শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধের দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:১২ পিএম

ভারতে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির সাথে স্থল পথের সীমান্ত বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিবেশী দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের স্থল সীমান্ত বন্ধের পাশাপাশি বিমানপথে আসা যাত্রীদের ‘তিনদিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকা’র সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতের পশ্চিম বাংলায় এই সংক্রমণটা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করি যে, ভারতের সাথে স্থল পথের যে সীমান্ত আছে, এই সীমান্তগুলো একেবারেই বন্ধ করা দরকার। বলা হচ্ছে যে, বাইরে থেকে যারা আসবেন বিমানপথে, তাদেরকে মাত্র তিনদিন কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। যেটা আমি বিশ্বের কোথাও শুনিনি। এই সিদ্ধান্তগুলো আমাদের পরিস্থিতিকে ভয়ংকরভাবে নাজুক করে ফেলেছে।‌ শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, লকডাউনের পরে একটা সপ্তাহ সবাই বাইরে চলে গেলো, এখন আবার বলা হচ্ছে যে, শপিংমল-দোকানপাট খুলে দেয়া হবে। যারা এসব দোকানপাটে কাজ করছেন তারা সবাই বাইরে চলে গিয়েছিলো আবার ফিরতে শুরু করেছেন। এরপর ঈদের আগে তারা আবার গ্রামের ফিরে যাবেন। ফলে সারা দেশেই করোনাভাইরাসের সংক্রামণ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি, এখনো সরকারকে বলতে চাই, বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা দরকার এবং একটা পরিকল্পিত, সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতো লেজে গোবরে করে ফেলেছে যেন এখন কোনটাই সামাল দিতে পারছে না।

লকডাউন কার্যকর সরকার ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার লকডাউন কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে। তার প্রধান কারণ লকডাউনের শর্তানুযায়ী খেটে খাওয়া মানুষের জন্য খাদ্যসংস্থান না করা এবং নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করা। এর কিছুই না করে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা রীতিমতো অমানবিক ও অর্থহীন প্রচেষ্টা। লকডাউন ঘোষণার আগেই জনগণের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। শুধুমাত্র ঘোষণা দিয়ে মানুষকে ঘরের ভেতরে রাখা যাবে না। কারণ মানুষের খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এদেশের ৮৬ শতাংশ মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন সেকথা একবারের জন্য মনে করা হয়নি।

৭ দফা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা: বিএনপির এই নেতা গরিব মানুষকে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করাসহ ৭ দফা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায় লকডাউনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ‘দিন আনে দিন খা’ গরীব দিনমজুর, পেশাজীবী ও নি¤œ আয়ের মানুষের প্রত্যেককে অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রীয় বিশেষ তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্ধের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা এককালীন নগদ অর্থ পৌঁছিয়ে দেয়া, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্তরত শ্রমিকদের প্রত্যেককে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্ধের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা এককালীন নগদ অর্থ প্রদান, সমগ্র দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে ‘সুরক্ষায় সহায়তা’ প্যাকেজের আওতায় আনা, নিরপেক্ষভাবে দুঃস্থ উপকারভোগীদের তালিকা প্রস্তুত করা, ক্ষতিগ্রস্থ এসএমই, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প ও কৃষিখাতে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিশেষ প্রণোদনা বরাদ্ধ, রাজনৈতিক বিবেচনা না করে ক্ষতিগ্রস্থ শিল্পোদ্যোক্তা ও ক্ষতিগ্রস্থ প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ প্রণোদনা প্রদান, উদ্যোক্তাদের পূঁজির ব্যবস্থার সুনিদিষ্ট প্রস্তাব দলের পক্ষ থেকে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

একই সঙ্গে ২০২০ সালের এপ্রিলে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্নখাতে ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা প্রস্তাব যথাযখভাবে মূল্যায়ন করে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিও জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সরকার ২৩ প্যাকেজের মধ্যে প্রায় সোয়া একলাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষাণা করেছিলো। তাদের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের অর্ধেকই পৌঁছায়নি ভুক্তভোগীদের কাছে। ঘোষিত প্যাকেজের ৫০ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা বিতরণ সম্ভব হয়নি, যা মোট ঘোষিত অর্থের প্রায় ৪২ শতাংশ। যদি প্রণোদনা প্যাকেজের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও মন্ত্রণালয়কে শতভাগ অর্থ বিতরননলের জন্য অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেধে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। প্যাকেজ বাস্তবায়নে সরকারের উদাসীনতা ও আন্তরিকতার অভাবই এজন্য দায়ী।

টিকা নিয়ে সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, টিকা সংগ্রহে স্বেচ্ছাচারিতা ও নতুন অনিশ্চয়তা গোটা জাতিকে হতাশ করে ফেলেছে। একই উৎস্য থেকে টিকা সংগ্রহ করতে গিয়ে আজকে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম থেকেই ভারতের বিকল্প সূত্র থেকে টিকা কেনার কথা আমরা বার বার করে বলেছি। কিন্তু কোনটাই করা হয়নি। এখন শেষ সময়ে সরকার রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে পাওয়ার জন্য গ্রুপ তৈরি করে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চিন্তা করছে। আমাদের মনে হয় সেটা দেরি হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। আগে করতে পারলে অনেকটা কম হতে পারতো।

লকডাউনের নামে রাজনৈতিক নিপীড়ন চলছে অভিযোগ বিএনপি মহাসচিব বলেন, লকডাউনের নামে সরকার মূলত বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল ও আন্দোলনকারী আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন ঘোষণা করেছে। লকডাউন শুরুর দিন থেকেই সারাদেশে ব্যাপকভাবে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দেশের প্রখ্যাত আলেম-ওলামাসহ বিএনপি ও এর অংগসংগঠনের শত শত নেতা-কর্মীকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সরকারের অপকর্ম, দুর্নীতি, অত্যাচার, নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যাতে কেউ কোনো শব্দ উচ্চারণ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে কোনো না কোনোভাবে নির্বতনমূলক আইনের আওতায় এনে কন্ঠ রোধ করা হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের যার যার সাধ্য অনুযায়ী ‘দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের’ পাশে দাঁড়ানোর আহবানও জানান তিনি।

খাদ্য সংকট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ সবচেয়ে কম মজুদ এবার তিন লাখ টন। যেখানে ১১ লাখ টন থাকার কথা। এবার চালের মজুদ কম থাকায় আগে খাদ্য আমদানি করার কথা থাকলেও সেটা হয়নি। খাদ্য মন্ত্রীও এ বিষয়ে কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারছেন না।মজুদদাররা মাঠ থেকে চড়া দামে ধান কিনে ফেলছে। সরকার যদি এখনো ধান কেনা শুরু করেনি। আমরা সঠিক মূল্য নির্ধারণ করে অবিলম্বে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের জন্য আহবান জানাচ্ছি এবং স্বল্প দামে জনগনের কাছে তা পৌঁছানোর জন্য ওএমএস কর্মসূচি দ্রুত বাড়ানোর অনুরোধ করছি জানাচ্ছি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (16)
Abdullah Ashraf ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৫ পিএম says : 0
যৌক্তিক দাবি। অবিলম্বে সীমান্ত সিল করা হোক।
Total Reply(0)
Farid Ahmed ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৬ পিএম says : 0
Agreed to lock the border!
Total Reply(0)
Md Moolqus Shamiul ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৬ পিএম says : 0
বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত,
Total Reply(0)
MD Masudur Rahaman ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৮ পিএম says : 0
এবার কোন ধরনের ভুল করা উচিত না বাহিরের দেশর মানুষের প্রবেশের জন্য নিসেধ্যাগ্যা থাকা দরকার। কোন ভাবেই জেন বহীরা গতরা প্রবেশ করতে না পারে
Total Reply(0)
Abdullah Ashraf ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৮ পিএম says : 0
ভারতের সাথে সকল বর্ডার অবিলম্বে বন্ধ করা হোক সংক্রমন এড়ানো জন্য।
Total Reply(0)
Atik Abrar ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৮ পিএম says : 0
ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট তো চলেই এসেছে বাংলাদেশে। প্রতিদিনই বেনাপোল এ ধরা পড়ছে রোগী। এছাড়া চাঁপাই- নবাবগঞ্জে আজকে ভারত ফেরত ২ জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে, যারা গত কয়েকদিন অবাধে মানুষের সাথে মিশেছে,।
Total Reply(0)
Jahir Bin Islam ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৯ পিএম says : 0
এক দোকান থেকে ৩০০ ডিম কিনলেন। ৫০ টা সরবরাহ করে সে আরো ৩২ টা আপনাকে উপহার দিলো। এরপর আর ডিম দেয় না। তার মানে সে আপনার টাকার ডিমই আপনাকে উপহার দিয়েছে; তাই নয় কি? ভারতুও ঠিক একই আচররণ করেছে।
Total Reply(0)
Muhammad Bin Boktier ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:০০ পিএম says : 0
এখনই বর্ডার সিল করতে হবে।কারন ভারতের মিডিয়ায়। মৃত্যুর যে চিত্র দিচ্ছে ।প্রকৃত চিত্র। তার চারগুন বেশী মৃত্যু হচ্ছে ।তাই।এখনই বাংলাদেশর বর্ডার। সিল করতে হবে। নতুবা দেশের অবস্থা ভারতের চেয়ে খারাপ হবে। আর আমাদের চিকিৎসা ব্যাবস্থার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে। এখন নিশ্চয়ই সবাই জানেন। চিকিৎসায় আমরা সিংগাপুর বা লন্ডন হয় গেছি ।।এখন শুধু গাছের মাথায় ওঠা বাকী । সুতরাং ভারতের সাথে সব রকমের যোগাযোগ এখনই বন্ধ করতে হবে
Total Reply(0)
Ibrahim Ctg Khalil ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:০০ পিএম says : 0
করোনা মহামারী প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এখন বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরে আসা যাওয়া বন্ধ করা উচিৎ।।
Total Reply(0)
সৌখিন পাখাল ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:০১ পিএম says : 0
ভারতের অানাচে কোনচে সব রাস্তা বন্দর লকডাওনের দাবি। কোন ভাবেই ভাইরাস দেসে ডুকতে না পারে
Total Reply(0)
Ashraf Hossain ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:০১ পিএম says : 0
সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করা হোক। না হলে সামনে কঠিন সময় আসবে
Total Reply(0)
Brown Stone ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১৯ পিএম says : 0
প্লিজ ভারতের সাথে বর্ডার বন্ধ করেন ।। ভারতের যে করোনা আছে এটা খুবই পাওয়ার ফুল এটা বাংলাদেশে আসলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে ।।। ভারতের প্রচুর তরুন যুবক মারা যাচ্ছে এমনকি ভ্যাকসিন ও কাজ করছে না ।।
Total Reply(0)
Md Ali Akbor ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:২১ পিএম says : 0
আর বাংলাদেশের মানুষ বলছে করোনা বলে কিছু নাই।সব নাকি বিরুধী দল কে নিধনের জন্য!!!হায় বাংগালী!!!সরকার কঠোর হলে বলে মানুষ না খেয়ে মারে যাচ্ছে আর নরম হলে বলে মানুষ মারার জন্য কঠোর হচ্ছে না।আর কত মানুষ মরলে সরকারের টনক নড়বে!!
Total Reply(0)
Towhid ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:৫৬ পিএম says : 0
All the land borders definitely should be blocked between India and Bangladesh. People should not trespass any border at all. All the air travel and water transportation should be stopped for at least 30 days. Any merchandise that are imported from India should be inspected and kept aside from people for one week before brought into market for sale. Otherwise Bangladesh will have worse situation than India
Total Reply(0)
হুমায়ূন ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২১ পিএম says : 0
ভারতের সঙ্গে সকল সিমান্ত পথ বন্ধ করে দেয়া উচিত।
Total Reply(0)
Burhan uddin khan ২৫ মে, ২০২১, ২:৪২ এএম says : 0
Keep close the border & save the nation......
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন