শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশকে বন্ধুত্বের প্রমাণ দেয়ার সময় এসেছে ভারতের

সাংবাদিকদের পাপন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

ভারতের এখন সময় এসেছে বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে প্রমাণ দেওয়ার বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের পক্ষে টিকা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন, পাপন বলেন, ভারতের মিষ্টি কথায় সব চলবে না। বাংলাদেশকে অগ্রিম অর্থ দিয়ে কেনা টিকার ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। আর প্রতিবেশি দুই দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক বিবেচনা করার সময় এসেছে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সরকার অগ্রীম টাকা দিয়ে যে টিকা কিনে নিয়েছে এটা আটকানোর কোনও সুযোগ নেই। অন্য দেশের সঙ্গে কী হলো তা আমার জানার দরকার নেই। আমরা আমাদের টাকা দিয়েছি। টাকা নিয়ে দেবে না, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। তিনি আরো বলেন, ভারত সরকারও সিরাম ইনস্টিটিউটকে অগ্রীম টাকা দেয়নি। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে আমরা অগ্রীম টাকা দিয়ে ওদের বুক করেছি। এখন ভারতের কাছে বাংলাদেশ সরকারকে টিকা পাঠানোর কথা জোরালোভাবে বলতে হবে।

ভারতের কাছ থেকে আমরা কবে টিকা পাবো সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পাপন বলেন, এটা বলা খুবই কঠিন। যেটা বলা হচ্ছে, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট আমাদের ৫০ লাখ টিকা পুরো রেডি করে রেখে দিয়েছে। কোনও সমস্যা নেই। ওরা ওদের মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্সের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছে। গত মাসে ৫০ লাখ পাঠানোর কথা ছিল। ওরা দিয়েছে ২০ লাখ। এ মাসে এখনও টিকা পাঠায়নি।

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, আমাদের সেকেন্ড ডোজের টিকা শর্টেজ হয়ে যাবে সামনে। এজন্য আমাদের এটা ইমিডিয়েট পেতে হবে। যেহেতু সেরাম ইনিস্টিটিউট, ওদের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছে তাদের সরকার টিকা আমদানি আটকে রেখেছে। তারা টিকা পাঠানোর ছাড়পত্র পাচ্ছে না। কাজেই আমি মনে করি আমাদের সরকারের চুপ করে থাকার কোনও কারণ নেই। ভারত সরকারকে আমাদের সরকারকে ইমিডিয়েটলি বলা উচিত, এই ভ্যাকসিন আমি অগ্রীম টাকা দিয়ে কিনেছি। আমাদের কেনা টিকা দিতেই হবে। এটা জোরালোভাবে বলতে হবে। আনঅফিশিয়ালি, ফোনে একটু কথা বলা- এভাবে না। আমার মতে, শক্ত স্টেপ নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ওয়ার্ল্ড মার্কেটে চারটি টিকা আছে যেগুলো অ্যাপ্রুভড। ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মর্ডানা ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর কোনোটা অ্যাপ্রুভালের আগে আনা সম্ভব না।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা বেক্সিমকো সরকারকে টিাকা এনে দিতে সহায়তা করেছি। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দেখছি তাতে টিকা বানানো ছাড়া কোনও উপায় নেই। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না যাদের ফ্যাসিলিটিজ আছে তারা কেন এ ব্যাপারটা নিয়ে এগিয়ে আসছে না। একটা জিনিস বলতে পারি, এ বছর আমরা বেক্সিমকো আশা করছি স্বপ্ন দেখছি, লোকাল প্রোডাকশন ছাড়া কোনও পথ নেই। এমন কোনও ওষুধ নেই যেটা বাংলাদেশ বানাতে পারে না। এখন পর্যন্ত বেক্সিমকোর টিকা তৈরির পরিকল্পনা নেই। কারণ অন্যান্য ফ্যাসিলিটিজ তো আছেই। তাদের বানানো উচিত। এখন আরেকটু সময় দিতে হবে। আর দুই মাসের মধ্যে দেখবেন প্রচুর টিকা চলে আসবে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আরো বলেন, আমি ক্লিয়ার করছি, এই ক্রাইসিস জুন পর্যন্ত থাকবে। জুনের পর কোনও ক্রাইসিস থাকবে না। আমাদের দেড় কোটি ডোজের টাকা দিয়ে দিয়েছি। যেটা আমাদের মে’র মধ্যে পাওয়ার কথা। আমরা ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছি। আমাদের ৮০ লাখ বাকি। এ ৮০ লাখ পাওয়ার পর যদি মনে করি ওদের থেকে আর নেবো না, তখন অন্য অপশনে যাবো। যেটা সরকার পে করেছে, জনগণের টাকা। এটা আটকানোর অধিকার নেই। ভারতের যত ক্রাইসিস থাকুক না কেন। ভারত সরকারও তাদের অগ্রীম টাকা দেয়নি। আমরা অগ্রীম টাকা দিয়ে ওদের বুক করেছি। গত বছরের অক্টোবরে বুক করেছি।

সেরামের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ সরকার নেবে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পাপন বলেন, আমাদের (বেক্সিমকো) এখানে কিছু করার নেই। সব কাজ ভাগ করা। সরকারের দায়িত্ব আগে টাকা দিয়ে টিকা বুক করা। সরকার সেটা করেছে। বেক্সিমকোর দায়িত্ব ছিল সেটা দেশে এনে ড্রিস্টিবিউট করা। সেটা করেছে। এখানে সব দায়িত্ব আমাদের। সেরামের কোনও বিষয় নিয়ে আমাদের ইস্যু নেই। ওরা যদি না দেয় সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। এটাও জরুরি না আবার। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা বলে আসছি, বিশ্বাস করি যে ভারত বাংলাদেশের বন্ধু। সময় এসেছে সেটা ভারতের প্রমাণ করার। এতো মিষ্টি মিষ্টি কথা শোনার দরকার নেই। দয়া চাচ্ছি না। আমার ন্যায্য পাওনা ভ্যাসকিন সেটা চাচ্ছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (14)
Md. Solaiman mollah ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:১২ এএম says : 0
এমডি সাহেবের মন্তব্য সমর্থন করলাম ।তিনি সঠিক কথাটাই বলছেন ।
Total Reply(0)
Kawsar Jahan Sarker ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৭ এএম says : 0
অগ্রিম টাকা নিয়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ করার অধিকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের নেই।
Total Reply(0)
Utpal Kumar Biswas ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
সিরামের নিকট থেকে ফর্মূলা নিয়ে আমাদের ওষুধ তৈরি করা উচিত,ওষুধ না দিলে আমাদের ফর্মূলা দিক।
Total Reply(0)
M Rahman ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
ভ্যাক্সিনের জন্য শুধু ভারতের জন্য বসে থাকলে এই অবস্থাই হবে। কেনো রাশিয়া,চায়নার ভ্যাক্সিন চোখে পরে নি?
Total Reply(0)
Sta Chowdhury ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 1
বেশি প্রেসার দেয়ার দরকান নাই, উল্টো হয়ে গেলে ,আমাদের কিছুই করার থাকবে নাহ্।
Total Reply(0)
Amran Hossain ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 0
ভারতের উপর নির্ভর করা ঠিক হয়নি। বাংলাদেশের উচিৎ ছিল একসাথে তিন, চারটা দেশ থেকে করোনার টিকার জন্য চুক্তি করা। এতে সহজে বুঝতে পারা যেত কোনটা দ্রুত কাজ করে।
Total Reply(0)
Ekra Rexona ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
সময়ের সাথে সাথে সঠিক দাবি ।নিজের দেশের জনগনের জীবন সংকটে আজ।টাকা তো ঠিকই আগে নিয়ে নিছে। কিভাবে দিবে কেমনে দিবে সেটা বাংলাদেশ দেখবে কেনো।দু তিন মাসে ও কেনো উৎপাদন বাড়াতে পারে নাই ভারত।
Total Reply(0)
Sj Sabuj Matabbar ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
এত দিন শুনলাম ভারত আমাদের কে টিকা উপহার দিছে। পাপন কাকুর কথা শুনে জানলাম আমরা আগেই তাদের কে সব টিকার টাকা পরিশোধ করে দিছি কিন্তু তারা আমাদের কে সব টিকা দেয়ে নাই আর না দেয়ার সম্ভবনা বেশি।।।
Total Reply(0)
Tushar ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
আগে টাকা দিয়ে রাখো কোন দুঃখে? ভারত আমাদের কখনো বন্ধু হতে পারে না, সে টা যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন ততই মঙ্গল
Total Reply(0)
Md Sirajul Islam ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
ভারত আমাদের বন্ধু মুখে মুখে কাজের বেলায় দেখা যায় না।এই বার প্রমাণ হবে।
Total Reply(0)
মুস্তাকিম বিল্লাহ ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩২ এএম says : 0
ভারতের উপর বাংলাদেশের মানুষের অনাস্থা থাকা সেত্ত্বও সরকার ভারত থেকেই ভ্যাকসিন আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়!!? অথচ এই ভারত রাষ্ট্রটির দায়বোধ নেই! এমনকি নিজ দেশের পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতাও নেই!।
Total Reply(0)
Md Chowdhury ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩২ এএম says : 0
বাংলাদেশ থেকে টাকা আগাম নিয়ে টিকা না দেয়ার অজুহাত কি করে গ্রহনযোগ্যতার মাপকাটিতে উত্তীর্ণ হবে ? বেশ কয়েক আগে দূর্যোগকালীন সময়ে বাংলাদেশকে ভারত চাল সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছিল এবং চালও দিয়েছিল পরের বৎসর দূর্যোগ কেটে যাবার পর !
Total Reply(0)
হেলাল উদ্দিন আহম্মদ ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
দ্রুত আইনি ব‍্যবস্তা নেওয়া হোক।মজুদ শেষ হবার আগেই যেন আমরা টিকা পেয়ে যাই।তাহলে আমাদের টিকা কার্যক্রম ধারাবাহিক ভাবে চলবে।
Total Reply(0)
Neel Kosto ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
বার বার প্রমাণ দেওয়ার কি আছে? ৭১ সালে ভারত প্রমাণ দিয়েছে না? এখন তোমরা হাজার বছর ভারতের গোলামী করে প্রতিদান দাও।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন