৃষ্টি হয়। রোজার বাজারের পাশাপাশি নগরবাসী ঈদের কেনাকাটাও সেরে নিচ্ছেন। তার সাথে যোগ হয়েছে বাংলা নববর্ষের কেনাকাটা। মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মার্কেট, বিপণি কেন্দ্রে। মার্কটের প্রতিটি গেইট থেকে শুরু করে সড়ক, অলিগলিতে মানুষের হুড়োহুড়ি। শারীরিক দূরত্ব বলে কোনকিছুর বালাই নেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মার্কেট খোলা থাকায় আজ মঙ্গলবারও ক্রেতাদের এই স্রোত অব্যাহত থাকবে। ব্যাংকগুলোর সামনে ছিল গ্রাহকের দীর্ঘ লাইন। গতকাল ১টা পর্যন্ত লেনদেনের সময় বর্ধিত করা হলেও অধিকাংশ ব্যাংকে অতিরিক্ত গ্রাহক থাকায় ২টার পরেও লেনদেন হয়। সামনের লকডাউনে ব্যাংক বন্ধ থাকবে এমন ঘোষণায় ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক পড়ে। সরকারি অফিস, আদালত বন্ধ থাকায় লোকজন মহানগরী ছাড়ছে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। কোথাও ছিল না স্বাস্থ্যবিধি।
গণপরিবহনে চলছে চরম বিশৃঙ্খলা। ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার বদলে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হলেও যাত্রী তোলা হচ্ছে ঠাসাঠাসি করে। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা বলছেন, লকডাউনের নামে সাধারণ মানুষকে সঙ্কটে ফেলে দেয়া হয়েছে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীদের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন