শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

গোসলের ভিডিও ধারণ করার অপরাধে সালিসে কান ধরে ও ক্ষমা চেয়ে মুক্তি!

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০২১, ৮:৪৬ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক লম্পট বাড়ির পাশে গোসল খানায় নারীদের গোসলের দৃশ্য দেখা এবং ভিডিও ধারণ করা তার নেশা। প্রতিনিয়তই এমন কাণ্ড করলেও অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় ও লজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীরা কখনও মুখ খোলেননি। সর্বশেষ গত তিনদিন আগে এ ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীর এক পরিবার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই নারীকে পিটিয়ে জখম করে অভিযুক্তের পরিবারের লোকজন। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার এক সালিসে অভিযুক্তকে হাজির করে কান ধরে উঠবস এবং ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, উপজেলার মগটুলা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩২) গত কয়েক মাস ধরে দুপুরের পরে খোঁজ নেন কোন বাড়িতে গোসলখানায় গোসল করছে নারীরা। সেখানেই ওৎ পেতে বসে থেকে গোসলের দৃশ্য দেখা ছাড়াও নিজের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। পরে এগুলো বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেন। এসব ঘটনা প্রচার হলেও ভুক্তভোগীরা লজ্জার ভয়ে প্রকাশ না করে থেমে যান।

কিন্তু গত শনিবার দুপুরে সেই অভিযুক্ত শফিকুল পার্শ্ববর্তী বাড়ির পাশে একটি গোসলখানার পেছনে বসে উঁকি দেওয়ার সময় বাড়ির দুই যুবক তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলে। পরে ধস্তাধস্তি করে সফিকুল সেখান থেকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি এলাকার লোকজনকে জানানোর কারণে শফিকুলের বাবা মফিজ উদ্দিন সেই ভুক্তভোগী পরিবারের একজনকে ডেকে নিয়ে মারধর করতে থাকে। এমন খবর পেয়ে বাড়ি থেকে দুই নারী এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে জখম করেন মফিজ উদ্দিন। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

মারধরের শিকার পুরুষ জানান, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ এসে তদন্ত করে শফিকুলকে না পেয়ে তার বাবা মফিজ উদ্দিনকে আটক করে। এ সময় স্থানীয় সালিসকারীরা মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে মফিজকে পুলিশের কাছ থেকে রেখে দেয়। আজ মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা নিয়ে আয়োজন করে। সেই সালিসে উপস্থিত ছিলেন মাইজবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সালিসকারীরা।

সালিসে থাকা লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, সালিসে অভিযুক্ত শফিকুল ছাড়াও দুই নারীর পরিবারের লোকজনকে উপস্থিত রাখা হয়। এ সময় অভিযুক্ত শফিকুল নিজের অপরাধ স্বীকার করে এবং আর করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরে সালিসের সিদ্ধান্তে তাকে কান ধরে উঠবস ও দুই নারীর পরিবারের সদস্যদের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে মুক্তি দেওয়া হয়।

সালিসে থাকা স্থানীয় মাইজবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘কি করবো দুই পরিবারের বিষয়টি সমাধান করবে বলেছে এবং এলাকার লোকজন বলছে তাই সালিসে গেছি ঘটনাটি আসলেই খুবই অপরাধ। ক্ষমার অযোগ্য।

লিখিত অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরগঞ্জ থানার এস আই আমিরুল ইসলাম জানান, তদন্তে তিনি ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। পরে বাদীকে থানায় আসতে বলেছিলেন এতে বাদী না আসায় এখনো মামলা হয়নি।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের মিয়া জানান, ঘটনাটির তদন্ত করা হচ্ছে। আমি নিজেই ঘটনা স্থলে যাচ্ছি। এটা ক্ষমার ব্যাপার না। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন