মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কাদের মির্জার ভাই ও ছেলের নেতৃত্বে আ.লীগের সাধারণ সম্পাদককে গুলি : উপজেলা আ.লীগ

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১১ পিএম

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরীকে (৬৬), পৌর মেয়র কাদের মির্জার নির্দেশে তার ভাই সাহাদাত হোসেন ও ছেলে তাশিক মির্জার নেতৃত্বে গুলি করা হয়েছে অভিযোগ করেছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগ।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঘটনার দেড়ঘন্টা পর উপজেলা আ.লীগের নেতৃবৃন্দ ফেসবুক লাইভে এসে এ অভিযোগ করেন। ফেসবুক লাইভে উপজেলা আ.লীগের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো.মিজানুর রহমান বাদল। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান আজম পালা চৌধুরী রুমেল, উপজেলা আ.লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম রাহাত, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জায়দল হক কচি প্রমুখ।

ফেসবুক লাইভে মিজানুর রহমান বাদল অভিযোগ করে বলেন, আজ সকালে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরনবী চৌধুরী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে কাজ শেষ করে বসুরহাট বাজারে যাওয়ার পথে কাদের মির্জার ভাই সাহাদাত হোসেন ও তার ছেলে তাশিক মির্জার নেতৃত্বে কাদের মির্জার নির্দেশে এই বয়োবৃদ্ধ আ.লীগ নেতাকে নৃশংসভাবে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার পায়ের নিচে গুলি করা হয়। তার হাঁটু ভেঙ্গে চুরমার হয়ে নিচের দিকে দেবে গেছে। কাদের মির্জা কয়েক দিন আগে ঘোষণা দিয়েছে উপজেলা আ.লীগের নেতৃত্বে যারা আছে তাদেরকে যেখানে পাবে সেখানে হাঁটুর নিচে ভেঙ্গে ফেলবে, চুরমাচুর করে ফেলবে। তার সেই দিক নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল রাত থেকে আমাদের নেতাদেরকে হত্যা করার মিশনে নেমেছে। মানুষের কারণে নুরনবী চৌধুরী প্রাণে রক্ষা পেয়েছে, নয়তো সে রক্ষা পেতো না। নুরনবী চৌধুরীর ওপর হামলার খবর শুনে বসুরহাট বাজারে আসার পথে আ.লীগ নেতা স্বপনের ওপর কাদের মির্জার ভাই সাহাদাত হোসেন ও ছেলে তাশিক মির্জার নেতৃত্বে নৃশংসভাবে হামলা করা হয়েছে। উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী ও আ.লীগ নেতা স্বপনের ওপর হামলার বিচার যদি আজকে দিনের মধ্যে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে কোম্পানীগঞ্জের আপামর জনতাকে নিয়ে রাজপথে নেমে আমরা এটার বিচার করব। প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদের ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যেন অনতিবিলম্বে এর সমাধান হয়। যেন সন্ত্রাসীদের সঠিক বিচার হয়। নাহলে আমরা প্রতিরোধ করতে আসলে অনেকে আমাদেরকে খারাপ বলবে।

অপরদিকে এ ঘটনার পর দুপুর ২টার দিকে কাদের মির্জা তার অনুসারী স্বপন মাহমুদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে দাবি করেন, আজকে সকাল বেলা সিরাজপুরের এক কুলাঙ্গার চেয়ারম্যান তথাকথিত চেয়ারম্যান। যে মানুষের শালিসের নামে বাড়ির ভিটি পর্যন্ত বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। যে গরীব অটোরিকশার ড্রাইভারদের আমি আড়াই হাজার টাকা করে অটোরিকশার ল্যাইসেন্স দিয়েছি। সে ৬০টা লাইসেন্স আমার থেকে নিয়েছে। সে প্রত্যেকটা লাইসেন্সে ৫হাজার টাকা করে নিয়েছে। তারপরে ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা থেকে টাকা নিয়েছে। স্বামী পরিত্যক্ত মহিলাদের কাছ থেকে সে টাকা নিয়েছে। তারপরে প্রাইমারি স্কুলের ২টা পিয়নের চাকরি দিতে সে টাকা নিয়েছে। এমনভাবে এলাকায় লুটপাট করছে। গত কয়েকদিন আমি শুনতেছি, তারা টাকার জন্য তাকে ধরবে। তারা এ অবস্থায় রইছে টাকার জন্য। এখন টাকার জন্য তাদের সাথে মারামারি হইছে। এখন এটা আমার ওপর আমার কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বুসরহাট পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১ নং সিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরনবী চৌধুরীকে (৬৬), গুলি করে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দেয় কাদের মির্জার অনুসারীরা। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান ও উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.মিজানুর রহমান বাদল এ হামলার জন্য বসুরহাটের মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সেলিম জানান, তিনি ডান পায়ের এবং বাম পায়ে হাঁটুর নিচে দুই জায়গায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং দুই পা ভেঙ্গে গেছে। গুলির আঘাতের চিহু অনেক ভিতরে চলে গেছে।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন