শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চ্যালেঞ্জে অর্থনীতি

আট দিনের লকডাউন শুরু চালু থাকবে সকল শিল্প-কারখানা চলবে ব্যাংকিং কার্যক্রম ও শেয়ারবাজার ভরসা রেমিট্যান্স-রফতানি নিয়েও শঙ্কা

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৭ এএম

মহামারী করোনায় বিপর্যস্ত দেশ। গত প্রায় ১ মাস থেকে করোনা সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রথম দফায় মানুষের চলাচল ও কার্যক্রমে বিধি-নিষেধ আরোপের পর আজ থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। তবে এই সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য সংকুচিত হলেও অর্থনীতি সচল রাখতে চায় সরকার। গত বছর করোনার প্রথম ধাক্কা সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে বড় ভ‚মিকা রেখেছিল রফতানি খাত ও রেমিট্যান্স। এ লক্ষ্যে লকডাউনের মধ্যেই দেশের শিল্প-কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রাখা হচ্ছে। যদিও এ বছর রেমিট্যান্স আগের মতো আশানুরুপ হবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের মধ্যে। এদিকে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা ও শেয়ারবাজারের লেনদেন চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, বন্দরগুলোর (স্থল, নদী ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন লকডাউনে সরকারি নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভ‚ত থাকবে। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকারের সর্বাত্মক লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতির ওপর আরো চাপ বাড়বে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।

আটদিনের কঠোর লকডাউন আজ থেকে শুরু হচ্ছে। এর আগে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, লকডাউনে বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি সকল অফিস। বন্ধ থাকবে বাস- ট্রেনসহ সকল প্রকার গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট)। শপিংমলসহ অন্যান্য দোকানসমূহও বন্ধ থাকবে। তবে নির্ধারিত সময় কাঁচাবাজার, খাবার হোটেল খোলা থাকবে। আর অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাড়ি থেকে বের হতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই আদেশ অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে। তবে এই সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য সংকুচিত হলেও অর্থনীতি সচল রাখতে বেশ কিছু প্রদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, বন্দরগুলোর (স্থল, নদী ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন লকডাউনে সরকারি নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভ‚ত থাকবে। লকডাউনের মধ্যেই দেশের শিল্প-কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রাখা হচ্ছে। সীমিত পরিসরে চলবে ব্যাংকিং সেবা। জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক খোলার অনুরোধ জানিয়ে গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবকে। চিঠিতে বলা হয়, ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারির জন্য আদেশক্রমে অনুরোধ জানানো হল। এরপর কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যাংক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গতকাল সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত নতুন সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত দৈনিক ব্যাংকিং লেনদেন কর্মসূচি সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো। তবে ব্যাংকের আনুষঙ্গিক কাজ চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। এদিকে ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ব্যাংকের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার থেকে আড়াই ঘণ্টা চলবে শেয়ারবাজারের লেনদেন। ব্যাংক খোলার সিদ্ধান্তের পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন চলবে।

এর আগে গত সোমবার সীমিত পরিসরে ব্যাংক কার্যক্রম চালু রাখতে থেকে পৃথক তিনটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একটি সার্কুলারে বলা হয়, সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলাকালে সাধারণভাবে সব তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এ সময়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে। এতে আরও বলা হয়, সমুদ্র, স্থল, বিমান বন্দর এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখা, উপ শাখা ও বুথগুলো খোলা রাখার বিষয়ে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এসব খাতে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে স্ব স্ব ব্যাংক প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়ে খোলা রাখতে পারবে। একই সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সীমিত সংখ্যক জনবল দ্বারা চালু রাখা যাবে।

এতে আরও বলা হয়, এটিএম কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহায়তায় সার্বক্ষণিকভাবে খোলা থাকবে। এ জন্য এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থের সরবরাহ রাখতে হবে। একই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সার্বক্ষণিকভাবে চালু রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর এক সার্কুলারে বলা হয়, লকডাউনের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ (চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, লবণ, চিনি, আদা, রসুন), পানি, শিশুখাদ্য ও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রী ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী স্বাস্থ্যবধি মেনে উৎপাদন, আমদানি, পণ্য খালাস, পণ্য পরিবহন, কুরিয়ার ব্যবস্থা এবং ওয়্যারহাউস কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আরও একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ও মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই সার্কুলারে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলাকালীন সাধারণ জনগণের অতি জরুরি প্রয়োজন ও অত্যবশ্যকীয় জরুরি পরিষেবা নিশ্চিত করতে দৈনন্দিন অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এটিএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিধিনিষেধ চলাকালীন এটিএম বুথগুলোকে সচল ও তাতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে এটিএম বুথ থেকে দিনে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা তোলা যাবে। আগে তোলা যেত ৫০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমেও ওই পরিমাণ টাকা স্থানান্তর করা যাবে।

এতে আরও বলা হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সাথে পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চালু রাখতে হবে। একই সঙ্গে এজেন্টদের কাছ থেকে গ্রাহকদের টাকা তোলার জন্য প্রয়োজনীয় নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার ঘোষিত সময়সীমা হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। ফলে ওই সময়ে এজেন্টদের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু থাকবে। তবে অ্যাপস বা মোবাইল ফোন সেটে এই সেবা সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে।

এদিকে টানা আটদিন ব্যাংক বন্ধের খবরে গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন শাখার বাইরে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। কার্যক্রম শুরুর আগেই বাইরে লাইনে দাঁড়ান অনেকে। নগদ টাকা তুলতে আসছেন গ্রাহকদের বড় অংশ। নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রাহককে ব্যাংকের ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। তাই অনেক শাখার বাইরে লাইন চলে এসেছে সড়ক পর্যন্ত। সেখানে শারীরিক দূরত্ব খুব একটা মানা হয়নি। তবে ব্যাংকের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সঙ্কটে এবারও ভরসা রফতানি-রেমিট্যান্স : করোনা মহামারির মধ্যে প্রবাসী আয়ে একের পর এক রেকর্ড হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই সাড়ে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এটি গত অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে ২ শতাংশ এবং একই সময়ের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ গত অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়েও বেশি রেমিট্যান্স এসেছে এই আট মাসে। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের মার্চ মাসে গত অর্থবছরের মার্চের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি রেমিট্যান্স বেড়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, নগদ প্রণোদনা, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখা ও হুন্ডি প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখছে। তবে এ বছর রেমিট্যান্স আশানুরুপ হবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। কারণ করোনা সঙ্কটের কারণে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা দেশে ফেরত এসেছেন। দেশে আসার আগে তারা তাদের হাতে থাকা সঞ্চয় নিয়ে আসেন। অনেককে ওই সময় প্রবাসের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে পুঁজি দেশে পাঠিয়ে দিতে হয়েছে। অনেকেই আবার চাকরি হারিয়ে নিজেদের জমা সব সঞ্চয় কিংবা বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে নিয়ে এসেছেন ওই সময়। এসব কারণে গত বছরের মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। পরবর্তী সময়ে প্রবাসীদের দেশে ফেরত আসার প্রবণতা যেমন কমেছে, আবার নতুন করে বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যাও কমেছে। অনেকে চাকরি হারিয়ে দেশে আসার পর আর নতুন করে বিদেশে যেতে পারছেন না। এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে এবং আগামীতে তা আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, রেমিট্যান্স বাড়ার পেছনের কারণ হলো- অনেক প্রবাসী করোনার কারণে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এসব প্রবাসীরা দেশে আসার আগে তাদের সঞ্চিত সব টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে গত বছর রেমিট্যান্স বেড়েছে। তবে সামনে দুর্দিন অপেক্ষা করছে। সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, আগামীতে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ার সম্ভবনা খুবই কম। কারণ অনেক প্রবাসী দেশে চলে এসেছেন। নতুন করে বিদেশগামীর সংখ্যাও কমে গেছে। এসব কারণে রেমিট্যান্স ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত কিছুদিন ধরে বাড়লেও এই ধারা বেশিদিন ধরে রাখা যাবে না।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রবাসীদের বড় একটি অংশ দেশে ফিরে আসার পর আর ফেরত যেতে পারেননি। নতুন করেও অনেকে বিদেশে যেতে পারছেন না। ফলে নতুন করে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ার সম্ভাবনা কম।

এদিকে করোনা মহামারীর মধ্যেও আরেক ভরসার নাম রফতানি আয়। যা তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে পণ্য রফতানি আয়ে বাংলাদেশ আগের একই সময়ের চেয়ে সামান্য পিছিয়ে রয়েছে। তবে করোনা অভিঘাতে রফতানি কমার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই দেশের অর্থনীতির অন্যতম ভরসার নাম রফতানি আয় শঙ্কায় সংশ্লিষ্টরা।

রাজস্ব ও বিনিয়োগ বাড়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ : অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, রফতানি ও রেমিট্যান্সের পাশাপাশি এখন রাজস্ব ও বিনিয়োগ বাড়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ। লকডাউনে স্বল্প আয়ের মানুষের জীবিকা হুমকিতে পড়বে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারপারসন রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, প্রথম ধাক্কা এখনো কাটেনি এবং সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। দ্বিতীয় ধাক্কায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকায় অভিঘাত আরো বেশি পড়বে। প্রথম ধাক্কায় কিঞ্চিৎ সঞ্চয় ছিল তা ভাঙিয়ে সংসার চালিয়েছেন, আত্মীয়-স্বজনের সহায়তা নিয়েছিলেন অথবা জমি বিক্রি বা বন্ধক রেখেছিলেন। এখন কোথায় ধার পাবেন বা আগের ঋণই কিভাবে শোধ হবে-এমন এক অনিশ্চয়তার জীবনের মধ্যে নিপতিত হয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ। এদিকে করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাতে তৈরি পোশাক রফতানি এবং রেমিট্যান্স কমে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
।।শওকত আকবর।। ১৪ এপ্রিল, ২০২১, ৯:১৯ এএম says : 0
চ্যালেন্স অর্থ্যনীতি।হাসান সোহেল।ধন্যবাদ আপনাকে।তবে এরাই পদে পদে লান্চিত, বন্চিত,অবহেলিত।এদের নিয়ে কেউ ভাবেনা।এদের কষ্টার্জিত ও গায়ের ঘাম ফেলা অর্জিত অর্থে গাড়ি বাড়ি অট্রলিকা।আরাম আয়েশ ভোগবিলাশ।অথচ এরাই আজ চরম ভাবে অবহেলিত।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন