বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সাকিবের নিষিদ্ধ হবার পেছনে স্ট্রিকের হাত!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৫ এএম

দীপক আগারওয়ালের নামটা শুনলেই ধাক্কা লাগার কথা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমর্থকদের। সাকিব আল হাসান এক বছর নিষিদ্ধ ছিলেন এই জুয়াড়ির অনৈতিক প্রস্তাব আইসিসিকে না জানানোর অপরাধে। কাল দুর্নীতির দায়ে জিম্বাবুয়ের কিংবদন্তি হিথ স্ট্রিকের আট বছরের নিষেধাজ্ঞায় আবার উঠে এল আগারওয়ালের নামটি। প্রশ্ন ওঠে, স্ট্রিক ও সাকিবের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র নেই তো?
সাকিবের নিষেধাজ্ঞার সময় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি বলেছিল, সাকিবের ফোন নম্বর সাকিবেরই কাছের কেউ আগারওয়ালকে দিয়েছেন। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি সেটি তখনই খোলাসা করেনি আইসিসি। সাকিবের ব্যাপারে আইসিসির তদন্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি ছিল এটিই। স্ট্রিকের ক্ষেত্রে আইসিসির তদন্ত সেই প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই দিনের আলোতে নিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে স্ট্রিকের সম্পর্ক অনেক দিনের। খেলোয়াড়ি জীবনে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। ঢাকা লিগে আবাহনীর হয়ে খেলেছেন। পরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে ছিলেন দারুণ সফল। ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৬ সালে মে মাস পর্যন্ত সাদা বলের ক্রিকেটে যেন পেস বিপ্লবই ঘটে। যার বড় কৃতিত্ব স্ট্রিককে দিতে হয়। কোচ হিসেবে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে সাবেক এই জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের।
স্ট্রিক বাংলাদেশের চাকরি ছাড়েন ভারতীয় দলে কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আশায়। কিন্তু কোহলিদের চাকরি স্ট্রিকের কপালে ছিল না। তবে ২০১৬ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশ দলের বোলিং কোচের চাকরি নিয়ে ভারতে থেকে যান তিনি। একই বছর আইপিএল দল গুজরাট লায়নসের কোচিং কোচ হন তিনি। ২০১৮ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচও ছিলেন। এরপর নানা সময়ে প্রধান কোচ ও বোলিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন জিম্বাবুয়ে দলের।
আইসিসি বলছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আগারওয়াল প্রথম স্ট্রিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি লিগ আয়োজন করে টাকা আয়ের প্রস্তাবের মাধ্যমে শুরু হয় দুজনের যোগাযোগ। আগারওয়াল ক্রিকেট জুয়ার সঙ্গে জড়িত, এই কথা নাকি স্ট্রিককে জানানোর পরও তিনি যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। স্ট্রিকের কাছে তার দেশের বাইরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চাইতে না চাইতেই দিয়ে দেন তিনি। দুজন মিলে জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি লিগ আয়োজনের জন্য টাকা আয়ের জন্য অনৈতিক পথ বেছে নেন।
দুজনের এই যোগাযোগ অব্যাহত ছিল আরও ১৫ মাস। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের নজরে আসার পর বিচ্ছিন্ন হয় দুজনের যোগাযোগ। এই সময় স্ট্রিক ছিলেন জিম্বাবুয়ে, আইপিএল ও আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগ দলের কোচ। ২০১৭ বিপিএলের সময় স্ট্রিককে ব্যবহার দলের ক্রিকেটারদের কাছ থেকে ভেতরের তথ্য বের করেন আগারওয়াল। আইসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা আছে, ‘২০১৭ বিপিএলে মিস্টার এক্স (পরে জানা যায় তিনিই আগারওয়াল) মিস্টার স্ট্রিককে দলের অধিনায়ক, মালিক আর ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। তাহলে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে এবং সেই অর্থ পরে জিম্বাবুয়ের টি-টোয়েন্টি লিগে বিনিয়োগ করতে পারব। পরে দেখা গেছে, মিস্টার স্ট্রিকের কাছ থেকে মিস্টার এক্স ক্রিকেটার, দলের মালিকদের নম্বর নিয়েছেন, যা দিয়ে পরে মিস্টার এক্স দলের কাছ থেকে ভেতরের তথ্য বের করতে পারত।’
আগারওয়ালকে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের ফোন নম্বর ও অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগের ঠিকানা দেন স্ট্রিক। এঁদের মধ্যে একজন ছিলেন তখন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। যাঁর বোঝা উচিত ছিল এই তথ্য আগারওয়াল জুয়ায় কাজে লাগাতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের কাছে স্ট্রিক ছিলেন বেশ পরিচিত এবং আস্থাভাজন ব্যক্তিত্ব। আগারওয়ালের ব্যাপারে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের কাছে সুপারিশও করেছেন। ক্রিকইনফো বলছে, সেই ক্রিকেটার সাকিবই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ২০১৭ সালে সাকিব ছিলেন বিপিএল দল ঢাকা ডাইনামাইটসের অধিনায়ক।
বিপিএল শেষ হতে না হতেই ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে শুরু হয় শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ। সেখানে জিম্বাবুয়ের কোচ ছিলেন স্ট্রিক। সেই সিরিজে সাকিবকে আগারওয়াল দলের ভেতরের তথ্য চেয়ে মেসেজ পাঠান, ‘আমরা কি এখানেই করব নাকি আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করব।’ একই বছর ২৬ এপ্রিল আগারওয়াল আবার সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন সাকিব খেলছিলেন আইপিএল, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে। আগারওয়ালের সঙ্গে এই যোগাযোগ সাকিব আইসিসিকে না জানিয়ে এক বছরের জন্য ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Sharafatul Islam Bhuiyan ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১:০০ এএম says : 0
সব দোষ ভারতীয়দের তারা বেশির ভাগ জুয়ার সাথে জড়িত।তারা পুরো ক্রিকেট খেলাকে জুয়ায় পরিণিত করেছে।
Total Reply(0)
M. Rakib ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
তার সময় বাংলাদেশের বোলিং ই অন্যরকম ছিল
Total Reply(0)
Muntasir Jisan ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
লোভের কারনের বাংলাদেশের চাকরি ছাড়ছিল
Total Reply(0)
মোহাম্মাদ এরদোগান নাজমুল ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
হিথ স্ট্রিক বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা একজন বলিং কোচ তার অবদান পেসাররাই ভালো জানে,, তবে ও যেটা করছে লাথি একটা পাওয়ার দাবি রাখে
Total Reply(0)
Tahsan Liton ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১:০২ এএম says : 0
আইপিএল নিষিদ্ধ করা হোক কারণ এখানে জুয়াড়িদের বড় আসর বসে
Total Reply(0)
Hridoy Khan ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১:০৩ এএম says : 0
ক্রিকেটের যত জুয়াড়ি আছে অর্ধেক তার ভারতের বাকি অর্ধেক ইন্ডিয়ান।
Total Reply(0)
Mohammed Elias Meah ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ১:০৩ এএম says : 0
আইপিএল এর ৭০-৮০% ম্যাচ ই পাতানো। ফিক্সিং থেকে সবচেয়ে বেশি কামানো দল ব্যাঙ্গালুরু।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন