শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দেশি গরুতেই ক্রেতাদের আস্থা

প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মুজিবুর রহমান ভুইয়া, মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি) থেকে

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা। ইতিমধ্যেই মুসলমানদের ঘরে কড়া নাড়তে শুরু করেছে ধর্মীয় এ উৎসব। সবাই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী পছন্দের পশুটি ক্রয় করতে ছুটছেন হাট থেকে হাটে। ব্যস্ততা যেন সকলের পিছু ছুটছে। সবার আগে নিজের পছন্দের পশুটি কব্জায় নেয়াই যেন সবার কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে অন্যান্য বছরের মতো এবারো বিপুল সংখ্যক গরু পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লার ও নোয়াখালী যাচ্ছে। এখানকার পশুর হাট ছাড়িয়ে বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামে এখন সমতল জেলার বেপারিদের ব্যাপক আনাগোনা। তারা পাহাড়ি পাড়াগুলো ঘুরে ঘুরে গরু ক্রয় করছেন। আর প্রতিদিনই ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছেন সমতলের বিভিন্ন জেলায়। এদিকে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত মাটিরাঙ্গা উপজেলার প্রায় ১০টি কোরবানির হাট। বড়নাল, তবলছড়ি, গোমতি, গুইমারা ও মাটিরাঙ্গা সদরের পশুর হাটে শেষ মুহূর্তের কোরবানির পশু বেচাকেনার ধুম পড়েছে। প্রত্যন্ত এলাকার কৃষক, খামারি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে হাটে আসছেন। স্থানীয় দেশি জাতের গরুর জন্য নির্ভরযোগ্য খাগড়াছড়ি বিখ্যাত বলে শহর থেকে অনেকেই আসেন নিজের পছন্দের কোরবানির পশুটি কয় করতে। স্থানীয় বাজারগুলোতে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় দেশি জাতের গরু। ক্রেতা-বিক্রেতাসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছোট আকারের গরু ৩০ থেকে ৪০ হাজার, মাঝারি আকারের গরু ৪০ থেকে ৫০ হাজার আর বড় আকারের গরু লাখ টাকারও বেশি বিক্রি হচ্ছে। গত শনিবার উপজেলার সবচেয়ে বড় কোবানির পশুর হাট হিসেবে পরিচিত মাটিরাঙ্গা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে বিভিন্ন আকারের গরুতে বাজার সয়লাব। পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লার ও নোয়াখালী থেকে আসা বেপারীদের উপস্থিতি ব্যাপক। গরুর দাম বেশি হলেও দেশি গরুতে চাহিদা বেশি থাকায় এদিন বাজারে কাক্সিক্ষত বিক্রি হয়েছে বলে জানালেন মাটিরাঙ্গা বাজারের ইজারাদার সমিতির নেতা মো. জসিম উদ্দিন ডিলার। তিনি জানান প্রতি হাটবারে বিপুলসংখ্যক গরু সমতলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। শুধু মাটিরাঙ্গার কোরবানির পশুর হাট থেকে গত এক সপ্তাহে অন্তত ২০০ গরু বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মাটিরাঙ্গার কোরবানির পশুর হাটে চট্টগ্রাম থেকে গরু কিনতে আসা চট্টগ্রামের ব্যাবসায়ী মো. আবদুল করিম হেসেন এ প্রতিনিধিকে বলেন, দাম একটু বেশি হলেও দেশি গরুতেই আমার আস্থা। আর তাই এতোদূর থেকে ছুটে এসেছি নিজের পছন্দের কোরবানির পশুটি ক্রয় করতে। অন্যদিকে সরকারি চাকরিজীবী সাহাদাত হোসেন বলেন, পর্যাপ্ত গরু থাকলেও দাম অনেক বেশি। স্থানীয় ব্যাবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, মাটিরাঙ্গার গরু সমতলের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার কারণে এখানকার বাজারে দাম চড়া। মাটিরাঙ্গা বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা স্থানীয় কৃষক ও খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোন ধরনের ওষুধ ব্যবহার না করে প্রাকৃতিকভাবে এখানকার গরু পালন করা হয়ে থাকে। আর তাই সমতলের জেলাগুলোতে এখানকার দেশি গরুর বেশ কদর রয়েছে। ফলে প্রতিবছরের মতো এবারও সমতল থেকে বহু ক্রেতা মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন পশুর হাটে আসেন। আবার অনেকেই এখান থেকে পশু কিনে সমতলে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠান। মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এখানকার গরু কোন ধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই বেড়ে ওঠে। পাহাড়ের গরুর আকার, রঙ ও গঠন প্রকৃতি সুন্দর ও সুঠাম হওয়ার কারণে সমতলের লোকজনের কাছে খাগড়াছড়িসহ পাহাড়ের দেশি জাতের গরুর বিশেষ চাহিদা রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন