পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে এমনিতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ভারতের হাসপাতালগুলো। এবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আরও বড় ধরনের বিপর্যয়ের খবর সামনে এলো। রাজ্যের রাজধানী পাটনার প্রথম সারির দুইটি হাসপাতাল মিলিয়ে অর্ধসহস্রাধিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর জেরে ওই দুই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা বলতে গেলে বন্ধ হওয়ার মুখে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ ও আনন্দবাজার জানিয়েছে, বিহারের পাটনায় করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের (এআইআইএমএস) পাটনা শাখা এবং পাটনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে কর্মরত।
পাটনা এআইআইএমএস’র প্রধান সিএম সিং জানিয়েছেন, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীসহ তাদের মোট ৩৮৪ জন স্টাফ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে পাটনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের সুপার ইন্দুশেখর ঠাকুর জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে তাদের মোট ১২৫ জন স্টাফ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০ জন চিকিৎসক। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৫৫ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসে আক্রান্তদের হাসপাতালের পক্ষ থেকেই আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যটিতে ৩ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৮৯৭ জন করোনা রোগী।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বুধবার ভারতে নতুন করে করোনায় আরও ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯২৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া রেকর্ড ২ হাজার ১০২ জনের প্রাণহানি হয়েছে করোনায়।
মাত্র ১৭ দিনে ভারতে ভারতে দৈনিক আক্রান্ত এক থেকে তিন লাখে গিয়ে ঠেকল। দ্বিতীয় দফায় প্রকোপ শুরুর পর গত ৪ এপ্রিল প্রথমবার ভারতে লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়। এই সময়কালে ভারতে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা গড়ে ৬.৭৬ শতাংশ করে বেড়েছে।
এদিকে ভারতে করোনাভাইরাসের ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই এবার থাবা বসিয়েছে ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়্যান্ট।’ ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির অন্তত চারটি রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বাকি রাজ্যগুলো হচ্ছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র ও ছত্রিশগড়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসের তিনটি আলাদা স্ট্রেইন মিলে তৈরি নতুন এই ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রামক ক্ষমতাও প্রায় তিন গুণ বেশি।
শুধু বাড়তি সংক্রামক ক্ষমতাই নয়, বরং নতুন এই স্ট্রেইনে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থারও দ্রুত অবনতি ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিক সময় লাগাম পরানো না গেলে এবার সংক্রমণ সুনামির আকার ধারণ করতে পারে। সূত্র: আনন্দবাজার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন