শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট: জরুরি না হলে বাসায় ফেরত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৩২ পিএম

রাজধানীর প্রায় প্রতিটি সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। ব্যারিকেডগুলোর সামনে দাঁড়াচ্ছেন ৪-৫ জন করে পুলিশ সদস্য। একজন গাড়ি থামাচ্ছেন, বাকিরা ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করছেন। কারণ যৌক্তিক হলে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর অতি জরুরি না হলে গাড়ি ঘুরিয়ে দিয়ে বাড়ি ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

এটি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের দেওয়া কঠোর বিধিনিষেধের আজ প্রথমদিন বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকালের চিত্র। তবে, একই সঙ্গে সরকারে জারি করা আগের বিধিনিষেধের সময় সড়কে যে পরিমাণ যানবাহন বা মানুষ দেখা গিয়েছিল, আজ সেই চিত্র নেই বললেই চলে।

পুরান ঢাকার বংশালের নর্থ-সাউথ রোড মোড় এবং বংশাল চৌরাস্তায় দুটি পুলিশি ব্যারিকেড রয়েছে। এই এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ। সড়কে যান চলাচল এবং সাধারণ মানুষের সংখ্যাও কম। তবে অল্প সংখ্যক মানুষ মাইক্রোবাস, রিকশা এবং মোটরসাইকেলে চলাচল করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বংশালে পুলিশ সদস্যরা ‘ঢাকা ওয়াসা’ স্টিকার লাগানো একটি মোটরসাইকেল থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মোটরসাইকেল আরোহী জরুরি প্রয়োজনে তার বোনের বাসা বাবুবাজার থেকে উত্তরখান যাওয়ার কথা পুলিশকে জানান। তবে তার যাওয়ার ‘কারণ’ পুলিশের জরুরি মনে না হওয়ায় তাকে উল্টোপথে ফেরত পাঠানো হয়।

বংশাল থানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, সকাল ৬টা থেকে আমরা সড়কে অবস্থান নিয়েছি। ৮টার পরপরই মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। অধিকাংশই হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলছেন। কেউ কেউ অনলাইনে পণ্য ডেলিভারির কথা বলে এলাকায় প্রবেশ করেছেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া কাউকেই চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।
যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া গিয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার আগের সড়কে পুলিশের অবস্থান চোখে পড়ে। সেখানে দেখা যায় ফ্লাইওভার ও এর নিচে দিয়ে সায়েদাবাদ, গুলিস্তান ও চানখারপুল যাওয়া প্রতিটি গাড়িকে আটকে চলাচলের কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে।

সড়কে দায়িত্বে থাকা যাত্রাবাড়ী থানার এএসআই সাত্তার বলেন, সবাইকে থামিয়ে প্রথমেই আমরা তাদের কাছে মুভমেন্ট পাস দেখতে চাচ্ছি। অল্প সংখ্যক লোক পাস দেখাতে পারছেন। অনেকে আবার পুলিশকে ‘কিসের পাস’, ‘কোথায় দেয় এই পাস’ ইত্যাদি প্রশ্ন করছেন। এছাড়াও কেউ কেউ পুলিশকে পাস দেখালেও পাসে উল্লেখিত কারণ আর তাদের মুখে বলা কারণের সঙ্গে কোনো মিল নেই।

তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির বাড়ি দনিয়া। তার মুভমেন্ট পাসে প্রয়োজনের জায়গায় ‘মুদি পণ্য কেনাকাটা’ উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ তিনি ঢাকা মেডিকেলে রোগী দেখতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এমন ঘটনার ক্ষেত্রে আমরা তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠাচ্ছি। তবে পুলিশ যথেষ্ট নমনীয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে বলেও জানালেন তিনি।
এদিকে, ব্যারিকেডের ছাড়াও রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। গুলিস্তানে প্রায় শতাধিক বাস দরজা বন্ধ অবস্থায় সড়কের দুইধারে রাখা আছে।

সরকারি বিধিনিষেধ মানার বিষয়ে বুধবার (১৪ এপ্রিল) পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, সরকার যে সব নির্দেশনা দিয়েছে তার আলোকেই পুলিশ কাজ করছে। এছাড়াও করোনাকালে দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের একটি সুলিখিত ও আন্তর্জাতিক মানের এসওপি (স্ট্যান্ডিং অপারেটিং প্রসিডিওর) রয়েছে। সেখানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, পুলিশের দায়িত্ব-কর্তব্য ও তা পালনের উপায়। সেই এসওপি অনুসরণ করে সরকারি নির্দেশনার আলোকে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ।

এর আগে ৫ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছিল। পরে তা আরও দুইদিন বাড়ানো হয়েছিল। তা অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়। তবে এ দফায় আজ থেকে জারি করা বিধিনিষেধে ‘অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকার এবং টিকা কার্ড নিয়ে টিকার জন্য যাওয়া) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে কাউকে ঘরের বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেন। যাদের একান্তই প্রয়োজন তাদের ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বের হতে বলেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
RAYHAN KOBIR MUKUL ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৩১ পিএম says : 0
গরিব বান্ধব হওয়া উচিত ছিল ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন