রমজান ও লকডাউনকে সামনে রেখে খুলনার বাজারে আগুন নিত্য দ্রব্য পণ্যে। যে কারণে ভিড় বেড়েছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্য বিক্রির ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রগুলোতে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ছাড়াও স্বচ্ছল অনেকেই টিসিবি’র পণ্য কিনছেন। তবে বেশির ভাগ ভোক্তাদের অভিযোগ, চাহিদা অনুযায়ী টিসিবি’র পণ্য মিলছে না। দীর্ঘসময়ে লাইনে থাকার পরও অনেক সময় পণ্য না নিয়েই চলে আসতে হচ্ছে। এদিকে টিসিবি’র পণ্য কেনার সময় সামাজিক দূরত্ব মানছে না ভোক্তারা। যার কারণে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির আশংকাও বাড়ছে।
জানা যায়, গত ১ এপ্রিল থেকে এ অঞ্চলে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম জোরদার করা হয়। মহানগরীর দৌলতপুর, খালিশপুর, শিববাড়ি মোড়, নিরালা মোড়, জেলা পরিষদ এলাকা, সাতরাস্তার মোড়সহ প্রায় ১০টি স্থানে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করছে। প্রত্যেকটি বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রচুর ভিড়। সব শ্রেণী পেশার মানুষ টিসিবি’র পণ্য কিনতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ভোক্তার মুখে মাস্ক থাকলেও নেই কোন সামাজিক দূরত্ব।
এদিকে একাধিক ভোক্তার সাথে কথা বললে তারা জানান, পণ্য কিনতে এসে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। বিশেষ করে টিসিবি’র পণ্য একই স্থানে বিক্রি করার কারণে সব এলাকার ভোক্তারা এর সুবিধা পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। ভোক্তাদের দাবি, নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ট্রাকগুলো পর্যায়ক্রমে থামানো হলে সব শ্রেণীর মানুষ এটার সুফল পাবে।
টিসিবির সূত্র জানায়, গত বছরের রমজান ও লকডাউনের সময় আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ১ হাজার ৮৩৩ টন চিনি, ৩৫৪ টন মুসুরের ডাল, ১ হাজার ৮শ’ টন সয়াবিন তেল, ৬২৭ টন ছোলা, ২৫ টন খেজুর এবং ১১৪ টন পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বছর টিসিবি’র পণ্য পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। যা প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি।
টিসিবি’র খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান আনিসুর রহমান জানান, গত রমজানের তুলনায় এবার দ্বিগুণ পণ্য মজুদ আছে। ভোক্তাদের কোন সমস্যা হবে না। তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব রেখে পণ্য বিক্রির জন্য ডিলারদেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি সভা হয়েছে। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, প্রয়োজনে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে টিসিবির ১০টি ট্রাক ঘুরে ঘুরে পণ্য বিক্রি করবে। এতে করে সকল এলাকার মানুষ পণ্য কিনতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি ট্রাকে ৭শ’ কেজি চিনি, ৩শ’ কেজি ডাল, ১ হাজার দুইশ’ লিটার তেল, ১ টন ছোলা, ১শ’ কেজি খেজুর এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজ প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে। এতে করে কোন ভোক্তা পণ্য না নিয়ে ফেরত আসার সম্ভাবনা কম। কেউ যদি পণ্য বিক্রির শেষ সময় লাইনে দাঁড়ায় সেক্ষেত্রে তো কিছু করার নেই। তিনি আরও বলেন, পণ্যের মজুদ পর্যাপ্ত তাই ট্রাক বৃদ্ধিও বিষয়ে প্রধান কার্যালয় থেকে নির্দেশনা পেলেই বিক্রয় কেন্দ্র বাড়ানো যেতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন