বর্তমানের চলমান লকডাউনের মাঝেই অফিস খুলে রেখে বাজারের চেয়ে অনেক কম দামে চিটাগুড় বিক্রির চুক্তি করার অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কৃষিভিত্তিক একমাত্র ভারিশিল্প কারখানা মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বাজার দরের চেয়ে কম দামে এই চিটিাগুড় বিক্রি করায় সরকারের লোকসানের পরিমাণ ১৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে চিনিকল কর্তৃপক্ষ চিটাগুড় বিক্রি বা সকল টেন্ডার প্রক্রিয়ার দায়িত্ব চিনিশিল্প সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের বলে দাবি করেছেন। এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনাতেই অফিস খুলে রেখে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় আখচাষী ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, গত আখ মাড়াই শুরুর পূর্ব মূহুর্তে রংপুর চিনিকল সহ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৬টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ করা হয়। এতে বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসানের পর রহস্যজনক কারণে নতুন করে রংপুর চিনিকলের ট্যাংকে রক্ষিত চিটাগুড় বিক্রিতেও লোকসানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বর্তমানে পাশর্বর্তী নাটোর চিনিকলের চিটাগুড় বিক্রির দরের সাথে মিল রেখে এখানে ফ্রি-সেলে চিটাগুড় বিক্রি হচ্ছিলো প্রতি মেট্রিক টন ৩০ হাজার ৭শ’ ১১টাকা দরে। কর্পোরেশনের আওতাধীন কেরু এন্ড কোম্পানীও একই দরে চিটাগুড় কিনে নিতো। কিন্তু সম্প্রতি এক টেন্ডারের মাধ্যমে ওই দরের চেয়ে ৩ হাজার ৫শ’ দশ টাকা কমে প্রতি মেট্রিক টন চিটাগুড় ২৭ হাজার দুইশ’ এক টাকা হিসেবে ৫০০ মেট্রিক টন চিটাগুড় বিক্রি করে দেয়া হয়। এতে সরকারের ১৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। গত সোমবার এই দরদাতা প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের রাফি ট্রেডার্সের সাথে বিক্রয় চুক্তিও সম্পন্ন করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। চলমান লকডাউন উপেক্ষা করে এক প্রকার গোপনেই এ চুক্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: নূরুল কবির এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানান, টেন্ডার প্রক্রিয়া পুরোটাই বিএসএফআইসি’র সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে সম্পন্ন হয়েছে। বেশ কয়েকবার টেন্ডার আহবান করলেও কাক্সিক্ষত দর না পাওয়ায় বর্তমান টেন্ডারের সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে চিটাগুড় বিক্রির কার্যাদেশ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান কার্যালয়। চিটাগুড় বিক্রিতে কোন দূর্নীতি হওয়ার অবকাশ নেই। আর প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশেই বিভিন্ন জরুরী প্রয়োজনে চিনিকলের কয়েকটি বিভাগ খুলে রাখা হয়েছে। বর্তমানে রংপুর চিনিকলের ট্যাঙ্কে প্রায় ১ হাজার একশ’ মেট্রিক টন চিটাগুড় ও গোডাউনে ৪শ’ মেট্রিক টন চিনি রক্ষিত আছে। এগুলোও দ্রুতই বিক্রি সম্পন্ন হয়ে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন