তুরস্কের আকিঞ্জি ড্রোনের তৃতীয় প্রটোটাইপ মডেল সর্বশেষ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। সোমবার ড্রোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বায়কার মাকিনার প্রধান প্রযুক্তিবিদ সেলচুক বায়ারাকতার তুর্কি দৈনিক ডেইলি সাবাহকে এই তথ্য জানান। সৈলচুক বায়রাকতার জানান, নতুন ড্রোনটি মধ্যম উচ্চতার শনাক্তকরণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তিনি আরো জানান, সম্প‚র্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ সামরিক ড্রোনের গণ-উৎপাদন শিগগির শুরু করা হবে। ডৈইলি সাবাহর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বছরই তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে আকিঞ্জি ড্রোন সরবরাহের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ড্রৈান প্রযুক্তি ও সরবরাহের ক্ষেত্রে তুরস্ক বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় দেশে পরিণত হয়েছে। সিরিয়া, লিবিয়া ও আজাররাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে বিতর্কিত ভূখন্ড নাগরনো-কারাবাখে তুর্কি ড্রোন তার সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছে। এছাড়া কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) মোকাবেলায় দেশের ভেতরে ও বাইরে সফলভাবে তুর্কি ড্রোন অভিযান চালিয়ে আসছে। স¤প্রতি তুরস্কের ড্রোন ইউক্রেনের ডানবাস অঞ্চল পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের সামরিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সম্ভাবনা প্রবল হয়েছে। সৈামবার রাশিয়া তুরস্ককে সতর্ক করে বলেছে, তুরস্ক যেন ইউক্রেনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে দেশটিকে প্ররোচিত না করে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান সংলাপের মাধ্যমে ইউক্রেন-রাশিয়ার সীমান্তের উত্তেজনা মিটিয়ে ফেলতে আহবান জানিয়েছেন। কৃষ্ণসাগর অঞ্চলকে শান্তির অববাহিকায় রূপ দেওয়ায় তুরস্কের উদ্দেশ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলিমার জিলনস্কির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে পূর্ব ইউক্রেনের উত্তেজনা কমিয়ে আনা যাবে। ইউক্রেনের ভূখন্ডগত অখন্ডতা ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে এই সমাধান বের করতে হবে। রাশিয়ার মূল ভূখন্ডেরর সঙ্গে ক্রিমিয়াকে একীভ‚ত করায় স্বীকৃতি দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক। এরদোগান বলেন, ক্রিমিয়ার ভ‚মিতে ইউক্রেনের উদ্যোগে তুরস্কের সমর্থন রয়েছে। এদিকে, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি দেশকে আহবান জানিয়েছে রাশিয়া। এমন এক সময় এই আহবান এসেছে, যখন উত্তর ইউক্রেনে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, তুরস্কসহ যেসব দেশের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি, তাদেরকে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দিচ্ছি। তারা যাতে কিয়েভ সরকারের ক্রমাগত যুদ্ধংদেহী বিবৃতিগুলো পর্যালোচনা করেন। এই সামরিক আকাক্সক্ষাকে উৎসাহিতকরণ বন্ধ করতে তাদের অনুরোধ করা হচ্ছে। ইউক্রেনকে যুদ্ধ ড্রোন সরবরাহ করছে তুরস্ক। ২০১৯ সালে দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি হয়েছিল। অর্ধেকের মতো ড্রোন ইতিমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। কিয়েভের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, গোলাবারুদ, টহল নৌকা নির্মাণসহ যুদ্ধ ড্রোন সরবরাহে আরও চুক্তি হয়েছে সই হয়েছে গত ডিসেম্বরে। কৃষ্ণসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনেরও সমালোচনা করেন লাভরভ। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে কী চায়, সেই প্রশ্নের জবাব মিলছে না বলে তিনি দাবি করেন। ডেইলি সাবাহ, আহভাল, আনাদোলু, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন