ভারতে প্রতিদিন রেকর্ড সংখ্যক মানুষের কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য ‘ট্রিপল মিউটেশন’ অর্থাৎ তিনটি আলাদা কোভিড স্ট্রেইনের একসঙ্গে মিলিত হয়ে নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪১ জন করোনাআক্রান্ত হয়েছেন। এর বেশিরভাগটাই যে মহারাষ্ট্রের, তা বলাই বাহুল্য। মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে পাঞ্জাব, কর্ণাটক, ছত্তিশগড়, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিও। ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত ১ কোটি ৫৬ লাখ ১৬ হাজার ১৩০ জন। এদিকে একদিনে এই মারণ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ২৩ জন। ভারতে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৩ জনের। লাফিয়ে বাড়ছে অ্যাকটিভ কেসও। বর্তমানে করোনার চিকিৎসাধীন ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৩৮ জন। পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনামুক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৫৭ জন। এখনও পর্যন্ত সেখানে ১ কোটি ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯ জন করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন। টিকা পেয়েছেন ১৩ কোটি ১ লাখেরও বেশি মানুষ। ভারতজুড়ে করোনার নতুন তান্ডব রুখতে টিকাকরণের গতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। টিকাকরণের পাশাপাশি রোগী চিহ্নিত করতে চলছে টেস্টিংও। আইসিএমআর-এর রিপোর্ট বলছে, মঙ্গলবার ১৬ লাখ ৩৯ হাজার ৩৫৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তবে শুধু বাড়তে থাকা সংক্রমণই নয়, চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার নতুন স্ট্রেনও।
ভারতে এর আগে ‘ডাবল মিউটেশন’ শনাক্ত হয়েছিল। এনডিটিভি বলছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবার নতুন মিউটেশনের দেখা মিলছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং পশ্চিমবঙ্গে নতুন এই মিউটেশন বেশি ছড়িয়েছে। ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মধুকর পাই বলছেন, ‘ট্রিপল মিউটেশন তুলনামূলক বেশি হারে মানুষকে সংক্রমিত করছে। মানুষ এতে দ্রæত অসুস্থও হয়ে পড়ছে।’ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি বেশি বেশি ছড়াচ্ছে বলে বেশি প্রতিলিপি তৈরি হচ্ছে। এতে মিউটেশনও বেশি হচ্ছে।
এদিকে, করোনা মোকাবিলায় এখনই লকডাউন নয় বলে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কোভিডবিধি মেনে ও টিকাকরণের প্রক্রিয়ায় গতি এনেই এই মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু লড়াই যে ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে, তা ফের প্রমাণিত স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে। কারণ এবার একদিনে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লাখের দিকে এগোলো। সূত্র : এনডিটিভি, টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন