শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আগুনে ৫তলা ভবন ধস

প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:৪৫ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

টঙ্গী বিসিকের ট্যাম্পাকো কুটিংস লিমিটেডের শ্রমিকসহ ২৬ জন নিহত : দগ্ধসহ আহত শতাধিক বাতাসে লাশ পোড়া গন্ধ : হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসার ভার নিল সরকার

টঙ্গী থেকে মো. হেদায়েত উল্লাহ
টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকার ট্যাম্পাকো কুটিংস লি. ফয়েল ও র‌্যাপিং কারখানায় স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ২৬ জন নিহত হওয়ার খবর জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ২৩ জনের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পর আরো ৩ জন মারা যায়। এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে শতাধিক শ্রমিক। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কারখানার ভেতরে আরো অনেকে আটকা পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে বয়লার বিস্ফোরণে এ ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ধসে পড়া ৫তলাবিশিষ্ট কারখানার ভেতরের দিকে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছিল। ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান, কারখানার ৭টি বয়লার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকা-ে ৫তলা ভবন ধসে পড়ায় উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় স্বেচ্ছাশ্রম কর্মীদের খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কারখানায় রাতের শিফটে কর্মরত ছিল মোট ৩৭৫ জন শ্রমিক কর্মচারী। অগ্নিকা- ঘটে শিফট পরিবর্তনের সময়ে। ফলে সকালের শিফটেরও অনেক শ্রমিক কারখানায় এসে পৌঁছায়। এ কারণে অগ্নিকা-ে মোট কতজন শ্রমিক কর্মকর্তা ভেতরে আটকা পড়েছেন তা সঠিক বলা যাচ্ছে না।
উদ্ধারকৃত নিহতরা হলÑইদ্রিস (২৫), আল-মামুন (৪০), কুমিল্লা জেলার নয়ন (৩০), জাহিদুল (৫০), সভাস (৪০), রিকশাচালক রাজিব (২৫), জাহাঙ্গীর (৫০), নিরাপত্তা কর্মী হান্নান মিয়া (৪০), জয়নাল   আবেদিন (অপারেটর), আনোয়ার  হোসেন (অপারেটর), শংকর (ক্লিনার), রেদোয়ান (দারোয়ান), রফিকুল ইসলাম (শ্রমিক), আব্দুল বাছেদ, ইমান হোসেন, মো. আলম, পথচারী আসমা আক্তার, দেলোয়ার হোসেন, প্রিন্টিং হেলপার রফিকুল ইসলাম। নিহত অন্যদের নাম-পরিচয় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।
গুরুতর আহতরা হলেনÑআসিফ, রোকন, দিলিপ চন্দ্র রায়, ফেরদৌস আলম, আবু সাঈদ, আকবর আলী, শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, লিটন, মাহবুব, কামরুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মিজানুর রহমার, নিজামউদ্দিন, শহিদুল, জাহাঙ্গীর আলম, শাহআলমসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় প্রায় ৩০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ৩ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। এছাড়া টঙ্গীর আবেদা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি আছেন মনোয়ার হোসেন, কামাল উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক, শাকিল আহমেদ ও সবুজ মিয়া।
এদিকে উত্তরা ফায়ার ব্রিগেডের আমিনুল ইসলাম ৭টা ২৯ মিনিটে দুর্ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন।
এছাড়া আরও ১৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন রিপন দাশ (৩৫) ও দিলীপ চন্দ্র দাশ (৩৬)। রিপন দাশের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। দিলীপ চন্দ্র দাশের ৮ শতাংশ পুড়েছে। বাকিরা জরুরি বিভাগের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছে রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত। টঙ্গী ৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. পারভেজ জানান, টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে আগুনে দগ্ধ ও শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে আসা ৫৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া নিহত ১৭ জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের ডিজি আক্তারুজ্জামান জানান, শনিবার ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে অগ্নিকা-ের পর খবর পেয়ে তা নেভাতে প্রথমে টঙ্গী, জয়দেবপুরসহ আশপাশের ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি বলেন, আগুনের ভয়াবহতা দেখে পরে সদর দফতরসহ জয়দেবপুর, কুর্মিটোলা, মিরপুর, উত্তরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টসহ প্রায় সব ফায়ার ষ্টেশনকে খবর জানানো হয়। এরপর ২৫টি ইউটিনের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারখানার ৫তলা ভবনটির ওপরের ছাদ ধসে বিসিকের রাস্তার ওপর সোনালী ব্যাংকের পেছনের অংশে কাসেম মাতবরের বাড়ি এবং সেলিমের গোডাউনের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে ওই রাস্তায় চলাচলকারী রিকশারোহী মহিলা যাত্রীসহ ৩ জন নিহত হন। তাদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
গুরুতর আহত ওই কারখানার শ্রমিক রুবেল জানান, তারা ভোরে কাজে যোগদানের পরপরই কারখানার বয়লার বিস্ফোরিত হয়। কারখানাটিতে প্লাস্টিক পেপারের প্রিন্টিং কাজ করা হয় এবং গতকাল ২৫ টন কেমিক্যাল কারখানায় আনা হয়েছিল বলেও জানান তিনি। গতকাল শনিবার ঈদের বোনাস দেওয়ার পর কারখানা ছুটি হওয়ার কথা ছিল। কারখানাটির মালিক সিলেট থেকে নির্বাচিত বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন বলে জানা গেছে।
হতাহতদের অনুদানের ঘোষণা
এদিকে ঘটনাস্থল পরির্দশনে এসে টঙ্গীর কারখানায় অগ্নিকা-ে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
শনিবার দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। তিনি জানান, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে এক লাখ করে টাকা দেওয়া হবে। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে সরকার সহায়তা করবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিসিক শিল্পনগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করা হবে।
এছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ডিআইজি আব্দুস সালাম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, জেলা পুলিশ সুপার হারুনর রশিদ, ফায়ার সার্ভিসের জয়েন্ট সেক্রেটারি (এডমিন) আনিস মাহমুদ, পরিচালক লে. কর্নেল মোশারফ, ফায়ার হেডকোয়াটার্সের স্টেশন অফিসার সারোয়ার এ খান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপার সোয়েব আহম্মেদ পিপিএম। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান খান কিরণ, সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার ডিজিএম একে এম রফিকুল ইসলাম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ আফজাল, টঙ্গী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদারসহ স্থানীয় রাজনীতিক ও সামাজিক নেতৃবর্গ।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ সেলিম জানান, তার গোডাউনে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাল ছিল। কাসেম মাতবরের জামাতা মিলন মিয়া জানান, আমরা কোনো রকমে প্রাণ নিয়ে সবকিছু ছেড়ে দৌড় দিয়ে ঘরের বাইরে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যাই। কিন্তু আমাদের সবকিছু শেষ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুনের লেলিহান শিখা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। আশপাশ এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
অগ্নিকা-ে আহত শ্রমিক কাশেম জানান, ওই কারখানায় বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজিংয়ের কাজ করা হতো। এই কারখানায় তিন শিফটে প্রায় ১২শ’ শ্রমিক কাজ করত। যখন বিস্ফোরণ হয় তখন রাতের শিফটে লোকজন কাজ করে সকালে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, এমন সময় বিস্ফোরণ ঘটে। জানা গেছে, রাতের শিফটে ৩৭৫ জন লোক কাজ করত। সকালের শিফটের কিছু লোকও কারখানায় প্রবেশ করেছিল।
বিস্ফোরণের পর ওই কারখানা দাহ্য পদার্থ থেকে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকা-ের ফলে ৫তলা ওই ভবনের অধিকাংশ ধসে পড়ে এবং সমস্ত ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনদের আহাজারি
টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিহত শ্রমিক ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের আহাজারিতে টঙ্গী শিল্প এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এদিকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের পরিবহনযোগে হাসপাতালে নেয়া হয় হতাহতদের।
এদিকে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন রিকশাচালক রাশেদের (২৮) বোন ফারজানা, কিশোরগঞ্জ জেলার হেসেনপুর থানা এলাকার বাসিন্দা নিখোঁজ রফিকুল ইসলামের (২৫) স্ত্রী নার্গিস আক্তার, সিরাজগঞ্জ জেলার সাহাদাতপুর থানার নিখোঁজ ইসমাইল হোসেনের (২৩) ভাই রফিকুল ইসলাম, টঙ্গীর গোপালপুর এলাকার নিখোঁজ আনিছের (৩০) বাবা সুলতান হোসেন, নিখোঁজ মাইনউদ্দিনের ভাতিজি সুলতানা ও ভগ্নিপতি মোস্তফা এবং অন্যদিকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া থানা এলাকার বাসিন্দা ইনসান আলির ছেলে আল মামুনের (৩০) স্ত্রী খাদিজা, রংপুর জেলার ভুরঙ্গমারী থানার নিজাম উদ্দিনের ছেলে মৃত ইদ্রিস আলীর (২৭) বোন সাবিনাসহ স্বজনদের আহাজারিতে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকা ভারী হয়ে ওঠে।
নিখোঁজ রাশেদের বোন ফারজানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার ভাই রাশেদ ভোররাতে রিকশা নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। তার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। টঙ্গী বিসিক এলাকায় অগ্নিকা-ের খবর পেয়ে তিনি সেখানে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে রাশেদের বন্ধু খালেকের কাছে জানতে পারেন রাশেদ রিকশা নিয়ে ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় বয়লার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে নিহত আল মামুনের স্ত্রী জানান, তার স্বামী রাতের ডিউটি শেষে কারখানা থেকে বেতন তুলে সপরিবারে আজ গ্রামের বাড়িতে ঈদ পালন করতে যাওয়ার কথা ছিল। এখন স্বামীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।
বেতন-বোনাসসহ ছুটি হওয়ার কথা ছিল
এদিকে গতকাল শনিবার কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেয়ার কথা দেয়া ছিল। ছুটিও হওয়ার কথা ছিল গতকালের অফিস শেষে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাবেন এমন আনন্দেই ছিলেন শ্রমিকরা। কিন্তু সর্বগ্রাসী আগুন সব কেড়ে নিল তাদের। সব স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যেই আগুনে ছাই হয়ে গেল। ট্যাম্পাকো পুটিং পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা জানান, আজ ছুটি হওয়ার কথা ছিল কারখানায়। বেতন-বোনাস দেওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু এক বিস্ফোরণেই সব আনন্দ নিমেষেই হারিয়ে গেছে তাদের।
নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ২ লাখ ও আহতদের ১ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা
টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরীতে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ ও আহতদের ১ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। শনিবার দুপুরে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দুই লাখ এবং আহতদের ১ লাখ টাকা করে অনুদান দেয়া হবে।
লাশ শনাক্তে টঙ্গী হাসপাতালে ভিড়
টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে উৎসুক জনতা। গেটের ভেতরে পুড়ে অঙ্গার হওয়া লাশগুলো আঁকাবাঁকা হয়ে পড়ে রয়েছে। লাশের ওপরে ছোট করে কাগজে লেখা, হোসাইন। ডাক্তারদের অনুমান, আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছর। লাশ আনার পর প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে পড়েছিল হোসাইন। অন্য একজনের লাশ শনাক্ত করতে এসে এক শ্রমিকের স্বজন তাকে শনাক্ত করেন। কিন্তু এর থেকে বেশি পরিচয় পাওয়া যায়নি। শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেলেনি ইসমাইলের কোনো স্বজনের খোঁজ। টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীতে ট্যাম্পাকো ফয়েলস লি. কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার করা হোসাইনের মতো আরও অনেক লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে টঙ্গী হাসপাতালের বারান্দা ও সিঁড়ির নিচে। তাদের শনাক্ত করতে ভিড় করছেন স্বজনরা।
ট্যাম্পাকো ফয়েলস ট্রাজেডির খ-চিত্র
ধসে পড়েছে কারখানার পুরো ভবন। আগুন জ্বলছে ভেতরে। তার মধ্যেই ভেতর থেকে আগুনে পোড়া লাশ বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা। পকেট হাতড়ে পাওয়া গেল একটি আইডি কার্ড। শরীর খেলেও কারখানার আগুন গ্রাস করতে ব্যর্থ হয়েছে আইডি কার্ডটিকে। আইডি কার্ড দেখে শনাক্ত করা সম্ভব হলো হতভাগ্য সোলেমানকে। তিনি কারখানার একজন শ্রমিক।
বয়লার বিস্ফোরণে উড়ে গেছে ট্যাম্পাকো ফয়েলস নামে প্লাস্টিক কারখানাটি। দাউ দাউ করে জ্বলছে তিনতলা কারখানা ভবনটি। তবে উৎসুক মানুষের ভিড় যেন আর থামছেই না। কারখানার চারপাশ ছাড়িয়ে ভিড় জমেছে পাশের রেললাইনেও। রেললাইনের ওপর হাজার হাজার মানুষ। উৎসুক মানুষের এই অযাচিত ভিড়ের কারণে বিঘœ ঘটছে রেল চলাচলেও।
২ তদন্ত কমিটি গঠন
এদিকে টঙ্গীর বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় ট্যাম্পাকো কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আগুনের ঘটনা তদন্তে ২টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রায়হেনুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন গাজীপুর জেলা প্রশাসন। আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক বদিউজ্জামানকে। আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
শনিবার ভোর ৬টার দিকে পাঁচতলা ভবনের এই কারখানার সামনের গেটে স্থাপিত বয়লার বিস্ফোরণের পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেছেন, কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেহেতু ওই কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে এতগুলো মানুষ মারা গেছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে, কোন কোন ধারায় মালিকের বিরুদ্ধে মামলা হবে। যারা এর উদ্যোক্তা এ ধরনের রাসায়নিক কেমিক্যাল রাখেন, তাদের বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছিলো। যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।
তিনি আরও বলেন, কেমিক্যালের কারণে দ্রুতগতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানার ভেতরে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সময়মতো না এলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তো বলে তিনি জানান। সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে যেখানে যেটা করা দরকার সরকার তা করবে।
আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে সরকার
গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীর ট্যাম্পাকো কুটিংস লিমিটেড ফয়েলস ও প্যাকিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে।
গতকাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আহতদের দেখতে এসে এ কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, এ দুর্ঘটনায় ঢামেক ও টঙ্গীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা: ইসমাইল হোসেন খান পরিচালক, হাসপাতাল অধ্যাপক ডা: সামিউল ইসলাম সাদি, বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কারী ডা: সামন্ত লাল সেন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা: এম এ আজিজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
যেভাবে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত
বয়লার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত মেশিন অপারেটর মনোয়ার হোসেন জানান, শনিবার সকাল ৬টার শিফটে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য কয়েক মিনিট আগেই কারখানায় প্রবেশ করি। ভেতরে ঢুকেই শো-শো শব্দ শুনতে পাই। টিফিনবক্স আলমারিতে রেখে খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে শ্রমিক মিলনকে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে? সে বললো গ্যাস পাইপ লিকেজ। গ্যাস অফিসে জানানো হয়েছে, এখনও কেউ ঠিক করতে আসেনি। এরপর ভয়ঙ্কর শব্দ, ধপাস করে পড়ে গেলাম। চিৎকার করে বলতে থাকি আমাকে বাঁচাও। দুই পায়ে মারাত্মক ভাবে আহত স্থানীয় আবেদা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার সাথে আরিফ ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাক নামে অপর দু’জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আরিফ, রাজ্জাক ও মনোয়ার বলেন, রাতে ৭০/৭৫ জন কাজ করছিল। সকালের শিফটে আসা মিলে প্রায় দেড়শ’ জন তখন ভেতরে ছিল। যারা রাতে ডিউটি করছিল তারা ভেতরে ছিল। আর আমরা কেবল গেটের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকি। গ্যাস এমন ভয়ংকর হতে পারে তা আমাদের জানা ছিল না। এ কারখানায় তিন শিফটে মোট সাড়ে চারশ’ কর্মী কাজ করেন বলে জানান ২২ বছরের কর্মী রংপুরের গঙ্গাচড়ার মনোয়ার। সকাল ৬টার শিফটে যোগ দেওয়ার জন্য কয়েক মিনিট আগে প্রবেশ করেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বিজুল সরকারপাড়ার আব্দুর রাজ্জাক তিনি বলেন, কারখানার ইঞ্জিনিয়ার আনিসুর রহমান গ্যাস লাইনের লিকেজ এর বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মী জয়নাল আবেদীন, জাহাঙ্গীর, সফিকুল ইসলাম, ইদ্রিস, শ্রমিক আল মামুন, নয়ন, জাহিদুল তাদের কথা বলছিলেন। এসময় আমি ভেতরে ঢুকে নিচতলায় কেবল মেশিন পর্যন্ত গেছি, এরপর আর কিছুই বলতে পারি না। রাজ্জাকের ডান পা, বাম কাধে আঘাত লেগেছে বলে জানান চিকিৎসকরা। তিনিও কাজ করছেন গত ৬ বছর। রাতের শিফট শেষ করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আহত হয়েছেন কর্মী আরিফ ইসলাম। তিনি জানান, ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কারখানাটির মালিক সিলেট থেকে নির্বাচিত বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মকবুল হোসেন।
এদিকে বিসিক সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসের ডিজিএম একে এম রফিকুল ইসলাম, গাজীপুর ও টঙ্গীর সোনালী ব্যাংক শাখার ম্যানেজারগণ তদারকি করে তাদের ব্যাংকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নগদ টাকা নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।
অন্যদিকে রিক্সাচালক  রাশেদ (৩৫), রিক্সা যাত্রী তাহমিনা আক্তার, রুজিনা আক্তার (দুই বোন) পথচারী আশিক কারখানার সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে ছাঁদ ভেঙে তাদেরকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। নিহত ও আহতদের স্বজনদের আহাজারীতে টঙ্গীর আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় আগুনের লেলিহান শিখা কারখানার পার্শ্ববর্তী স্থানের দোকান-পার্ট ও বাড়িঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ, র‌্যাব, শিল্প পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক আইনপ্রয়োগকারী সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছে। দুপুর থেকে স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস.এম আলম, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরন দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সার্বিক পরিস্থিতির তদারকি করছেন।
আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে
রাত ৮টার দিকে ট্যাম্পাকো কুটিংস লি. কারখানার আগুন আশপাশের একটি কারখানা এবং কয়েকটি দোকানপাট ও বাড়িঘরে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে আশপাশের বাড়ি-ঘরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের শোক
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ টঙ্গীতে একটি কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোকবার্তায় প্রেসিডেন্ট নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি এ দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের আশু আরোগ্য কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর শোক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত একটি কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে জানানো হয়।
শিক্ষামন্ত্রীর শোক
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ টঙ্গীতে প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোকবার্তায় শিক্ষামন্ত্রী নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান। নাহিদ এ দুর্ঘটনায় আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর শোক
এদিকে বয়লার বিস্ফোরণে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনায় হতাহতদের প্রতি গভীর সমবেধনা জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ অ্যাড. আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী এমপি।
খালেদা জিয়ার শোক
টঙ্গী শিল্পনগরী এলাকায় ট্যাম্পাকো ফয়েলস প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে নিহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শনিবার পৌনে ১টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপিসহ দফতর সম্পাদক মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, “পবিত্র ঈদ-উল-আয্হার পূর্বে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনায় বহুসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ হতাহতের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আমিও গভীরভাবে ব্যথিত ও শোকাহত। আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা ও তাদের সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।” শনিবার ভোর ৬ টায় টঙ্গীতে প্লাস্টিক কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে বহুসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ হতাহত হন।


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
রাকিব ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:৫৬ এএম says : 0
যারা জিবিত আছে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হোক।
Total Reply(0)
সোহেল ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:৫৭ এএম says : 0
হে আল্লাহ তুমি তাদের প্রতি রহমত করো।
Total Reply(0)
জামিল ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:৫৮ এএম says : 0
শোক আর সমবেদনা জানানোর ভাষাই হারিয়ে ফেলেছি।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন