শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব

আলেম-উলামাদের গ্রেফতার বন্ধ করুন বিভিন্ন ইসলামি দল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

আলেম-উলামাদের গণগ্রেফতার অবিলম্বে বন্ধ করুন। সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নিন। গ্রেফতার অভিযান বন্ধ করে নিরপরাধ আলেমদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। নয়তো সরকারকে জনরোষের মুখোমুখি হতে হবে। বিভিন্ন ইসলাম দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ : পবিত্র রমজান মাসে আলেম-উলামাদের গণগ্রেফতার বন্ধ করে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজুন। সমস্যা যত বড়ই হোক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান বের করা সম্ভব ইনশাআল্লাহ। হেফাজতের মধ্যেও যদি কেউ অপতৎপরতা চালায়, আমরা তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যাবস্থা নেবো ইনশাআল্লাহ। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

হেফাজত মহাসচিব বলেন, আমরা সরকারের উদ্দেশ্যে বলবো, কোথাও যদি কোনও সমস্যা হয়ে থাকে কিংবা হেফাজতের নরেন্দ্র মোদির আগমন বিরোধী কর্মসূচীতে তৃতীয় কোন শক্তি যদি সুযোগ নিয়ে থাকে, অথবা কেউ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে থাকে, তাহলে সরকার তাদের খুঁজে বের করুক। আমরা সরকারকে এই ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবো। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের কোনও রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। হেফাজতের কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খাও নেই। হেফাজত শুধু দ্বীনি ইস্যুতে কর্মসূচী দিয়ে থাকে। এযাবতকাল আমরা যতগুলো কর্মসূচী দিয়েছি তার সবগুলোই দ্বীন ও দেশের স্বার্থে। তিনি বর্তমান পরিস্থির বিষয়ে বলেন, দেশে বর্তমান যে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা তৈরি হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে। এটা কোনও রাজনৈতিক ইস্যু বা দেশের বিরোধিতা নয়। মোদির আগমন বিরোধিতার কারণ তার ইসলাম বিদ্বেষ। মোদি এবং তার দল ভারতের মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ করছে। কাশ্মীরে মুসলিম গণ-হত্যা ও জনগনের অধিকার হরণ করছে। এসব কারণেই আমরা মোদির আগমনের বিরোধিতা করেছি। তবে সেই বিরোধিতা বক্তব্য ও বিবৃতি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিলো। হেফাজত মাঠের কোনও কর্মসূচী দেয়নি। বরং সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই ইস্যুতে আমাদের কোনো কর্মসূচী নেই। হেফাজত মহাসচিব বলেন, হতে পারে কোনো অপশক্তি তাদের হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ কর্মসুচীতে অনুপ্রবেশ করেছিলো এবং হেফাজতের নেতাকর্মীদের দায়ী করার জন্য নানান বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল।

তিনি বলেন, সরকারের উদ্দেশ্যে আমরা স্পষ্ট বলতে চাই। ২৬ মার্চ আমাদের কর্মসূচী ছিলো না। বায়তুল মোকাররমে যারা বিক্ষোভ করেছে, তাদের সাথে হেফাজতের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সে ঘটনায় পরিস্থিতি শান্ত করতে ভূমিকা রেখেছে হেফাজত। হেফাজত মহাসচব বলেন, বি-বাড়িয়াসহ কয়েকটি জায়গায় বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। সে ঘটনার সাথে হেফাজতের হরতাল কর্মসূচী সরাসরি কোনও সম্পর্ক ছিলো না। ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইউনুসিয়া মাদরাসায় হামলা করায় বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ মাঠে নেমে আসে এবং পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনি আরো বলেন, আমরা সরকারের কাছে আহবান জানাবো, মাদরাসায় হামলা ও তৌহিদি জনতাকে উস্কানি দেয়ার পিছনে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করুণ। এ ঘটনার সাথে কোনো তৃতীয় পক্ষ যদি জড়িত থাকে, আপনারা তদন্ত করে বের করুণ। এতে আমরাও সহযোগিতা করবো। তারপরেও অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা সমূহের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। এ ক্ষেত্রে নেতৃবৃন্দের আরো সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিলো বলে আমরা মনে করি। আগামীতে হেফাজতের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এসব ক্ষেত্রে আরো সতর্ক থাকবে ইনশা আল্লাহ। তিনি বলেন, হেফাজতের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে সারাদেশের নেতাকর্মীরা কর্মসূচী চায়। কিন্তু আমরা দেশের করোনা পরিস্থিতি ও পবিত্র রজমান মাসের সম্মানে কোনও কর্মসূচী দিচ্ছি না। তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের আটক নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান।

পীর সাহেব চরমোনাই : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই পবিত্র রমজান মাসে দেশের সন্মানিত আলেমদের বিরুদ্ধ চলমান গ্রেফতার অভিযানেরও নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গ্রেফতার অভিযান বন্ধ করে নিরপরাধ আলেমদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। নয়তো সরকারকে জনরোষের মুখোমুখি হতে হবে। গতকাল শুক্রবার করোনা ও চলমান পরিস্থতি নিয়ে এক জরুরী অনলাইন বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন। দলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।

কওমী মাদরাসা সংরক্ষণ কমিটি : গতকাল শুক্রবার বাদ আসর যাত্রাবাড়ী ছনটেক মহিলা মাদরাসা মিলনায়তনে কওমী মাদরাসা সংরক্ষণ কমিটির এক সভায় নেতৃবৃন্দ কওমী মাদরাসার শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উগ্রতা, উশৃঙ্খলতা ও রাজনীতি মুক্ত রাখার গুরুত্বারোপ করেন। এসময় নেতৃবৃন্দ পবিত্র এই রমজানে আলেম-উলামাদের গণগ্রেফতার বন্ধের দাবি জানান। তারা গ্রেফতারকৃত নিরপরাধ আলেমদের নি:শর্ত মুক্তি এবং হয়রানি না করার জন্যে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। সংগঠনটির আহ্বায়ক মাওলানা ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন, মাওলানা একেএম আশরাফুল হক, মুফতি বুরহান উদ্দিন কাসেমী, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মুখলেছুর রহমান কাসেমী, মাওলানা কবির আহমদ আড়াইহাজারি, মাওলানা আজিজুর রহমান, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আতাউর রহমান আতিকী, মুফতি কামাল উদ্দিন শিহাব, মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান রহমানী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Md Mostafizur Rahman ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
কে শুনিবে কাহার কথা!! তুমি বড় নিষ্টুর বাংলাদেশ।
Total Reply(0)
আসিফ নজরুল ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
চিল্লাই লাভ হবে না, সকল মুসলিমের ঐক্য ছাড়া মুক্তি মিলবে না ৷
Total Reply(0)
Humayun Prodhan ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
বাংলাদেশের ইসলামিক প্রেমিক এবং নবীপ্রেমিক সকলেই জেগে উঠো আরেকবার
Total Reply(0)
G.m. Rabib ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
বিবৃতি দিয়ে কিছু হবে না। মাথার পাগড়ি কোমরে বেঁধে রাস্তায় নামুন
Total Reply(0)
MD Omar Faruyk ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৫ এএম says : 0
পবিত্র রমজান মাসে আলেমদের গ্রেফতার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই ঘৃণা পোষণ করি সেসব ক্ষমতালোভী মানুষদের উপর
Total Reply(0)
Valorous Respondent ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৫ এএম says : 0
বিবৃতি না দিয়ে আন্দোলনের ডাক দিন আপনারা কি করে এ সব অবিচার মেনে নিচ্ছেন আমাদের তো সহ্য হয় না জালিমের জুলুম
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন