শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভেজাল সেমাইয়ে সয়লাব সৈয়দপুরের বাজার

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

ঈদকে সামনে রেখে নীলফামারীর সৈয়দপুরে লাচ্ছা সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে। শহরের অলিগলিতে গড়ে উঠেছে লাচ্ছা সেমাই তৈরির শতাধিক কারখানা। আর এ সব কারখানায় একেবারে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের সব উপকরণ সামগ্রী দিয়ে দেদারছে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। অধিক মুনাফার লোভে সেমাই তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক সব ক্ষতিকর উপকরণ।
অথচ এসব দেখার দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড ট্রেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) একেবারে নির্বিকার। যদিও এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও রংপুর বিভাগীয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে বেশকিছু লাচ্ছা কারখানার মালিককে জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু তারপর থেমে নেই অনুমোদনবিহীন অবৈধভাবে লাচ্ছা সেমাই তৈরি ও বাজারজাতকরণের কাজ। উত্তরাঞ্চল জুড়ে সৈয়দপুর শহরের তৈরি লাচ্ছা সেমাইয়ের জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি রয়েছে। তাই রমজান মাস এলেই এখানে লাচ্ছা সেমাই তৈরি ধুম পড়ে। সেমাই তৈরি কারিগররা দিন রাত সমানতালে সেমাই কারখানাগুলোয় কাজ করে চলেছে। প্রতিটি লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক সেমাই তৈরির উপকরণ সামগ্রী ময়দা, ডালডা, তেল, খড়িসহ অন্যান্য সব রকম উপকরণ মজুদ করে রেখেছে ইতোমধ্যে। যাতে উপকরণের সংঙ্কটে সেমাই তৈরির কাজে বিন্দুমাত্র ব্যাঘাত না ঘটে।
জানা যায়, সৈয়দপুর শহরে শতাধিক স্থানে লাচ্ছা সেমাই তৈরি কারখানা গড়ে উঠেছে। অথচ এখানে মাত্র ১৩টি লাচ্ছা সেমাই কারখানার বিএসটিআইয়ের অনুমোদন রয়েছে। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তাদের তৈরি সেমাই ও লাচ্ছা সস্তায় বিক্রি করায় বৈধ ব্যবসায়ীদের বাজার মন্দা যাচ্ছে। শহরের কাজীহাট, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ি, হাতিখানা, নিয়ামতপুর, মুন্সিপাড়া, গোলাহাটসহ শহরের আনাচে কানাচে মৌসুমী লাচ্ছা সেমাইয়ের কারখানা চালু করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্রেড, বিস্কুট ও কনফেকশনারী প্রস্তুতকারক সমিতি নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি ও মেসার্স ডায়মন্ড কনফেকশনারীর মালিক মো. আখতার সিদ্দিকী পাপ্পু বলেন, বেকারি আামদের আদি ব্যবসা। বংশ পরস্পরায় আমরা এ ব্যবসায় জড়িত আছি। তাই আমরা বিএসটিআই ও পবিরেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে সরকারকে সব রকম ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করছি। ফলে আামদের পণ্যের উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে। আর তাই আমাদের উৎপাদিত সেমাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু মৌসুমী ব্যবসায়ীদের নেই কোন অনুমোদন। দিতে হচ্ছে না সরকারি ভ্যাট, ট্যাক্সও। তারা সেমাই তৈরিতে ব্যবহার করছে নিম্নমানের উপকরণ-সামগ্রী। ফলে তারা যে মূল্যেই তাদের সেমাই বেচাবিক্রি করুক না কেন তাদের লাভ বেশি থাকছে। কিন্তু আমাদের সারা বছরই ব্যবসা করতে হয়। আমাদের একটি স্থায়ী ঠিকানা রয়েছে। সেখানে বসে আমার সারা বছরই সেমাই ও বেকারি পণ্য বিক্রি করি।
সৈয়দপুর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. অহিদুল হক বলেন, শুধু রজমান মাস নয়, আমরা সারা বছরই হোটেল রেঁস্তোরা ও বেকারিসহ বাজার তদারকি করে থাকি। আর রমজানের শুরু থেকে আমরা লাচ্ছা ও ইফতারি তৈরি ও বাজারজাতের প্রতি অধিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নেতৃত্বে নোংরা, অপরিচ্ছন্ন ও নি¤œমানের উপকরণ ব্যবহার ও অনুমোদন না থাকায় বেশ কয়েকটি সেমাই কারখানার মালিকের জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন