শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

করোনার কোনো উপসর্গ নেই খালেদা জিয়ার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুলশানে নিজের বাসভবন ফিরোজাতে চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। প্রাণঘাতি এই ভাইরাসে তাঁর আক্রান্ত হওয়ার সংবাদে দেশে-বিদেশে বিএনপি নেতাকর্মীসহ বেগম জিয়ার বিপুল সংখ্যক ভক্ত-অনুরাগী উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন।

বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ৭৫ বছর বয়স ও আগে থেকেই নানাবিধ অসুস্থতার কারণেই তাদের এই উৎকণ্ঠা। এজন্য প্রতিদিনই তাঁর সুস্থতা ও রোগমুক্তি কামনায় দেশে-বিদেশে দোয়া মাহফিল, কোরআন খতম, পশু কোরবানী, দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করছেন অনেকেই। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরাও বেগম জিয়াকে রেখেছেন ক্লোজ মনিটরিংয়ে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও ডা. মো. আল মামুন তাঁর বাসভবনে গিয়ে সাক্ষাত করে এসেছেন। সাক্ষাত শেষে ডা. জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার শরীরে করোনার যেসব উপসর্গ থাকে তার কোনটিই নেই। জ্বর, কাশি, খাবারে অরুচিসহ অন্য কোন উপসর্গই নেই বলে বেগম জিয়ার সাথে কথা বলে তারা জেনেছেন।

ডা. জাহিদ বলেন, গত রোববার থেকেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শরীরে কোন জ্বর নেই, স্বাভাবিক তাপমাত্র রয়েছে। উনার শ্বাস-প্রশ্বাস, অক্সিজেন স্যাচুরেশন খুবই ভালো আছে। উনার খাবার রুচির আগের মতো আছে। উনি অন্যদিনের চেয়ে মঙ্গলবার ভালোবোধ করেছেন।

১৪ দিন পর্যন্ত কঠিন সময় জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, সাধারণত ১৪দিন পর্যন্ত করোনার কঠিন সময়। তারপরও করোনা নিয়ে সঠিক কোন তথ্য বলা যায় না। কারণ এটি একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম ধারণ করে। এজন্য আমরা পুরো এপ্রিল মাসই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ক্লোজ মনিটরিংয়ে রাখবো। আগামী সপ্তাহে সোম বা মঙ্গলবার কিছু টেস্ট করা হবে। সেই টেস্টের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী অবস্থা বোঝা যাবে।

খালেদা জিয়াকে ১৪ দিন পর ঝুঁকিমুক্ত বলা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা নিয়ে কোন ভবিষ্যৎবাণী করা যায় না। অনেকেই ১৪দিনেই সুস্থ হয়ে গেছেন, আবার অনেকের ৪ থেকে ৫ সপ্তাহও সময় লেগে গেছে। যেহেতু দেশনেত্রীর বয়স ৭৫ বছর, তার জ্বর বা উপসর্গ নেই বলে আমরা চিকিৎসায় ঢিলা দিতে পারি না। আমরা এখনো যেভাবে তাকে মনিটরিং করছি পুরো মাসই সেভাবে মনিটরিংয়ে রাখবো। তবে উনাকে যতটা দেখলাম আলহামদুল্লিাহ উনি ভালো আছেন।

দেশবাসীর কাছে বিএনপি চেয়ারপারসন দোয়া চেয়েছেন জানিয়ে এজেডএম জাহিদ বলেন, উনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ যে, সকলেই উনার জন্য দোয়া করছেন, উদ্বিগ্ন আছেন। তিনি আবারও উনার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, একইসাথে সকলকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।

ডা. জাহিদ জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিক বেগম জিয়ার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছেন, তাঁর সহধর্মীনি ডা. জোবায়দা রহমান চিকিৎসকদের সাথে মিলে উনার চিকিৎসা সমন্বয় করছেন। এর আগে প্রতিদিনের মতোই রাত সাড়ে ৯টায় জাহিদ হোসেন ও ডা. মো. আল মামুন গুলশানে ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়ার বাসায় ঢুকেন। পরে সাড়ে ১১টার দিকে তারা বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ার পর প্রখ্যাত ‘বক্ষব্যাথি ও মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকীরে নেতৃত্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিম গুলশানের বাসায় তার চিকিৎসা শুরু হয়। গত ১৪ এপ্রিল এয়ার কেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করা হয়। ‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরো ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসাও এখানে চলছে। ৭৫ বছল বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিতসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের কারো যোগাযোগ সীমিত।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন