বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

টাঙ্গাইল রোজাদার ধানকাটা শ্রমিকদের হয়রানির অভিযোগ, আটকে রাখল পুলিশ

সখিপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৪৮ পিএম

টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক থেকে শতাধিক ধান কাটা শ্রমিকসহ তাদের বহনকারী দুটি ট্রাক আটক করে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে ট্রাক দুটি আটক করে পুলিশ।

এতে খোলা আকাশের নিচে দুর্ভোগে রাত কাটিয়েছেন শ্রমিকরা। এ ছাড়াও ধান কাটা শ্রমিকদের অনুমতিপত্র জব্দ করার অভিযোগও রয়েছে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে।

পুলিশকে প্রত্যাশা অনুযায়ী উৎকোচ না দেওয়ায় তারা ট্রাকটি আটক করেন বলে অভিযোগ করেছেন চালকরা।

ধান কাটার শ্রমিকরা জানান, কৃষি অফিসারের অনুমতি নিয়ে পাবনা থেকে দুটি ট্রাকে মুন্সিগঞ্জ ও হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে তারা যাত্রা শুরু করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই রোজা রেখেছিলেন। এলেঙ্গা পর্যন্ত আসলে পুলিশ তাদের ট্রাক দুটি দাঁড় করায়।

পুলিশ টাকা দাবি করলে টাকা দিতে না পারায় তাদের ট্রাক জব্দ করে এলেঙ্গা ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। রাত থেকে না-খেয়ে শতাধিক শ্রমিক খুব কষ্ট করছে।

অনেকেই আবার সাহরিও খেতে পারেননি। পুলিশ বাস ব্যবস্থা করে দিতে চাইলেও শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি।

শ্রমিক ইদ্রিস আলী বলেন,পাবনা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত আসলে পুলিশ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় ট্রাক দুটি আটকে দেয়। এতে আমাদের রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে। না খেয়ে রাত থেকে কষ্ট করতে হচ্ছে। পায়খানা প্রসাবের জায়গা না থাকায় কষ্ট আরও কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। আমরা এখন কি করবো কিছুই বুঝতি পারছি না।

রমজান নামের অপর শ্রমিক বলেন, কাজ না থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছিলাম। তাই আমাদের উপজেলা কৃষি অফিসার ও চেয়ারম্যানের প্রত্যায়ণপত্র নিয়ে ধান কাটতে হবিগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলাম।

‘পুলিশ আমাদের আটকে দেওয়ায় খুব কষ্ট হচ্ছে। রাত থেকে না খেয়ে আছি। আমাদের অনুমতিপত্র পুলিশ জব্দ করে রেখেছে।’

ট্রাকচালক উজ্জ্বল মিয়া বলেন, শুক্রবার বিকালে পাবনা থেকে রওনা দিয়েছি। রাত ১২টার দিকে এলেঙ্গা আসলে পুলিশের এক কর্মকর্তা টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা ট্রাকের সব শ্রমিক নামিয়ে দিতে বলেন। শ্রমিকদের বাসে যেতে বলেন।

‘পরে অপর এক পুলিশ কর্মকর্তা এসে শ্রমিকসহ ট্রাক ফাঁড়িতে নিয়ে যান। গাড়ির কাগজপত্র পুলিশ জব্দ করেছে। শুক্রবার দুপুরে খেয়েছিলাম। তার পর থেকে আমরা না খেয়ে খুব কষ্টে সময় পার করছি।’

পাবনা সদর কৃষি অফিসার হাসান রশিদ হোসাইনী বলেন, তাদের অনুমতিপত্র দেওয়া আছে। তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছি। পুলিশ হয়তো বা আইনগতভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু মানবিক দৃষ্টিতে কাজটি তেমন ভালো হয়নি। আরেকটি বাস ব্যবস্থা করে পুলিশ তাদের গন্তব্যে পৌছাতে সহযোগিতা করতে পারতেন।

তবে শ্রমিকদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন ও প্লানিং) রহমত উল্লাহ বলেন, শ্রমিকরা ট্রাকে করে যাচ্ছিল। কিন্তু ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ। পরে তাদেরকে বাসের ব্যবস্থা করে পাঠানো হয়।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত বলেন, শ্রমিকরা দুটি ট্রাকে একটি ৪৮ জন, আরেকটি ৭২ জন শ্রমিক স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। তাদের বাস ব্যবস্থা করে দিতে চাইলে তারা রাজি হয়নি। বাস ব্যবস্থা করে তাদের গন্তব্যে পাঠানো হবে।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন