শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আজ থেকে ‘কঠোর’ লকডাউন

গণপরিবহন ছাড়া সবই চলছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ১২:১৫ এএম

আজ থেকে ফের সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। গত মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ২২ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউনে কঠোর বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য বলা হয়। তবে গতকাল দ্বিতীয় দফার লকডাউন ঢিলেঢালাভাবে শেষ হয়েছে। সর্বাত্মক কঠোর বিধিনিষেধের অষ্টম দিনে গণপরিবহন ছাড়া সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া পাড়া-মহল্লায় দোকানপাট খোলা ছিল। শুধু তাই নয়, বাসা-বাড়ি থেকে নারী-পুরুষ বিনা বাধায় বের হয়ে অযথা ঘোরাফেরাও করতে দেখা গেছে। রাজধানীর পুরান ঢাকার সিক্কাটুলী লেন, নাজিরাবাজার, চাকবাজার, কারওরান বাজার, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, আজিমপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওইসব এলাকায় দোকানপাটগুলো খোলা রয়েছে। সকাল থেকে বিনা বাধায় নারী-পুরুষ বাসা থেকে বের হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, রিকশা, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা যুগে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করছেন। এছাড়া পাড়া মহল্লায় তরুণ-তরুণীদের আড্ডা দিতেও দেখা গেছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকায় উঠতি বয়সীদের আড্ডা বেশি বলে জানা গেছে।

পুরান ঢাকার সিক্কাটুলী লেনের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম। গতকাল তিনি বলেন, তাদের এলাকায় লকডাউনের কোনো আলামতই নেই। প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের এলাকায় দোকানপাট খোলা থাকে। এছাড়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের এলাকায় বসবাসকারী নারী পুরুষ ইচ্ছে মত রাস্তায় ঘোরাফেরা করছেন। ওই এলাকায় পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই বলেও জানান তিনি।

গতকাল সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় দেখা গেছে, কঠোর বিধিনিষেধ জারির শুরুতে সড়কে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর পুলিশি চেকপোস্ট থাকলেও আস্তে আস্তে তা কমতে শুরু করেছে। সেইসঙ্গে সড়কে গণপরিবহন ছাড়া, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, রিকশা ও মাঝেমধ্যে বিআরটিসির বাস চলতে দেখা গেছে।

জলিল নামে মিরপুরের এক বাসিন্দা বলেন, কঠোর লকডাউন হলেও রাস্তায় সবকিছুই চলছে। শুধু বাস ছাড়া। আর বাস না চলায় প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চালকরা একপ্রকার ডাকাতি শুরু করেছে। আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা কয়েক গুণ বেশি ভাড়া চাচ্ছে। আমি গুলিস্তান যাব। সিএনজি বলছে ৫০০ টাকার নিচে যাবে না। আর বাইকাররা বলছে ৪০০ টাকা লাগবে। সবই যেহেতু চলছে, তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চললে অন্তত আমাদের মতো যাত্রীদের পকেট কাটা যেতো না।

এদিকে, কঠোর বিধিনিষেধের অষ্টম দিনেও ঢাকা ছাড়ছে কর্মজীবী মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শুরু থেকেই প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস বা মোটরসাইকেলে করে যাত্রীরা ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এসব পরিবহনের ভাড়া বেশি হওয়ায় এখন অনেকেই ট্রাক বা পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

যাত্রীরা বলছেন, ট্রাক বা পিকআপের ভাড়া অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় অনেক কম। তাই কম টাকায় বাড়ি যাওয়ার মাধ্যম হিসেবে ট্রাকে যেতে হচ্ছে। গাবতলী গরুর হাট সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের কড়া নজরদারি থাকায় বেশিরভাগ যাত্রী আমিন বাজার ব্রিজের উপরে গিয়ে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল কিংবা পিকআপে করে বাড়ি ফিরছেন।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে গত ৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে বিধিনিষেধ জারি করা হয়। নির্দেশনা অনুসারে জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া রাস্তাঘাটে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ারও নির্দেশনা ছিল। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় দিন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬ এপ্রিল থেকে সকাল সন্ধ্যা গণপরিবহন চলবে।

তবে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। পরবর্তীতে করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ১১ এপ্রিল শেষ হলেও এর মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ ও ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। পরে আরো এক সপ্তাহ কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেয় সরকার। আজ থেকে সেই লকডাউন শুরু হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Sohagh Sohagh ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৪ এএম says : 0
গরীব ও মধ্যবিত্তদের মারার জন্য এ লকডাউন
Total Reply(0)
Kamrul Jjaman ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৪ এএম says : 0
কঠোর লকডাউন / সর্বাত্মক লকডাউন পার্থক্য কি,,,??
Total Reply(0)
সাবিলা তাবাসসুম জুঁই ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৫ এএম says : 0
কেউই মানবেনা এই লকডাউন
Total Reply(0)
ছোট্টো হুজুরনী. ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৮ এএম says : 0
সেনাবাহিনী দারা প্রতি টি মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসুন। কোন নেতা বা চেয়ারম্যান, মেম্বার দারা নয়। তাহলেই কেউই আর বাহিরে বের হবে না। কঠোর লকডাউন নয় দরকার কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা! সবাই সাবধানে থাকুন সতর্ক হন আল্লাহ পাক কে ভয় করুন, নামাজ পড়ুন সবার জন্য দোয়া করুন ,,,
Total Reply(0)
Zadid Hossain ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৮ এএম says : 0
কে শুনে কার কথা! লকডাউন দিলে করোনা পরিস্থিতি ভালো হবে এর কোন নিশ্চয়তা আছে? শুধু শুধু মানুষের জীবন জীবিকা বন্ধ রেখে মানুষকে কষ্ট দেয়া.
Total Reply(0)
জানা অজানা বিষ্ময়কর সব তথ্য ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
জীবন আর জীবিকা,, , দুইটাই দরকার বেঁচে থাকার জন্যে। লকডাউন শুধুমাত্র জীবন রক্ষার জন্যে। জীবিকা রক্ষার জন্যেও দরকার সুনিদিষ্ট কিছু পদক্ষেপ।
Total Reply(0)
Abul Kalam Azad ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
সরকার দেশে লকডাউন দেওয়ার আগে নিম্ন আয়ের পরিবার গুলোর সদস্য গুনে গুনে যত দিনের লকডাউন ততদিনের খাবার তাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে লকডাউন দেওয়া উচিত ছিল। এক টানা বেশিদিন লকডাউন থাকলে তাঁরা করোনাভাইরাসে নয়,না খেয়ে এমনিতেই মরে যাবে।
Total Reply(0)
H Z Noman ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১:০০ এএম says : 0
সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাওন-ই কি সঠিক পথ?যদি তাই হয় তাহলে কল সারকারখানা, ব্যাংক আরও অন্যান্য অফিস আদালত খোলা কেন? অর্থনীতির যোগান কি শুধু ওরাই দেয়? এ দেশে অনেক খেটে খাওয়া মানুষ আজ কাজ হারিয়ে ঘরের কোনে কঠিন ডিপ্রেশনে দিন যাপন করছে।
Total Reply(0)
Masud Rana ২২ এপ্রিল, ২০২১, ১:০০ এএম says : 0
সরকারের এই ভাবে কঠোর লকডাউন দেওয়া উচিত হয়নি আমি একটি উন্নত দেশে থাকে এখানে করোনা আগের চাইতে বেশি তারপরেও এত কঠোর লকডাউন দেয়নি এই রমজান মাসে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে... আল্লাহ সবাইকে রহম করুন। আর সবচেয়ে বড় সত্যি হলো হেফাজত ইসলাম এর আন্দোলন ঠেকাতে এই লকডাউন। ধংস হোক জালিমদের
Total Reply(0)
ইমন ২২ এপ্রিল, ২০২১, ৩:১৩ এএম says : 0
এই লকডাউন দেখলে হাসি পাই
Total Reply(0)
Mustafa Ahsan ২২ এপ্রিল, ২০২১, ৮:৩৮ এএম says : 0
এটাতো লকডাউন না অবস্তা দেখে মনে হচ্ছে এটা মোল্লাডাউন যে ভাবে রমজান মাসে মৌলানাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তাতে করে লকডাউন দেওয়ার আসল কারন জনগনের কাছে পরিস্কার।এসব করা থেকে এই পবিত্র মাসে কি বিরত থাকা যেতো না? আর এক খুনি মোদির জন্য আমার দেশের ধর্ম প্রান মানুষ নিদারুন নিরজাতনের শিকার হচ্ছে এই কি স্বাধীন দেশ ?
Total Reply(0)
Tipu ২২ এপ্রিল, ২০২১, ৮:৫৮ এএম says : 0
কথিত কোভিড ১৯ নিয়ে সারা পৃথিবীতে যে তামাশা শুরু হয়েছে তার থেকে লক্ষ কোটি গুণ বেশি ক্ষতিকর বিষাক্ত বিষ হচ্ছে যত সব বড় বড় মিথ্যুক ভন্ড প্রতারক জালেম শ্রেণীর মানুষের রূপ ধারী অমানুষরা - বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান, যারা বিভিন্নভাবে নিজেদের লোভ স্বার্থ অহংকার অমানবিক মন মানসিকতার জন্য লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, সুতরাং এই নাটকে অংশগ্রহণ না করে সমাজ এবং দেশ থেকে মিথ্যুক ভন্ড প্রতারক জালেম শ্রেণীর মানুষের রূপ ধারী অমানুষদের নির্মূল করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করুন, যদি তা করতে সক্ষম হন তাহলে সমাজ এবং দেশ উপকৃত হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন