প্রত্যেক আমলই নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল। মানুষ যে সকল আমল করে তা নিয়্যত অনুসারেই পরিসাধিত হয়। আরবী ভাষায় নিয়্যত বলতে ‘কাসদুল কালব’ অর্থাৎ অন্তরের দৃঢ় সংকল্প বুঝায়। অন্তরে সংকল্প গ্রহণ করলেই নিয়্যত হয়ে যায়। রমজান মাসের রোজা সুনির্দিষ্ট। রমজান মাসের রোজা পালন করা ফরজ। রাতে তারাবিহ নামাজ আদায় করা কিয়ামুল্লাইল পালন করা, সাহরি গ্রহণ করা সব কিছুর মূলেই রয়েছে রোজা পালনের সংকল্প ও অভিপ্রায়। এ জন্য নতুন করে রোজার নিয়্যত করার প্রয়োজন নেই। তবে, যাদের ওপর রোজা ফরজ নয়- যেমন অসুস্থ, রোগী, শক্তিহীন, বয়োবৃদ্ধ ও মুসাফির তাদের জন্য নিয়্যত অত্যাবশ্যক।
এতদপ্রসঙ্গে, ইমাম আবু হানিফা (রহ:) যে অভিমত ব্যক্ত করেছেন, তা খুবই প্রণিধানযোগ্য এবং নিয়্যত সংক্রান্ত বিষয়ের যাবতীয় জটিলতার সমাধান। তিনি বলেছেন : ‘যে রোজার দিন নির্দিষ্ট এর নিয়্যত সে দিনেই দ্বিপ্রহর পর্যন্ত করলেই চলে। তবে সে রোজার দিন নির্দিষ্ট নয়, সে অনির্দিষ্ট দিনের রোজার নিয়্যত ফজর উদিত হওয়ার পূর্বে করাই দরকার। কিন্তু কাফফারার রোজা কাজা রোজা ও অনির্দিষ্ট মান্নতের রোজার নিয়্যত রাত্রি কালেই করতে হবে। হজরত হাফসা (রা:) বর্ণিত হাদীস এবং হজরত ইবনে আব্বাস (রা:) বর্ণিত হাদীসদ্বয়ের সমন্বিত রূপ রেখাই হলো ইমাম আবু হানিফা (রহ:) এর অভিমত। এর উপর আমল করলে কোনো রকম দ্বিধা ও সংকোচের অবকাশ মোটেই থাকে না।
আমাদের মাঝে আরবী ভাষায় রমজান মাসের রোজার নিয়্যত করার যে প্রচলন আছে, তা’ অধিক সতর্কতা ও সচেতনতার পক্ষ নির্দেশ করে- ‘নাওয়াইতু আন্ আছুম্মা গাদাম্ মিন শাহরি রামাজানাল মুবারাকি ফারজাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নাকা আনতাছ ছামিউল আলীম’। কিন্তু কেউ যদি আবরী ভাষায় নিয়্যত না করে, বাংলা, উর্দু, ফার্সি, ইংরেজী অর্থাৎ নিজ নিজ মাতৃভাষায় রোজার নিয়্যত করে, তাহলেও নিয়্যত করার কাজ পুরা হয়ে যাবে। রোজার ফজিলত ও বরকত সবই সে লাভ করবে। আল্লাহপাক আমাদেরকে সঠিকভাবে রোজা পালন করার তৌফিক এনায়েত করুন- আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন