শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রোজা রেখেও ইউরোপ মাতাচ্ছেন ফোফানা

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:১১ পিএম

 

পেশাদার ফুটবলারদের পক্ষে রোজা রাখা এখনো বিস্ময়ের জন্ম দেয় ইউরোপে। ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের আগে হঠাৎ আলোচনায় এসেছিল ফুটবলারদের রোজা রাখা। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে সেবার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল লিভারপুল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিভারপুলের আক্রমণের ত্রিফলার দুজন মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিও মানে ইসলাম ধর্মের অনুসারী। সেবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল শুরু হয়েছিল ইফতারের একটু আগেই। তাই এ আলোচনা বেশ আলোড়ন তুলেছিল।

প্রতিবছরই রমজান মাসে খেলতে হয় ফুটবলারদের। ইউরোপের বিভিন্ন লিগে মুসলিম অনেক ফুটবলারই রোজা রাখেন। মেসুত ওজিল, করিম বেনজেমা, মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানে কিংবা পল পগবাদের ধর্ম পালন নিয়ে এখন আর খুব একটা আলোচনা হয় না। তবে আজ আবার নতুন করে এক ফুটবলারকে আলোতে টেনে এনেছেন তাঁর কোচ। রোজা রেখেও ওয়েসলি ফোফানা এত দুর্দান্ত খেলছেন কীভাবে, এটা ভেবে মুগ্ধ লেস্টার সিটির কোচ ব্রেন্ডন রজার্স।

এ মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা সংযোজন ওয়েসলি ফোফানা। ২০ বছর পেরোনোর আগেই তাঁকে সেঁত এতিয়েন থেকে নিয়ে এসেছে লেস্টার। তরুণ ডিফেন্ডারের জন্য চার কোটি ইউরো খরচ করতে আপত্তি হয়নি লেস্টারের মতো ক্লাবের। কেন আপত্তি হয়নি, সেটা ভালোভাবেই দেখাচ্ছেন ফোফানা। মৌসুমজুড়ে দারুণ খেলছেন। এরই মধ্যে প্রিমিয়ার লিগের পরাশক্তিদের নজরে পড়ে গেছেন।

গতকাল ওয়েস্ট ব্রমের বিপক্ষে ম্যাচ ছিল লেস্টারের। সে ম্যাচে সবাইকে একটু চমকে দিয়েছেন কোচ রজার্স। সাবেক লিভারপুল কোচ ম্যাচের ৬০ মিনিটে মাঠ থেকে তুলে নিয়েছেন ফোফানাকে। ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকা ম্যাচে একজন ডিফেন্ডারকে তুলে নেওয়ায় সবার মনে প্রশ্ন জেগেছিল। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে রজার্সকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, চোট পেয়েছেন কি না ফোফানা।

তখন ফোফানার সম্পর্কে চমকে দেওয়া খবরটি দিয়েছেন রজার্স, ‘ও ঠিকই আছে। তরুণ একজন খেলোয়াড় ও। রমজান মাস চলছে, স্বাভাবিকভাবেই দিনের বেলা খাচ্ছে না কিছু। এটা চমকপ্রদ একটা ব্যাপার। সপ্তাহান্তে এফএ কাপের সেমিফাইনালে ওর পারফরম্যান্সের কথা চিন্তা করুন, সারা দিন কিছু খায়নি এবং ম্যাচ শুরুর মাত্র ১৫ মিনিট আগে কিছু খেয়েছিল। আজও একই ঘটনা। রাত আটটায় ম্যাচ শুরু হয়েছে বলে সে কিছু খাওয়ার বা পান করার সুযোগ পায়নি। তবু সে এত দারুণ খেলেছে।’ প্রসঙ্গত, লেস্টার শহরে ইফতার হতে হতে রাতের সোয়া আটটা পেরিয়ে যায়।

ফোফানার এমন পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে সতর্ক হয়েছেন রজার্স। কারণ, নিয়মিত রোজা রাখছেন, এমন এক খেলোয়াড়কে নিয়মিত সামর্থ্যের পুরোটা দিয়ে খেললে পরে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ম্যাচের বিরতিতে ইফতার সেরে নিলেও ম্যাচের বাকি সময়ে খেলতে হবে, তখন নিশ্চয়ই খুব বেশি কিছু খাওয়া হবে না ফোফানার।

সেসব দিক ভেবেই তাঁকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন রজার্স, ‘আমার শুধু মনে হলো, এই সময়ে আমি ওকে তুলে নিতে পারি। এতে ও বেঞ্চে বসে কিছু খেতে পারবে। ও যেন ভালো থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে চেয়েছি। আমি অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করেছি, যারা তাদের ধর্মে গভীরভাবে বিশ্বাস করে এবং অনেককেই এ বিশ্বাস বাড়তি শক্তি দেয়। এই রমজানেও টানা খেলা ও অনুশীলন করার শক্তি পাচ্ছে। ও বিশেষ একটা প্রতিভা এবং আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।’

রজার্সের সে সিদ্ধান্ত পরে সঠিক বলেই প্রমাণিত হয়েছে। ফোফানাকে তুলে নেওয়ার পরও কোনো গোল হজম করেনি লেস্টার। ৩-০ গোলের জয়ে লিগে পয়েন্ট তালিকার ৩ নম্বরে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করেছে লেস্টার। সেরা চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার স্বপ্ন আরও উজ্জ্বল হলো ফোফানার দলের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
শওকত আকবর ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৪৪ পিএম says : 0
ইফতার হাল্কা কিছু খাবার যথেস্ঠ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন