আরবি ইসলামী বর্ষ পঞ্জিকার বারটি মাসের মধ্যে রমজান মাসটি একটি বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। এই মাস সম্পর্কে আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : ‘রমজান মাস এমন একটি মাস যে, এ মাসেই সর্বশেষ আসমানী কিতাব আল কোরআন নাযিল হয়েছে।’ (সুরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৮৫)। তাই, এ মাসের আগমনের সাথে সাথেই বিশ্ব মুসলিম মিল্লাতের জীবন ও জগতের সকল অঙ্গনে একটা বিরাট প্রেরণা ও চাঞ্চল্যের দৃষ্টি হয়। তাদের হৃদয়ের তারে তারে প্রাণের শোণিত ধারে প্রকম্পিত হয়ে উঠে নেকী ও পূণ্যে লাভের তীব্র প্রভঞ্জন। একদিকে রোজা রাখার তীব্র আকাক্সক্ষা এবং অপরদিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নিষ্কৃতির শুভ সংবাদ প্রতিটি মুমিনের অন্তরকেই উদ্বেল করে তোলে।
এই মাসে শুধুমাত্র আল কোরআন নাযিল হয়েছে তাই নয়, অন্যান্য বহু আসমানী কিতাব এ মাসেই নাযিল হয়েছিল। এতদপ্রসঙ্গে পিয়ারা নবী মোহাম্মদ মোস্তাফা আহমদ মুজতাবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন : হজরত ইব্রাহিম (আ:) এর ওপর সহীফাসমূহ রমজান মাসের প্রথম তারিখে নাযিল হয়েছে। তাওরাত কিতাব মাহে রমজানের ছয় তারিখ দিবাগত রাতে নাযিল হয়েছে। এই মাসের তের তারিখে ইঞ্জিল কিতাব নাযিল হয়েছে। (মোসনাদে আহমাদ, আত্ তাবরানী)।
এতে করে স্পষ্টতই বুঝা যায় যে, আসমানী কিতাবসমূহ নাযিল হওয়ার সাথে মাহে রমজানের একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। যার কারণে এই মাসের রোজাকে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত উম্মতে মোহাম্মাদীর ওপর ফরজ করে দিয়েছেন। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : ‘তোমাদের মধ্যে যে লোক এই লোক এই মাসটি পাবে, সে যেন অবশ্যই এই মাসের সিয়াম পালন করে।’ (সূরা-আল বাকারাহ : আয়াত : ১৮৫)।
কিন্তু এই মাসের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে, কিংবা সফরে থাকলে, পরবর্তী মাসে এর কাযা আদায় করা যাবে। আর রোজা রাখা যার জন্য কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়ায়, যা শরিয়তের দৃষ্টিতে ওজর বলে গণ্য, যেমন অতিবার্ধক্য চিররোগ ইত্যাদি। তদবস্থায় রোজার পরিবর্তে একজন অভাবগ্রস্তকে বা দরিদ্রকে দু’বেলা পেট ভরে খেতে দেয়া আবশ্যক। একে আল কোরআনের ভাষায় ‘কিদয়া’ বলা হয়।
আল্লাহ পাক আমাদেরকে মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার তৌফিক দান করুন- আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন