শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

প্রচন্ড রোদেও লম্বা লাইন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

টিসিবি’র চাল পেতে তীব্র রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে নিম্নআয়ের মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার, মধ্যদুপুর। রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের আজিমপুর শাখার বিপরীত দিকের রাস্তায় খোলাবাজারের (ওএমএস) চাল বিক্রির ট্রাকের সামনে নারী ও পুরুষের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়লো। ট্রাকের সামনে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ লেখা থাকলেও উপস্থিত অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা গেল না। আবার যাদের মুখে মাস্ক আছে তারা থুতনির নীচে নামিয়ে রেখেছেন। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মানা বা সামাজিক দূরত্বতো দূরের কথা, লাইন ভেঙে যেন কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সূচ পরিমান ফাঁকা না রেখে গায়ে গা ঘেঁষে সবাই সিরিয়াল আসার অপেক্ষায় রয়েছেন। চৈত্রের শেষ দুপুরের প্রচন্ড সূর্যতাপ থেকে রক্ষা পেতে তাদের কেউ ছাতা মাথায়, কেউ ব্যাগ মাথায়, আবার কেউবা শাড়ির আচল দিয়ে গরম থেকে রক্ষার চেষ্টা করছিলেন। উপস্থিত সকলকে গরমে ঘামতে দেখা যায়। তবে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে চাল হাতে পেয়ে মুখে হাসি ফোটে তাদের।

ন্যায্য মূলে চাল সংগ্রহ করতে আসা উপস্থিত নারী ও পুরুষের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, তারা সকলেই নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ রিকশা-ভ্যানচালক, কেউ বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন; আবার কেউ ফুটপাতে ফলমূল ও শাকসবজি বিক্রি করেন। ১৪ এপ্রিল বুধবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউনে তাদের আয়-রোজগার থাকবে না। দুবেলা দুমুঠো ভাত খাওয়ার জন্য তারা প্রতি কেজি ৩০ টাকা মূল্যে ওএমএসের চাল কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সকাল থেকেই প্রচন্ড ভিড়। ফলে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করেও অনেকে চাল পাচ্ছেন না বলে জানান। স্থানীয় রসুলবাগের বাসিন্দা রিকশাচালক হরমুজ আলী জানান, রিকশা চালিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসারের খরচ চালান। ১৪ এপ্রিল থেকে সরকার ঘোষিত লকডাউন শুরু হবে। রিকশা চলবে কিনা জানেন না। গত কয়েকদিন ঢিলেঢালা লকডাউনে যা আয় হয়েছে সেখান থেকে জমানো কিছু টাকা দিয়ে পাঁচ কেজি চাল কিনে নিচ্ছেন। বাসা থেকে মেয়েকে ডেকে এনে লাইনে দাঁড় করিয়ে আরো পাঁচ কেজিসহ ১০ কেজি চাল কিনেছেন। অন্তত লবণ দিয়ে ভাতটা যেন খেয়ে থাকতে পারেন তাই আগাম কিনে রাখছেন বলে জানান।

ওএমএস চাল বিক্রেতা আক্তার জানান, ওএমএসের ৩০টাকা কেজির এ চালের চাহিদা ব্যাপক। সকাল থেকে চাল মেপে ব্যস্ততায় দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছেন না। লাইনে দাঁড়ানো একেকজনকে পাঁচ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। তবে অভাবী এ মানুষগুলোর অনেকেই পরিবারের একাধিক সদস্যেকে লাইনে দাঁড় করিয়ে চাল কিনে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। মতিঝিলে ওএমএসের চাল নিতে আসা শেফালি বেগম বলেন, ফকিরাপুল মেসে কাজ করি। মেসের সদস্যরা সকলেই বাড়ি চলে গেছে। তাই নিজের খাওয়ার জন্য এই চাল নিতে এসেছি। দুই ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার চাল পেয়েছি।
রাজধানীর তোফখানা রোড, যাত্রাবাড়ি, গুলিস্তান এলাকায় দেখা গেছে ওএমএসের চালের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা অপেক্ষা করছেন।

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন