মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা

ইউক্রেন সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় রাশিয়া : ল্যাভরভ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৬ এএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কথিত হস্তক্ষেপের এবং বিদ্বেষপরায়ণ সাইবার কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগে রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্রের বরাতে সিএনএনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অবরোধ আরোপের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে। ওই ব্যক্তিদের একজন জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে কালোতালিকাভুক্ত করা হতে পারে, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ রুশ ক‚টনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণাও আসতে পারে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিকভাবে হোয়াইট হাউজ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোন মন্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যকার বিরাজমান শীতল সম্পর্ককে আরও নাজুক করে তুলবে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে পশ্চিমাদের স্নায়ুর পরীক্ষা নিচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্তৃত পরিসরের এই অবরোধ অংশত সাম্প্রতিক সাইবার হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সোলারউইন্ডস করপোরেশনের তৈরি করা সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ভেদ করার যে ঘটনা ঘটেছে তারই প্রতিক্রিয়ায় আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার; এই সাইবার হামলার জন্য রাশিয়া দায়ী বলে অভিযোগ তাদের। সাইবার হামলার ফলে হ্যাকাররা সোলারউইন্ডস করপোরেশনের পণ্য ব্যবহার করা অসংখ্য মার্কিন কোম্পানির এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্যে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রসফটের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ গত ডিসেম্বরে শনাক্ত হওয়া এই হামলাকে ‘বিশ্বে এ যাবৎ ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে স্পর্শকাতর হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন। মঙ্গলবার এক ফোনকলে বাইডেন পুতিনকে বলেছেন, নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ‘দৃঢ়’ পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। ফোনকলের বিষয়ে অবগত কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এই তথ্য দিয়েছে রয়টার্স। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, একসঙ্গে কাজ করার মতো ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে ‘তৃতীয় একটি দেশে’ বৈঠকে বসার জন্য পুতিনকে প্রস্তাব দিয়েছেন বাইডেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় রাশিয়া। এ ব্যাপারে মস্কো অঙ্গীকারাবদ্ধ। বুধবার অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই)-এর চেয়ারপারসনের সঙ্গে এক ফোনালাপে নিজ দেশের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি। সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার ব্যাপক সেনা সমাবেশের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো। এ ইস্যুতে পশ্চিমাদের ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে মস্কো। এর মধ্যেই বুধবার বিষয়টি নিয়ে সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ওএসসিই-এর বর্তমান চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা বলেন ল্যাভরভ। দুই নেতার এই ফোনালাপে ওএসসিই-কে পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে উঠে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের আহবান জানান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এমন সময়ে ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বললেন ল্যাভরভ যার একদিন আগেই এ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় সীমান্তে উত্তেজনার পারদ কমিয়ে আনতে রাশিয়ার প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাইডেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ফোনালাপে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো অবস্থানের কথা তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, দখলকৃত ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের সীমান্ত বরাবর হঠাৎ করে মস্কোর সেনা সমাবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। ওয়াশিংটন চায় রাশিয়া যেন সেখানে উত্তেজনার পারদ কমিয়ে আনে। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবেই মনে করছি যে, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কটা চ্যালেঞ্জের হবে। এদিকে ইউক্রেন সীমান্তে হাজার হাজার সেনা মোতায়েনের জন্য রাশিয়াক অভিযুক্ত করেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ। মস্কোর অবস্থানকে অযৌক্তিক হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তিনি। সীমান্তে উত্তেজনা নিরসনের আহবান জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, উদ্বেগজনক এই উত্তেজনা নিরসনে তার দেশ সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। রাশিয়ার উসকানি সত্তে¡ও ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ মাসের শেষদিকে ইইউ’র ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছেন ইইউ-র বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল। এমন পরিস্থিতিতেই পুতিনকে ফোন করে এ ব্যাপারে নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আনাদোলু এজেন্সি, ভয়েস অব আমেরিকা, আল-জাজিরা, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন